ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগের আগে নিজেকে ১০ প্রশ্ন করুন! ব্যবসা যদি করে থাকেন, তাহলে তো এ কথা অবশ্যই শুনেছেন যে টাকা আসতে টাকা লাগে। অথবা টাকা ছাড়া টাকা হয় না। তো বিষয় একই, যদি আয় করতে হয়, আগে বিনিয়োগ করতে হয়। তবে বিনিয়োগের সিদ্ধান্তটা খুব সহজ নয়। বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই ভাবতে হবে এই অর্থ ফেরত আসবে কি না। উদ্যোক্তাদের সহায়তাকারী ওয়েবসাইট অন্থ্রোপ্রনার জানিয়েছে, নিজ ব্যবসায় বিনিয়োগের আগে কোন তিন প্রশ্ন করবেন নিজেকে।
আপনার কি ব্যবসা শুরু করা উচিত? এটি একটি জটিল প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি যে আপনি নিম্নলিখিত ১০টি প্রশ্ন নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন।
আপনার কি ব্যবসা শুরু করা উচিত?
এই ১০টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আপনি আরো সহজে এবং ভাল ভাবে ” আপনার কি ব্যবসা শুরু করা উচিত ” এর বিস্তৃত উত্তর পেতে সক্ষম হবেন।
যাইহোক, আপনি যদি সিদ্ধান্ত নেন যে, একটি ব্যবসা শুরু করবেন তাহলে এই প্রশ্নের উত্তরগুলি নিজেকে দিতে পারলে ঐ ব্যবসা সম্পর্কে আপনার আরো আত্মবিশ্বাস এবং ধারনা বাড়বে। আবার “আপনার কি ব্যবসা শুরু করা উচিত” এই প্রশ্নের উত্তর আপনার বিজনেস আইডিয়ার উপরও কিছুটা নির্ভর করে।
১. লক্ষ্য নির্ধারণ:
বিনিয়োগ করার আগে লক্ষ্যটা নির্ধারণ করতে হবে। টাকা ঢেলে আসলে কী পেতে চাচ্ছেন? সেটা অর্জন করতে কী কী দরকার হবে? টাকাগুলো কোন কোন খাতে খরচ করলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে? ছোট ছোট পথগুলো কোনটা কোন দিকে বাঁক নেবে? কোনো একটা বিফল হলে পরবর্তী পরিকল্পনা কী? সবকিছু যদি আগে থেকে পরিষ্কার না হয়, তবে সেখানে বিনিয়োগ করা যাবে না। বিনিয়োগের আগে লক্ষ্য নির্ধারণ করে সে পর্যন্ত প্রতিটা পথ খুব ভালো করে যাচাই করতে নিতে হবে।
২. নিজের সীমা যাচাই করা:
পথ জানার পর পরের ধাপ হচ্ছে কীভাবে সেই পথ পাড়ি দেওয়া যায়। ধরা যাক, একটা পথ পাড়ি দিতে হলে সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। অথচ ব্যবসার সক্ষমতা আছে মাত্র ১০ ঘণ্টা কাজ করার। এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ না করাই ভালো। শুধু কাজের সীমা নয়, চিন্তার সীমাকেও বাড়িয়ে নিতে হবে। নতুন উদ্যোগ বা ব্যবসায় নতুন এলে নিজের মধ্যেই অনেক দ্বিধা থাকে। এসব দ্বিধা দূর করে কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন মূল্য ছাড় দিলে হয়তো লাভ কম থাকে। তবে এটা পরীক্ষিত যে মূল্যছাড়ে আয় কম হলেও ব্যবসার সফলতায় এটি প্রয়োজন। যদি লক্ষ্যের সঙ্গে সীমার কোনো দ্বন্দ্ব না হয়, তবেই কেবল সামনে আগানো উচিত।
৩. সহায়তার মাত্রা নির্ধারণ:
যদি ব্যবসা একটা যাত্রা হয়, বিনিয়োগ একটা বাহন। এই বাহন দিয়ে আমরা এক অবস্থান থেকে আরেক অবস্থানে পৌঁছাই। এখন সেই পর্যন্ত পৌঁছাতে আমরা কতটা সহযোগিতা পেতে পারি, তা-ও নির্ধারণ করতে হবে বিনিয়োগের আগে। ধরুন আপনি একটি পণ্য কারওয়ান বাজার থেকে মিরপুরে নেবেন। এখন সেই পণ্যটা ভ্যানেও নিতে পারেন অথবা ট্রাকেও। জানতে হবে কতটা খরচ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আছে। অথবা বেশি খরচ করে দ্রুত কাজ করলে কোনো সুবিধা পাওয়া যায় কি না। মোট কথা, বিনিয়োগ যদি সঠিক ফল দেয়, তবে সেই বিনিয়োগ করতে হবে।
আসুন কি সেই ১০টি প্রশ্ন তা জেনে নেই
প্রশ্ন নাম্বার এক- আপনার ব্যবসার জন্য কত টাকা নিয়ে আপনি ঝুঁকি নিবেন?
প্রশ্ন নাম্বার দুই– ব্যবসাটি শুরু করতে কত সময় ব্যয় করবেন?
প্রশ্ন নাম্বার তিন– বর্তমানে আপনার কি কোন সম্যাসা বা বাধ্যবাধকতা রয়েছে যা আপনার ব্যবসাকে শতভাগ পরিশ্রম দেওয়া থেকে বিরত রাখবে?
প্রশ্ন নাম্বার চার– আপনার কি এখনই ব্যবসা শুরু করার সেরা সময়?
প্রশ্ন নাম্বার পাঁচ– আপনি যদি এখনই ব্যবসা শুরু না করেন তবে আপনার বিকল্প কাজ কি আছে?
প্রশ্ন নাম্বার ছয়– সাফল্যের সম্ভাবনা কেমন দেখতে পাচ্ছেন?
প্রশ্ন নাম্বার সাত– আপনি এখন যা করছেন তা সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়েই কি ব্যবসা শুরু করতে হবে?
প্রশ্ন নাম্বার আট– আপনি কি বেশী ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা না কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা করার কথা ভাবছেন?
প্রশ্ন নাম্বার নয়– ধরুন আপনার ব্যবসায় আপনার প্রত্যাশার চেয়ে কম আয় হচ্ছে। এই অবস্থায় আপনি ব্যবসার সাথে লেগে থাকতে পারবেন কিনা?
প্রশ্ন নাম্বার দশ ও সর্বশেষ প্রশ্নটি হলো– যদি ব্যবসাটি কার্যকর না হয়, তবে আপনি কীভাবে নিজেকে খুব সহজেই সামলাতে পারবেন এবং পরবর্তী ব্যবসা কিভাবে আবার শুরু করতে পারবেন।
সুতরাং একটি ব্যবসা শুরু করা যথেষ্ট ঝুঁকির কিন্তু ঝুঁকি নিতে পারলে তেমন লাভবানও হওয়া যায়। আপনাকে আপনার ব্যবসার জন্য বাজেট, ব্যর্থতা এবং কাজের চাপের ভয় নির্ধারণ করতে হবে। অনেক শুভ কামনা রইল!
ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।
টাকা ছাড়া ব্যবসা করার উপায়, বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা, ব্যবসা করার পদ্ধতি ছোট থেকে বড় ব্যবসা, ব্যবসা পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ , ২ লাখ টাকায় ব্যবসা ব্যবসার আইডিয়াk গ্রামে কি ধরনের ব্যবসা করা যায়