৫০ টাকা কম বকশিস পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ায় স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের কর্মচারী আসাদুল ইসলাম মীর ধলুকে (৪০) গ্রেপ্তারের পর বগুড়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গতকাল বুধবার রাত ১টার দিকে ধলুর বিরুদ্ধে মামলা করে শজিমেক কর্তৃপক্ষ।
র্যাব-১২ এর স্কোয়াড্রন লিডার মো. সোহরাব হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দল অভিযুক্তকে ঢাকার র্যাব সদর দপ্তর থেকে বগুড়ায় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাকে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করব। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানেই ধলুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে ধলুকে আটক করে র্যাব।
র্যাব ১২ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধলু অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলার কথা স্বীকার করেছেন। ধলু গত ৬ বছর ধরে শজিমেক ক্লিনিং বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করতেন। দুপুর ২টার মধ্যে কাজ শেষ করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও অন্যান্য জায়গায় কাজ করতেন তিনি। হাসপাতালের স্ট্রেচার ব্যবহার করে রোগীকে এখানে-সেখানে নিয়ে যেতেন এবং হাসপাতালের রোগীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করতেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা জানান, শজিমেক ওয়ার্ড মাস্টার (সার্জারি বিভাগ) মো. রফিকুল ইসলাম ধলুর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় মামলা করেন। এ ধারায় মামলার অর্থ, অভিযুক্তের গাফিলতির কারণে স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে ময়নাতদন্ত শেষে স্কুলছাত্রের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তার দাহ সম্পন্ন করা হয়।
শজিমেকের উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যে কোনো আর্থিক সাহায্যের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি।’
৫০ টাকা কম বকশিস পেয়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালের তৃতীয় তলার সার্জারি ওয়ার্ডে স্কুলছাত্র বিকাশ চন্দ্র কর্মকারের (১৮) অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন ধলু।
তার চাচা শচীন চন্দ্র কর্মকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পায় বিকাশ। প্রথমে স্থানীয় সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখান থেকে পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে শজিমেকে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগে বিকাশের চিকিৎসা শেষে মাথায় ব্যান্ডেজ এবং মুখে অক্সিজেন মাস্ক দিয়ে তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে মেঝেতে একটি বেড দেওয়া হয়।’
‘এসময় রোগীর স্ট্রেচার বহনকারী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক কর্মচারী বিকাশের বাবার কাছে ২০০ টাকা বকশিস দাবি করেন। এ সময় বিকাশের বাবা বিশু সেই কর্মচারীকে জানান, তার কাছে ২০০ টাকা নেই। ১৫০ টাকা আছে বলে তা সেই কর্মচারীর হাতে তুলে দেন।’
‘কিন্তু অভিযুক্ত কর্মচারী ধলু আরও ৫০ টাকা দাবি করলে আমার ভাই বিশু তা দিতে অসমর্থ হন। এতে ধলু রেগে যায় এবং বিকাশের মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে পা দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশের নাক-মুখ থেকে ফেনা বের হয় এবং তার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার আগেই এই কর্মচারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়’, বলেন শচীন চন্দ্র কর্মকার।
মৃত বিকাশ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মকারের ছেলে। সে স্থানীয় খামার ধনারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতো সে।
চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ‘৫০ টাকা কম বকশিস পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু’র ঘটনায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের অভিযুক্ত কর্মচারী ধলুকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার র্যাবের মিডিয়া পরিচালক খন্দকার আল মঈন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, শজিমেক হাসপাতালের কর্মচারী বকশিস চেয়েছিলেন ২০০ টাকা। রোগীর দরিদ্র বাবা দিতে পেরেছিলেন ১৫০ টাকা। এতেই খেপে গিয়ে রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন সেই কর্মচারী। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ১৮ বছরের এক স্কুলছাত্র।
ঘটনার পর অভিযুক্ত কর্মচারী ধলু হাসপাতালের আনসারদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠে।
মৃত স্কুলছাত্র বিকাশ চন্দ্র কর্মকার (১৮) গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মকারের ছেলে। বিকাশ স্থানীয় খামার ধনারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতো বলে জানান তার চাচা শচীন চন্দ্র কর্মকার।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শজিমেক হাসপাতালের তৃতীয় তলার সার্জারি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
শচীন চন্দ্র কর্মকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পায় বিকাশ। প্রথমে স্থানীয় সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখান থেকে পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে শজিমেকে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগে বিকাশের চিকিৎসা শেষে মাথায় ব্যান্ডেজ এবং মুখে অক্সিজেন মাস্ক দিয়ে তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে মেঝেতে একটি বেড দেওয়া হয়।’
‘এসময় রোগীর স্ট্রেচার বহনকারী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক কর্মচারী বিকাশের বাবার কাছে ২০০ টাকা বকশিস দাবি করেন। এ সময় বিকাশের বাবা বিশু সেই কর্মচারীকে জানান, তার কাছে ২০০ টাকা নেই। ১৫০ টাকা আছে বলে তা সেই কর্মচারীর হাতে তুলে দেন।’
‘কিন্তু অভিযুক্ত কর্মচারী ধলু আরও ৫০ টাকা দাবি করলে আমার ভাই বিশু তা দিতে অসমর্থ হন। এতে ধলু রেগে যায় এবং বিকাশের মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে পা দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশের নাক-মুখ থেকে ফেনা বের হয় এবং তার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার আগেই এই কর্মচারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়’, বলেন শচীন চন্দ্র কর্মকার।
এ বিষয়ে শজিমেকের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অভিযুক্ত ধলু আমাদের নিয়মিত কর্মচারী নয়। হাসপাতালের কাজে মাঝে মাঝে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কিছু লোকে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার করোনা টিকার বুথে কাজ করার জন্য ধলুকে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সে ইমার্জেন্সি বিভাগে কীভাবে গেল সেটা আমরা খুঁজে বের করব।’
‘বিকাশের মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। আজ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তীতে যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা হাসপাতালে না ঘটে, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হবে’, বলেন ডা. আব্দুল ওয়াদুদ।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঘটনার পর সেখানে আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা যান এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযুক্ত কর্মচারী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে হাসপাতালে কাজ করতো। সে এখন পলাতক। মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। এখনও রোগীর স্বজন বা হাসপাতাল কৰ্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেউ অভিযোগ না করলে পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিনা? জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘কেউ অভিযোগ না দিলে পুলিশ কিছু করবে না।’