মারা গেছেন অসংখ্য কালজয়ী গানের গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক কিংবদন্তী গাজী মাজহারুল আনোয়ার। রবিবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিট এর দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছেলে উপল বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে মাজহারুল আনোয়ারের ভাগ্নে অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় জানান, আমার মামা বাংলাদেশের কিংবদন্তী গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার আজ সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালের নেবার পথে ইন্তেকাল করেছেন। তার নামাজে জানাজা এবং অন্যান্য যাবতীয় যা কিছু কখন কী হবে আমি ফেসবুক স্ট্যাটাস এর মাধ্যমে জানিয়ে দিব।
বিশ হাজারেরও বেশি গানের গীতিকার তিনি। যার অসংখ্য গান মানুষের মুখেমুখে। তারমধ্যে অন্যতম জয় বাংলা বাংলার জয়, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল, একবার যেতে দেনা আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়, জন্ম আমার ধন্য হলো’র মতো দেশাত্মবোধক গান যেমন আছে, তেমনি সিনেমার জন্য আছে গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে, আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল, যার ছায়া পড়েছে, শুধু গান গেয়ে পরিচয়, ও পাখি তোর যন্ত্রণা, ইশারায় শীষ দিয়ে, চোখের নজর এমনি কইরা, এই মন তোমাকে দিলাম -এর মতো কালোত্তীর্ণ আধুনিক গান।
জাতিসংঘের তালিকায় গুমের শিকার হওয়া ৭৬ জন | এ কান্নার শেষ কোথায়
বিবিসি বাংলা তৈরিকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় রয়েছে তার লেখা তিনটি গান।
১৯৪৩ সালের ফেব্রয়ারিতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মাজহারুল আনোয়ার। ষাটের শুরুতে গান লেখার হাতেখড়ি। ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে তার পেশাদার গীতিকার জীবন শুরু। আর ১৯৬৫ সালে যুক্ত হন চলচ্চিত্রের সাথে। সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ ছবিতে ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গানটি দিয়ে চলচ্চিত্রের গান লেখা শুরু গাজী মাজহারুল আনোয়ারের।
শুধু গীতিকার হিসেবে নন, তিনি একজন সফল কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকও। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘দেশ চিত্রকথা’। তার প্রযোজিত ও পরিচালিত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম শাস্তি, স্বাধীন, শর্ত, সমর, শ্রদ্ধা, ক্ষুধা, স্নেহ, তপস্যা, উল্কা, আম্মা, পরাধীন, আর্তনাদ,পাষাণের প্রেম, এই যে দুনিয়া।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ বার গীতিকার হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও ২০০২ সালে একুশে পদক, ২০২১ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদক, একাধিকবার বাচসাস পদক সহ অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে তার অর্জনে।