রাউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে তৈরি। এটি নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। রাউটার হচ্ছে একটি নেটওয়ার্কিং ডিভাইস যা বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে ডাটা প্যাকেট তার গন্তব্যে কোন পথে যাবে তা নির্ধারণ করে।
রাউটার কি?
বিস্তারিত ব্যখ্যায় না গেলেও ছোট করে বলে ফেলি, রাউটার হচ্ছে সেই ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা দুইটা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাঝে ডাটা প্যাকেটের আদান-প্রদান করে থাকে। সেই সাথে রাউটার আইপি এড্রেস যাচাই করে এবং সব থেকে সহজ এবং দ্রুত সময়ে কিভাবে ডাটা বা তথ্য আপনার কাছে পৌছে দেয়া যায় সে চেষ্টা করে।
আমাদের বাসা বাড়িতে রাউটার সাধারনত আইএসপি থেকে যে কেবল আসে সেটার সাথে ইনপুট এ যুক্ত থাকে আর বাসার বাকি সব ডিভাইস রাউটারে কানেক্টেড থাকে। এর ফলে একই ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি আমরা।
রাউটার হচ্ছে একটা হাবের (HUB) এর মত (সংযোগ কেন্দ্র)। এখানে সবাই নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে যুক্ত হয় এবং রাউটার এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হয়। যদি ইন্টারনেট নাও থাকে তাহলেও রাউটারের সাথে কানেক্টেড সব ডিভাইস একে অপরের সাথে ডাটা প্যাকেট আদান-প্রদান করতে পারবে।
রাউটারের আর মডেমের মধ্যে পার্থক্য কি?
অনেকেই রাউটার আর মডেমকে একসাথে গুলিয়ে ফেলেন। অথচ রাউটার এবং মডেমের কাজ ভিন্ন। মডেম মূলত ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে। আপনার বাসার সব ডিভাইস তার বা তারবিহীন ভাবে রাউটারে যুক্ত থাকে। এই রাউটার একটা মডেমে যুক্ত থাকতে পারে। আমরা যদিও আইএসপি থেকে লাইন নিয়ে রাউটারে লাগাই যা আসলে ADSL মডেমের মতই কাজ করে।
বাজারে এখন অবশ্য অনেক মডেম পাওয়া যায় যেগুলো রাউটিং এর কাজও করে থাকে। আপনার হাতের এন্ড্রয়েড ডিভাইস একই সাথে মডেম এবং রাউটারের কাজ করতে পারে। আপনি সিম দিয়ে প্যাকেজ সাবস্ক্রাইব করে ইন্টারনেটের সাথে তারবিহীন বাদে যুক্ত হচ্ছেন, আবার একই সাথে হটস্পটের মাধ্যমে প্যাকেট রাউটিং এর কাজও করছেন।
মডেম এবং রাউটার নিয়ে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে নেটওয়ার্কিং নিয়ে একটু পড়তে হবে। আমি একটু হালকা ধারনা দিয়ে রাখলাম।
রাউটারের কেনার আগে যে বিষয়গুলো দেখতে হবেঃ
বাজারে হরেক কোম্পানির হরেক রকম রাউটার আছে। কোনটা কিনবেন আর কোনটা কিনবেন না সেটা পুরোটাই নির্ভর করে আপনার ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর।
যদি গেইম খেলাই মুখ্য হয়ে থাকে তবে আপনার দরকার ভালো মানের একটা রাউটার যেটাতে পিং লস হবে না বা স্পিড ড্রপ করবে না।
বাসায় সাধারন ব্যবহারের জন্য, যেমন মুভি, গান, ইউটিউব স্ট্রিমিং করার জন্য ১০০০ টাকা বাজেটেই অনেক রাউটার পেয়ে যাবেন। ব্রান্ড নন-ব্র্যান্ড সবই আছে।
যদি আপনি আমাদের মত আইটি প্রফেশনাল হন, তবে ধরেই নিচ্ছি আপনি আপনার প্রয়োজনীয় এই ডিভাইসটি সম্পর্কে বেশ ভালো জানেন। নিজেই নেট ঘাটাঘাটি করে নানা রকমের ডিভাইস বের করে ফেলেছেন।
আমাকে বলুনতো আপনি কোন রাউটারটি ব্যবহার করছেন এখন?
রাউটার কেনার আগে নেট থেকে বা প্যাকেটের গায়ে দেখে নিন এর বৈশিষ্টগুলো। আর ইউটিউবে দু-একটা রিভিউও দেখে নিতে পারেন।
এই networking device এর মাধ্যমে, বিভিন্ন অন্যান্য computer networks এর সাথে সংযুক্ত হয়ে তাদের মধ্যে “data packets” গুলোকে forward বা move করা হয়।
একটি রাউটার এর কাজ হলো, “বিভিন্ন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মধ্যে যোগাযোগের একটি মাধ্যম তৈরি করা”.
এবং নেটওয়ার্ক এর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য ক্ষেত্রে IP (internet protocol) এর ব্যবহার করা হয়।
তাই, রাউটার এর সংজ্ঞা (router definition in bangla) কি ? এই প্রশ্নটি করলে, এভাবেই বলা যেতে পারে।
তবে, রাউটার এর বিষয়ে যদি সহজ ভাবে বুঝতে হয়, তাহলে এভাবে বলা যেতে পারে,
সহজ ভাষায় রাউটার কাকে বলে ?
Router কে, এমন একটি electronic device বা external hardware বলা যেতে পারে যার মাধ্যমে বিভিন্ন আলাদা আলাদা computer network গুলোকে সংযুক্ত করা হয়।
এই ক্ষেত্রে, একটি router এই কাজটি wired বা wireless দুটো কানেকশন এর মাধ্যমেই করতে পারে।
ওয়্যারলেস (wireless) বা বেতার মাধ্যমে যেগুলো router বিভিন্ন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলোকে connect করে, সেগুলোকে বলা হয় “ওয়াইফাই রাউটার” (WiFi router).
Router হলো এমন এক device যেটা, একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কে আরেকটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর সাথে কানেক্ট করে।
যদি, ইন্টারনেটের (internet) ক্ষেত্রে বলা হয় তাহলে,
Router হলো সেই মাধ্যমটি, যার ব্যবহার করে, একটি নেটওয়ার্ক থেকে ইন্টারনেট ডাটা অন্যান্য কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলোতে ফরওয়ার্ড করা হয় বা পাঠানো হয়।
তাছাড়া, রাউটার এর ফলে অন্যান্য কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলো একটি বিশেষ “ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক” থেকে “internet connectivity” গ্রহণ করতে পারে।
Router নামের এই networking device টির প্রথম মডেল ১৯৭৪ সালে develop করা হয়েছিল।
তবে মনে রাখবেন, router এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ডাটা বা ট্রাফিক অন্যান্য কম্পিউটার গুলোতে প্রদান করার ক্ষেত্রে, আগে রাউটারটি নিজে একটি মডেম (modem) এর সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।
কারণ, একটি মডেম এর মাধ্যমেই রাউটারটি ইন্টারনেট ডাটা গ্রহণ করতে পারবে।
তাহলে আশা করছি, “router কি (about router in bangla)” এবং “এর কাজ কি কি”, এই বিষয় গুলো আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
রাউটার এর বিভিন্ন প্রকার গুলো কি কি ? – (Types Of Router)
এমনিতে, রাউটার এর প্রকার অনেক রকমের রয়েছে।
মানে, বিভিন্ন আলাদা আলাদা প্রকারের রাউটার বর্তমানে রয়েছে।
তবে, আমি নিচে আপনাদের কিছু জনপ্রিয় ও প্রচলিত রাউটার এর প্রকার গুলোর বিষয়ে বলবো।
- Broadband routers (Wired routers)
- Wireless routers (WiFi routers)
- Core routers
- Edge routers
- Inter provider border routers
চলুন, প্রত্যেকটি প্রকারের বিষয়ে অল্প বিস্তারিত ভাবে জেনেনেই।
Read More: ডাটা ছাড়াই চলবে ফেসবুক-মেসেঞ্জার
১. Broadband Routers (wired routers)
এই ধরণের router গুলো ২ টি বা তার থেকে অধিক কম্পিউটার গুলোকে সংযুক্ত করার জন্য এবং পরস্পরে ইন্টারনেটের সাথে connect করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
এরকম broadband router গুলোর মাধ্যমে অনেক high speed internet এর ব্যবহার করা সম্ভব।
রাউটার গুলো, একটি wired connection এর মাধ্যমে modem থেকে internet সেবা গ্রহণ করে, এবং তারপর আপনার ঘরের বা দপ্তরে থাকা অন্যান্য device গুলোকে সেই internet connection এর সাথে সংযুক্ত হওয়ার রাস্তা করে দেয়।
২. Wireless routers
বর্তমান সময়ে wireless router এর ব্যবহার ও চাহিদা প্রচুর।
ব্যক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রেই বলুন বা অফিসিয়াল কাজে, আমাদের ঘর বা দপ্তরে বেশিরভাগ এই wireless routers গুলোই ব্যবহার হওয়া দেখা যায়।
এই wireless router গুলোর মাধ্যমে একটি কম্পিউটার কোনো তার (wire) ছাড়াই অন্য একটি কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত হয়ে ইন্টারনেট গ্রহণ করতে পারে।
আর এজন্যই এই ধরণের রাউটার গুলোকে “wireless” (তার ছাড়া) বলে বলা হয়।
এই ধরণের রাউটার গুলো, একটি wireless signal এর নির্ধারিত area তৈরি করে।
এবং, সেই নির্ধারিত area র ভেতরে থেকে wireless signal টির সাথে একটি computer, mobile, laptop ইত্যাদি সংযোগ হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে।
আর সেটাও কোনো তার (wire) ছাড়া।
সুরক্ষার ক্ষেত্রে এই ধরণের ওয়াইফাই রাউটার গুলোতে password এর ব্যবহার করা হয়।
এতে, আপনার অনুমতি ছাড়া আপনার WiFi network area র ভেতরে থাকা অন্যান্য computer বা mobile গুলো ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হতে পারেনা।
৩. Core routers
Core router এর মাধ্যমে, বিভিন্ন আলাদা আলাদা জায়গায় থাকা router গুলোকে একসাথে সংযুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ স্বরূপে,
ধরুন আপনার কোম্পানিতে ১০ টি রাউটার আলাদা আলাদা জায়গায় রয়েছে।
এখন সেই ১০ টি আলাদা আলাদা router গুলোকে একসাথে পরস্পরে সংযুক্ত করার কাজ করে এই core router.
Lane network এর backbone হিসেবে যেই router কাজ করে, তাকে বলা হয় core router.
আলাদা আলাদা distributed routers গুলোকে পরস্পরে সংযুক্ত করার জন্যে core routers ব্যবহার করা হয়।
৪. Edge routers
এই ধরণের রাউটার গুলোকে internet service provider বা ISP র পাশে রাখা হয়।
বাইরের protocol যেমন border gateway protocol (BGP) গুলোকে অন্যান্য ISP র BGP র সাথে configure করে।
৫. Inter provider border routers
আপনারা ISP মানে তো অবশই জানেন ? ISP মানে, “Internet service provider”.
যেমন, Airtel, Reliance, Jio, Idea, BSNL ইত্যাদি, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করি।
এই ধরণের ISP গুলোকে পরস্পরে সংযুক্ত (interconnect) করার ক্ষেত্রে, এই Inter provider border routers ব্যবহার করা হয়।
তাহলে, এগুলোই ছিল রাউটার এর কিছু প্রকারভেদ।
রাউটারের রেইঞ্জ
প্রায় ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই যারা রাউটার কিনছেন তাদের মূল সমস্যা থাকে রেইঞ্জ নিয়ে। সবাই চান কমদামে ভালো মানের একটা রাউটার যেটা লম্বা দূরত্বেও ওয়াইফাই সিগনাল দেবে।
প্রতিটা রাউটারের যদিও একটা রেইঞ্জ লিমিট দেয়া থাকে, সেটা কিন্তু একটা খোলা জায়গার জন্য বা তাদের নিজস্ব ফ্যাক্টরি এনভায়রনেমেন্টের জন্য। আপনার বাসায় আদতেও এই রেঞ্জ কাজ করবে কিনা তার কিন্তু কোন গ্যারান্টি নেই।
রাউটারের স্পিড এবং রেঞ্জ অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে যেমন,
১. আশেপাশে আর কতগুলো ওয়াইফাই রাউটার ডাটা ট্রান্সমিট করছে এবং এরা কোন চ্যানেলে/ফ্রিকোয়েন্সিতে ডাটা ট্রান্সফার করছে।
২. আপনার ঘরের দেয়াল, বাসায় মাইক্রোওয়েভ জেনারেট করে এরকম ইন্সট্রুমেন্ট এর উপস্থিতি।
৩. রাউটারের পজিশন ঘরের ঠিক কোথায় তার উপর
৪. আপনার আইেসপির মূল লাইনের স্পিডের উপর, ইত্যাদি।
খোলা জায়গায় সাধারণ একটা ২.৪ গিগাহার্জের ব্যান্ডের রাউটার সাধারণত ৩০০ মিটার পর্যন্ত ভালভাবে সাপোর্ট দিতে পারে। সেই একই রাউটার এর অর্ধেকেরও কম সাপোর্ট দেবে বিল্ডিং এর ভেতরে।
রাউটারের এন্টেনা কয়টা সেটার উপর রাউটারের রেঞ্জ নির্ভর করে না।
জ্বী, কথা সত্য। অনেকেই এই বিষয়টি বুঝতে চান না। এন্টেনা বেশি থাকার মানে হল সিগনাল কোয়ালিটি আরো ভালো দিতে পারবে এই রাউটার, আরো বেশি ডিভাইসের সাথে কানেক্ট হলেও ডাটা আদান-প্রদানে সমস্যা হবে না। কিন্তু, কোনভাবেই এটা আপনার রাউটারের রেঞ্জ বাড়াবে না।
আপনার রাউটারের রেঞ্জ বাড়ানোর জন্য কিছু সাধারন টিপস মেনে চলতে পারেনঃ –
০১. সবার আগে ভালো দেখে একটা রাউটার কিনুন।
০২. রাউটার যথা সম্ভব রুমের মাঝখানে রাখুন।
০৩. আপনার সিগন্যাল ফ্রিকোয়েন্সি বা চ্যানেল প্রয়োজনে ম্যানুয়ালি সিলেক্ট করুন।
০৪. রাউটারের ফার্মওয়ার আপগ্রেড করে সর্বশেষ সংস্করনে রাখুন।
০৫. প্রয়োজনে রিপিটার ব্যবহার করতে পারেন।
রিপিটার ব্যবহার করলে আপনার বাসার যে অংশে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক পায়না সেখানেও ইন্টারনেট পৌছে দিতে পারবেন। তবে সাধারন ওয়াইফাই রিপিটারের একটা ঝামেলা হল এরা সিগনালের কোয়ালিটি ড্রপ করে দেয়।
আবার SSID পরিবর্তন হয়ে যাবার ফলে এক রুম থেকে আরেক রুমে যাবার সময় সিগনাল ড্রপ করতে পারে কারন আপনার কানেকশন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। যদি রিপিটার একটা ইউনিফাইড সিস্টেমের মাধ্যমে লাগানো থাকে তবে এই সমস্যায় পড়বেন না।
২.৪ গিগাহার্জের রেঞ্জ ৫ গিগাহার্জের নেটওয়ার্কের রেঞ্জ থেকে বেশি। তবে ৫ গিগাহার্জে ডাটা আদান-প্রদান এবং স্পিড বেশি।
ভালো কিছু রাউটারের নাম বলুন / রাউটার কোনটা কিনব?
আগেই বলে নিয়েছি সব রাউটার সবার জন্য ভালো নাও হতে পারে। একটা রাউটার ভালো না খারাপ তা নির্ভর করবে ব্যবহারকারীর কাজের ধরনের উপর।
বাজারে হরেক রকম রাউটার আছে। দামী, কম দামী, ছোট-বড়, এক এন্টেনা থেকে আটটি পর্যন্ত, সেই সাথে আছে এদের নানা রকম আকৃতি।
কাজেই আপনার কাজের ধরন অন্যযায়ী রাউটার খুঁজে নিন।
দামের তুলনায় এক হাজার থেকে বিশ হাজার টাকার মধ্যে রাউটার খুঁজে পাবেন। মূল কথা হল কি কাজে আপনি ইন্টারনেট বেশি ব্যবহার করেন সেই কাজের উপর নির্ভর করে আপনার রাউটার ভালো বা মন্দ হবে।
বরঞ্চ এটা বলে দেয়া সহজ কোন কোম্পানির রাউটারগুলো ব্যবহার করে আমি বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছি।
TP-LINK
প্রফেশনাল এবং নন-প্রফেশনাল সবার কাছে TP-Link এর রাউটার গুলোর কদর অনেক বেশি। নানা রেইঞ্ছের এবং আকৃতির রাউটার আছে TP-Link কোম্পানির।
যদি একটু বেশি ওয়াইফাই রেইঞ্জ চান, কিন্তু টাকা কম খরচ করতে চান তবে TP-Link TL-WR841N 300Mbps Wireless Router – এটি দেখতে পারেন। এটি ২.৪ গিগাহার্জ সাপোর্ট করে কিন্তু বেশ ভালো দূরত্বেও ওয়াইফাই সিগন্যাল পাওয়া যায়।
মাত্র দুটি এন্টেনা হওয়া স্বত্তেও এর কাভারেজ এবং স্পিড বেশ ভালো। রাউটারটির মডেল বেশ পুরনো হলেও গ্রাহক চাহিদায় এখনও এগিয়ে আছে এবং কোম্পানি মার্কেটে এটি আবার নতুন সফটওয়্যার দিয়ে ছেড়েছে।
কমদামে TP-Link Archer সিরিজের রাউটার গুলোও দেখতে পারেন। এগুলো তিন এন্টেনা বিশিষ্ট ডুয়েল ব্যান্ডের। ২.৪ এবং ৫ গিগাহার্জের ব্যান্ড একই সাথে ট্রান্সমিট করতে পারে। তবে এদের রেইঞ্জ অত ভালো নয়।
যে রুমে আপনি কাজ করবেন বা গেইম খেলবেন সেখানে রাউটার রাখলে পিং নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না।
TP-Link এর রাউটার যদি ব্যবহার করেন তবে Tether এপটি প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নেবেন। সব রাউটার মডেল সাপোর্ট না করলেও এটি চমতকার ভাবে বাসার রাউটার ম্যানেজমেন্টে আপনাকে সাহায্য করবে।
আমার ব্যক্তিগত পছন্দ Mesh Network যুক্ত রাউটারগুলো। আমি এখনো পর্যন্ত TP-Link এর DECO M4 রাউটার ব্যবহার করছি। আমার রাউটারটি ৩ টি ইউনিটের। Mesh Network যুক্ত রাউটার ব্যবহারের সুবিধা হলো আপনাকে আলাদা করে রিপিটার ব্যবহার করতে হবে না।
প্রতিটি ইউনিটই একটা আলাদা রাউটার হিসেবে কাজ করে। তাই আপনি যেকোন ইউনিটের সাথেই আপনার আইএসপির কেবল লাইন লাগাতে পারেন। এরপর বাকি ইউনিট এক বা দুটি এর সাথে কানেক্ট করে নেবেন। আপনার ঘরের বা ফ্লাটের যেখানে ব্লাইন্ড স্পট তৈরি হচ্ছে বলে মনে হয় এগুলো সেখানে রাখবেন। আমার তিনটা ইউনিট তিন জায়গায় রাখা।
এর ফলে আপনার সারা বাসায় আর কোন নেটওয়ার্ক ড্রপ হবে না। রিপিটারে যেমন ভিন্ন ভিন্ন নামে ওয়াই ফাই এক্সটেন্ড করে, তাই এক রুম থেকে আরেক রুমে গেলে একটা SSID ডিসকানেক্ট হয়ে আরেকটায় যুক্ত হয়, গেইম খেললে এটা সমস্যার। Mesh রাউটারে এরকম হয় না। সে একই SSID সব জায়গায় ব্রডকাস্ট করে। আর সবথেকে শক্তশালী বা কাছাকাছি যেটা থাকে সেটার সিগন্যালে স্বয়ংক্রিয় ভাবে যুক্ত হয়ে যায়।
কাজেই মেশ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে ডাটা লস বা ডিসকানেকশনের সমস্যা অনেক কম।
XIAOMI ROUTER
মোবাইল দিয়ে মার্কেটে খ্যাতি পেলেও রাউটার তৈরিতে শাওমি পিছিয়ে নেই। বাজারে এর মধ্যেই তার ৫ টি মডেলের রাউটার বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
Mi- Router গুলো দেখতে বেশ সুন্দর এবং হালকা পাতলা গড়নের। তুলনামূলক দাম কম বলেও অনেকের পছন্দের তালিকায় আস্তে আস্তে জায়গা করে নিচ্ছে।
কিন্ত এ পর্যন্ত আমি যে দুটো Mi – Router ব্যবহার করেছি তাদের রেঞ্জ খুব একটা ভালো পাইনি। তারওপর নেটওয়ার্ক ড্রপ একটা সাধারন বিষয়।
Mi- Router এর অপারেটিং সিস্টেম বেশ আলদা এবং কিছু জিনিস বেশ এলোমেলো। এর থেকে TP-Link বা Linksys এর রাউটার গুলোতে সব অপশন বেশ গোছানো আছে। Mi- Router এর সবগুলোতেই আমি ডুয়েল ব্যান্ডের ট্রান্সমিশন দেখেছি।
যারা সস্তায় দেখতে সুন্দর রাউটার কিনতে চাচ্ছেন Mi- Router তাদের জন্য। কিন্তু গেইমার বা স্ট্রিমারদের এই রাউটার কিনতে আমি উৎসাহ দেব না।
TENDA
Tenda – রাউটার নিয়ে সবারই একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে, প্রথমদিকে এরা দুই এন্টেনার যে রাউটার বের করেছিল Tenda N301 Wireless N300 ,সেটি ব্যভার করে আমার বেশ ভালো লেগেছিল। ২.৪ গিগাহার্জের হলেও এটিও বেশ ভালো দূরত্ব পর্যক সিগন্যাল দিতে পারত।
আর বাদবাকি Tenda রাউটারগুলো Mi Router এর মতই কানেকশন ড্রপ এর সমস্যা দেখেছি।
ASUS ROUTER
আসুসের রাউটারগুলো একটু ইউনিক টাইপের হয়ে থাকে। দেখতে কিছুটা অদ্ভুত কিন্তু কাজে চমৎকার। আপনার পকেটে যদি কিছু টাকা বেশি থাকে তবে আমি সাজেস্ট করব আসুসের রাউটারগুলো কিনতে।
মাত্র দু-একটি বাদে আসুসের সব রাউটারেরই দাম অনেক বেশি। তবে যারা ডেডিকেটেড ভাবে গেইমিং বা ইউটিউব স্ট্রিমিং করেন তাদের প্রথম পছন্দ Asus Rog Rapture টাইপের ট্রাই ব্যান্ড রাউটারগুলো।
এ সকল রাউটার বাদেও বাংলাদেশের বাজারে PROLINK, D-Link, Linksys, Huawei, Netgear এর রাউটারও পাওয়া যায়।
তবে, সব দিক বিবেচনায় মার্কেটিং এবং বিক্রিতে TP-Link সবার থেকে এগিয়ে, অন্তত বাংলাদেশে এর সহজলভ্যতা, আমদানী বেশি হওয়া, দামে সস্তা ইত্যাদি কারনে সবাই শেষ ভরসা হিসেবে TP-Link কেই ধরে নেয়।
কোন রাউটারই সব দিক থেকে সেরা হতে পারে না। কতটি ডিভাইস কানেক্ট থাকবে, বাসা বা অফিসের আর্কিটেকচার, অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স এর ফ্রিকোয়েন্সি ইত্যাদি নানা কারনে রাউটারের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
রাউটার এর ব্যবহার কেন করা হয় ?
বর্তমান সময়ে, প্রত্যেকটি office বা ঘরে রাউটার এর ব্যবহার কেবল একটি মাত্র উদ্দেশ্যেই করা হয়।
সেটা হলো, “একটি ISP (internet service provider) থেকে গ্রহণ করা ইন্টারনেট কানেকশন, বিভিন্ন আলাদা আলাদা কম্পিউটার ডিভাইস এর মধ্যে শেয়ার করার উদ্দেশ্যে”.
একটি মডেম (modem) এর মাধ্যমে আপনার router এ internet গ্রহণ করা বা সংযুক্ত করা হয়।
এবং তার পর, গ্রহণ করা ইন্টারনেট ডাটা যাতে বিভিন্ন আলাদা আলাদা computer, mobile বা laptop এর দ্বারা একসাথে ব্যবহার করা যেতে পারে, এই কাজের ক্ষেত্রেই রাউটার এর ব্যবহার করা হয়।
ধরুন, আপনার দপ্তরে থকা মুখ্য কম্পিউটারে আপনি আপনার modem থেকে সোজা ভাবে ইন্টারনেট গ্রহণ করছেন এবং ব্যবহার করছেন।
তবে, এখন যদি সেই মডেম এর মাধ্যমে গ্রহণ করা internet এর সাথে আপনি দপ্তরের অন্যান্য computer বা mobile গুলোকে connect করতে চাচ্ছেন, তাহলে এই ক্ষেত্রে আপনার ব্যবহার করতে হবে একটি router এর।
বিভিন্ন device গুলো যাতে একটাই মডেমের মাধ্যমে গ্রহণ করা internet সেবা একসাথেই গ্রহণ ও ব্যবহার করতে পারে, সেই ক্ষেত্রে একটি router কাজে আসে।
পকেট রাউটার কি ?
পকেট রাউটার গুলোকে পোর্টেবল পকেট ওয়াইফাই রাউটার (portable WiFi router) বলেও বলা হয়।
এই ধরণের পকেট ওয়াইফাই রাউটার গুলো সাধারণ WiFi router এর তুলনায় অনেক ছোট থাকে।
এবং, এতটাই ছোট যে আপনি সেটাকে নিজের পকেটে করে নিয়ে যেকোনো জায়গার থেকেই ব্যবহার করতে পারবেন।
Pocket router গুলো portable থাকে, এবং তাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ করার জন্য WiFi connection এর ব্যবহার করতে হয়।
একটি সাধারণ রাউটার, প্রথমেই তারের মাধ্যমে modem এর সাথে সংযুক্ত করতে হয় এবং তারপর wire বা WiFi ব্যবহার করে অন্যান্য computer device গুলো মডেম থেকে আশা ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হতে পারে।
কিন্তু, একটি পকেট রাউটার বা পোর্টেবল রাউটার এর ক্ষেত্রে, internet connection প্রদান করার জন্য একটি SIM card ব্যবহার করা হয়।
মানে, আপনি যেই কোম্পানির পকেট রাউটার ব্যবহার করছেন, সেই কোম্পানির sim card সেখানে লাগানো থাকবে।
এবং, যখনি যেই জায়গার থেকে আপনি নিজের রাউটার চালু করে দিবেন, সেখান থেকেই WiFi connection এর মাধ্যমে একাধিক device এ Internet ব্যবহার করতে পারবেন।
Pocket router বা portable router গুলো এমনিতে মোবাইলের মতোই charge দিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
ভারতে এই ধরণের পকেট ওয়াইফাই রাউটার গুলোর মধ্যে “JioFi” অধিক পরিমানে ব্যবহার করা হয়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে, pocket router গুলোকে travel router বলেও বলা হয়।
তাহলে, “pocket router কি” এই বিষয়ে বুঝলেন তো ?
পকেট রাউটার কি বা কাকে বলে, এই বিষয়ে জানার পর চলুন পকেট রাউটার এর কিছু সুবিধা ও লাভ এর বিষয়ে জেনেনেই।
পকেট রাউটার এর সুবিধা কি কি ?
Pocket রাউটার এর সুবিধা বলতে তেমন বিশেষ কিছু নেই।
তবে, যেই দুটি বা তিনটি সুবিধে রয়েছে, সেটাই অনেক বেশি।
- নিজের পকেটেই যেকোনো সময় নিজের পার্সোনাল router নিয়ে ঘুরতে পারবেন।
- যেকোনো সময় রাউটার এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
- অন্যান্য রাউটার গুলোর তুলনায় পকেট পোর্টেবল রাউটার গুলো অল্প সস্তায় পাওয়া যেতে পারে।
- এখানে “internet hotspot” বা “internet access point” তৈরি করার জন্য একটি SIM card ব্যবহার করা হয়।
- যেকোনো সময় নিজের পার্সোনাল internet access point থেকে internet ব্যবহার করলে, আপনার connection সব সময় সুরক্ষিত থাকছে।
মডেম রাউটার কি রাউটার কি, ict রাউটার এর দাম, ওয়াইফাই রাউটার কি, রাউটারের কাজ কি ,রাউটার কি, ডিভাইস পকেট রাউটার কিভাবে কাজ করে, পকেট রাউটার এর দাম