হাড়ের সর্বনাশ করছে এই ৫ অভ্যাস

বর্তমানে হাড়ের সমস্যা খুব সাধারণ একটা ব্যাপার হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন কারণে হাড়ের সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে অল্প বয়স থেকেই নানা রকম হাড়ের সমস্যায় ভোগেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব সমস্যার জন্য দৈনন্দিন কয়েকটি বদঅভ্যাসই দায়ী।

ঘরের ভেতরে থাকা

ভিটামিন ডি- এর অভাবে হাড় ঠিকমত গড়ে ওঠে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাড় মজবুত করার জন্য ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি- এর অভাবে হাড় পাতলা এবং ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। আর ভিটামিন ডি- এর উৎস হলো সূর্যালোক। সূর্যালোক শরীরের সংস্পর্শে এলে ভিটামিন ডি প্রস্তুত করে। তাই সারাদিন ঘরের ভেতরে না থেকে কিছু সময়ের জন্যও যদি বাইরে সূর্যালোকের নীচে বের হওয়া যায়, তাহলে তা হাড়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া, খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন – স্যালমন, ডিমের কুসুমসহ অন্যান্য খাদ্য রাখার চেষ্টা করুন।

 

লবণাক্ত খাবার গ্রহণ

গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম কমে যেতে পারে। বিশেজ্ঞদের মতে আমাদের শরীরে প্রতিদিন ২ হাজার ৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম প্রয়োজন। আমরা যে কেবল খাবার লবণের মাধ্যমে সোডিয়াম গ্রহণ করি তা কিন্তু নয়। কিছু খাবারে প্রাকৃতিকভাবে লবণ থাকে, যার ফলে শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম চলে আসতে পারে। তাই ক্যালসিয়ামের ক্ষতি এড়াতে পরিমিত পরিমাণে লবণ খেতে হবে।

 

আরও পড়ুন: শীতকালে গরম পানিতে গোসল, উপকার নাকি ক্ষতি?

 

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা দ্রুত হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। পেশী সংকোচন হাড়কে মজবুত করে তোলে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে শরীরচর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত হাঁটা কিংবা ওয়েটলিফটিং করা বা অন্যান্য ব্যায়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

 

ধূমপান

ধূমপানের কারণে অসুখের লিস্ট ক্রমশই বাড়ছে। ফুসফুস, হার্টের অসুখের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে হাড়ের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিগারেটে থাকা নিকোটিন ও টক্সিন উপাদান রক্তের মাধ্যমে হাড়েও বাহিত হয়। নানা ক্ষতির সঙ্গে হাড়ের ডেনসিটি বা ঘনত্ব নষ্ট করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান শরীরের টিস্যুগুলোতে ফ্রি রেডিক্যাল উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এটি কেবল ফুসফুসের জন্যই খারাপ না, পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত ক্ষতিকারক। যারা নিয়মিত ধূমপান বা তামাক ব্যবহার করেন, তাদের হাড়ের ঘনত্ব তুলনামূলক কম থাকে। কারণ, ফ্রি রেডিক্যাল হাড় সৃষ্টিকারক কোষগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। এছাড়া, ধূমপানের ফলে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ক্যালসিটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমে। কর্টিসল হাড়ের স্টক কমাতে পরিচিত এবং অন্যদিকে ক্যালসিটোনিন এটি বজায় রাখে। এছাড়া, হাড়ে ফ্র্যাকচার হলে ধূমপান রক্তনালীগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে নিরাময় প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।

 

মদ্যপান

ধূমপানের মতোই অত্যধিক মদ্যপানও শরীরে কর্টিসলের উৎপাদনকে বৃদ্ধি করে, যা বোন স্টক নষ্ট করে দেয়। তাছাড়া, অ্যালকোহলের সেবন শরীরে টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। এই হরমোনগুলো হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply