নাম তার মারভিয়া মালিক। তিনিই পাকিস্তানের প্রথম হিজড়া সংবাদ পাঠিকা। দেশটির একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রথমবারের মতো খবর পাঠ করেছেন মারভিয়া।
তৃতীয় লিঙ্গের এই সংবাদ পাঠিকা সাংবাদিকতা বিভাগে স্নাতক পাশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়, আমি আনন্দে চিৎকার করে কেঁদে ফেলেছিলাম। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম। এখন স্বপ্ন পূরণের পথে সিঁড়ির প্রথম ধাপে পা দিয়েছি।’
মারভিয়া বলেন, ‘আমার পরিবার আমাকে অস্বীকার করেছে। কিন্তু আমার দেশ দুই হাত খুলে আমাকে স্বাগত জানিয়েছে।’
জানা গেছে, মারভিয়া পাকিস্তানি ফ্যাশন জগতে একজন মডেল হিসেবে পরিচিত। শুক্রবার দেশটির ব্যক্তিমালিকানাধীন নিউজ চ্যানেল কোহিনূর-এ সংবাদ পাঠ করেন তিনি।
কোহিনূরের মালিক জুনাইদ আনসারি জানান, তারা মারভিয়াকে যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত করেছেন। এখানে লিঙ্গ কোনো বিষয় ছিল না।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে হিজড়াদের নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। চাকরি যোগাড় করতেও তাদের অনেক লড়াই করতে হয়।পাকিস্তান সিনেট গত মাসে হিজড়াদের পক্ষে একটি বিল অনুমোদন করেছে। সেই বিলে হিজড়া সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষার পাশপাশি তাদের নিজেদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ভিওএ নিউজ
বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে দুই ট্রান্সজেন্ডার
‘‘সমাজ, পরিবার সবকিছু উলটো পথে হাঁটছিল৷ সব প্রতিবন্ধকতা ভেদ করেই আজকের জায়গা তৈরি করতে হয়েছে৷’’ ডয়চে ভেলেকে বলছিলেন তাসনুভা আনান শিশির, বাংলাদেশে প্রথম টেলিভিশনে সংবাদ পাঠের সুযোগ পাওয়া ট্রান্সজেন্ডার নারী৷
বেসরকারি চ্যানেল বৈশাখী টেলিভিশনে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সংবাদ পাঠ করবেন তিনি৷
একই দিন চ্যানেলটির একটি নাটকে দেখা যাবে আরেক ট্রান্সজেন্ডার নারী নুসরাত মৌ-কে৷ শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বৈশাখী টেলিভিশন এই ঘোষণা দিয়েছে৷ চ্যানেলটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক টিপু আলম মিলন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বৈশাখী টেলিভিশন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই বছর, স্বাধীনতার মাস মার্চে নারী দিবস উদযাপনের আগে সংবাদ বিভাগ ও নাটকে দুই জন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যুক্ত করেছে৷ দেশের মানুষ এই প্রথম একজন ট্রান্সজেন্ডারকে পেশাদার সংবাদ বুলেটিনে পাঠ করতে দেখবেন৷’’
দৃষ্টান্ত স্থাপনের সেই মুহূর্তের জন্য দুইজনই এখন ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন৷ তার মধ্যেই ডয়চে ভেলের কাছে জানিয়েছেন তাদের বাধার পাহাড় ডিঙানোর গল্প৷
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার অব পাবলিক হেলথের শিক্ষার্থী তাসনুভা আনান শিশির৷ তার শৈশব-কৈশোর অন্য শিশুদের মতো ছিল না৷ আশেপাশের মানুষের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, হেনস্থার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছেন৷ সেই অতীত স্মৃতি বরাবরই তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক৷ শিশির বলেন, একটা ছেলের শরীর নিয়ে কারো আচরণ যদি মেয়েলি হয়, তাহলে, ‘‘সেই আচরণে কেউ সমর্থন দেয় না, বরং অনবরত বুলিং, হেনস্থার শিকার হতে হয়, যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়৷ সেরকম প্রতিবন্ধকতা ভেদ করেই আজকের জায়গা তৈরি করতে হয়েছে৷’’
নুসরাত মৌ-এর সংগ্রামটা একটু অন্যরকম৷ ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি৷ চতুর্থ শ্রেণি পেরুতেই বাধ্য হয়েছেন স্কুল ছাড়তে৷ ‘‘আমি যখন স্কুলে যেতাম, তখন আমাকে অন্য শিক্ষার্থীরা খ্যাপাতো, হিজড়া হিজড়া বলতো, টিজ করতো, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতো, এক সাথে বসতে গেলে বেঞ্চ ফেলে দিতো, নানাভাবে হেনস্থা করতো৷ এ কারণে স্কুলে যাওয়ার ম- মানসিকতাটা আর হয়নি৷ একটা পর্যায়ে মনে হলো, সবাই এমন অপমান করে, আর স্কুলেই যাবো না৷’’
শুধু স্কুল নয়, পরিবারও ছাড়তে হয়েছে তাকে৷ মাত্র আট-নয় বছর বয়সেই চলে আসেন ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটিতে৷ উত্তরায় এক গুরু মায়ের কাছেই বড় হয়েছেন তিনি৷ ‘‘আমাদের সামাজিকভাবে স্বাভাবিক চোখে কেউ দেখে না৷ আমাদের মতো মানুষ এই পর্যায়ে আসতে পারে সেটিই কেউ ভাবতে পারে না৷’’ অবশ্য নুসরাত তার কমিউনিটির সদস্যদের কাছে কৃতজ্ঞ৷ তাদের সমর্থনই এতদূর আসার পেছনে তাকে উৎসাহ জুগিয়েছে৷
যেভাবে গণমাধ্যমে
টেলিভিশনের পর্দায় একই সময়ে অভিষেক হবে দুজনের, যদিও তাদের চলার পথটি ছিল একেবারেই ভিন্ন৷ তবে মিল এক জায়গায়৷ দুজনই বলছেন, তাদের কারো জন্যই এতদূর আসা হঠাৎ পাওয়া কোনো সুযোগ নয়৷
টেলিভিশনে সংবাদ পাঠিকা হতে চললেও শিশির চেয়েছিল নাটকে অভিনয় করতে৷ বৈশাখী টেলিভিশনে গিয়েছিলেন অডিশন দিতে৷
‘‘চয়নিকা দি (চয়নিকা চৌধুরী) একটি নাটকে কাজ করার জন্য কথা বলছিলেন৷ সেখান থেকে যখন কথাবার্তা হচ্ছিল, তখন ওনাদের নিউজে অডিশন দিতে বললেন৷ আমার উচ্চারণ ভালো দেখে বললেন নিউজে কাজ করতে চাই কিনা৷ আমারও ভালো লাগা ছিল, আগ্রহের জায়গা ছিল৷ সেখান থেকে অডিশন দিয়ে পুরো যোগ্যতা প্রমাণ করেই আমাকে আসতে হয়েছে, দীর্ঘ যাত্রা পেরিয়ে৷ যেহেতু আগের কোনো কোর্স করা নেই সেহেতু টেকনিক্যাল জায়গাগুলো বুঝতে হয়েছে৷’’
তবে এই বোঝাপড়ার জায়গায় সহকর্মীদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছেন সেটি তার জন্যে অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা৷ ‘‘এটা আমার আরেকটা পরিবার, এখানে কেউ হয়রানি করে না৷ এখানে কেউ আমাকে আঙুল দিয়ে বলছে না আমি অন্য কেউ,’’ বলেন শিশির৷
গণমাধ্যমেই কাজ চালিয়ে যাবেন কিনা কিংবা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী- এমন প্রশ্নে জানালেন, খুব বেশিদূর তাকাতে চান না তিনি৷ ‘‘আপাতত পড়োশোনা করছি, পোড়াশোনাটাই করতে চাই৷ ভবিষ্যৎ নিয়ে ঐ পরিমান ভাবতে পারিনি এখনও৷ পড়াশোনা শেষ করে হয়ত বুঝতে পারবো কী করা উচিত,’’ বলেন তিনি৷
নুসরাত মৌ অবশ্য গণমাধ্যমেই কাজ চালিয়ে যেতে চান৷ কেননা, শৈশব থেকে এমন স্বপ্নই দেখেছেন তিনি৷ শখ ছিল অভিনয়ের৷ সেই সুযোগ আসে আ ক ম নাসিরুল্লাহ নামে একজনের মাধ্যমে৷ তিনিই তাকে নিয়ে আসেন মঞ্চ নাটকে৷ ‘‘উনি আমাকে মেয়ের মতো দেখেন, ভালোবাসেন৷ উনি আমাকে মঞ্চ নাটকে নেন৷ সেখান থেকে আমার অভিনয় দেখে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়৷ তার মাধ্যমে মনির হোসেন জীবন ভাইয়েরসঙ্গে পরিচয় হয়৷ এভাবে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পরে আসলে এই কাজের সুযোগ পাওয়া,’’ বলেন মৌ৷
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য
ভবিষ্যৎ যেখানেই নিয়ে যাক না কেন দুইজনই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য কাজ করতে চান৷ নুসরাতের ভাবনা নতুন প্রজন্মকে ঘিরে৷ ট্রান্সজেন্ডার হলেও তার মতো যেন কাউকে পড়াশোনা ছাড়তে না হয়৷ সবাই সমান ভাবে যাতে স্কুল কলেজে পড়ার অধিকার পায়৷ তার ভাবনা, ‘‘ভবিষ্যতেও তো হিজড়াদের জন্ম হবে৷ তারা কীভাবে বড় হবে? আমি চাই সরকার, সমাজ এমন কিছু একটা করুক যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পরিবারের সঙ্গে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনা করে বড় হতে পারে৷ আমাদের কমিউনিটিতে যেন তাদের আসতে না হয়৷’’
শিশিরের স্বপ্ন তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটির সদস্যদের ভাগ্য পরিবর্তন করা৷ তাদের জন্য একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করা৷ ‘‘তাদের দক্ষতা উন্নয়নে এবং প্রতিটি মানুষকে সাপোর্ট দেওয়া দরকার৷ আমি শুরু থেকেই তাদের জন্য কাজ করেছি, সেটা সামনেও করবো৷ যে যেই সেক্টরে কাজ করতে চায় তাদের সহযোগিতা করবো,’’ এমনটাই শিশিরের সংকল্প৷
বৈশাখী টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ট্রান্সজেন্ডারদের ধারাবাহিক ও স্থায়ী উন্নয়নের ধারা নিশ্চিত করতে সবার মানসিকতার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি৷ সে-কারণেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে নারী দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে তারা সংবাদে ও নাটকে দুইজন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যুক্ত করছেন৷
এদিন চ্যানেলটির ধারাবাহিক নাটক ‘চাপাবাজ’-এর একটি পর্বে দেখা যাবে নুসরাত মৌকে, যা প্রচারিত হবে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে৷ অন্যদিকে শিশিরকে দেখা যাবে বৈশাখীর নিয়মিত সংবাদের উপস্থাপনায়৷
তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার আদায়ে আদালতই ভরসা?
তৃতীয় লিঙ্গকে পিছিয়ে পড়া নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে পড়াশোনা ও সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ দিতে হবে৷ সাত বছর আগে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ তবু রূপান্তরকামীদের দুয়ারে দুয়ারে ঠোক্কর খাওয়ার ইতিহাসে ছেদ পড়েনি একটুও৷
হিজড়াদের নিয়ে রাওলিংয়ের মন্তব্য ‘মুক্তমতের মূল্য’: বিবিসি
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হ্যারি পটারের লেখিকা জে কে রাওলিং এখনো তোপের মুখে৷ তবে বিবিসি মনে করে রাসেল পুরস্কারের জন্য রাওলিংয়ের মনোনয়ন যুক্তিসঙ্গত৷
তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার: পরিসংখ্যান আর বাস্তব আলাদা
এপ্রিলে তৃতীয় লিঙ্গের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়ের পাঁচ বছর পূর্ণ হবে৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ পরিচয়ে দিয়ে ভোট দেন দেশের রূপান্তরকামীরা৷ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁদের সংখ্যা কতটা বাড়ল?
শুধু হিজড়া নয়, সবার জন্য কাজ করতে চান পিংকী
তৃতীয় লিঙ্গের প্রথম উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাদিয়া আখতার পিংকী মনে করেন হিজড়ারাও মানুষ৷ তাদের হেয় চোখে দেখার কিছু নেই৷ তিনি নিজে তাই সব মানুষের জন্য কাজ করতে চান৷ আর এলাকার মানুষ চাইলে আরো বড় দায়িত্ব নিতে চান ভবিষ্যতে৷
সমকামী-ট্রান্সজেন্ডারদের পাশে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট
এলজিবিটি কর্মীদের চাকরি থেকে তাড়ানো যাবে না। যুগান্তকারী রায় দিল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু বাস্তবে কি তা মানা হবে? প্রশ্ন তুলছেন আন্দোলনকারীরা।
সূত্র: https://www.dw.com/ নিউজ
‘‘আপনি ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ বলছেন, তাহলে প্রথম ও দ্বিতীয় লিঙ্গ কে?’’
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এর ঠিক দুদিন আগে থেকেই আলোচিত হচ্ছে তাসনুভা আনান শিশিরের নাম। দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে তিনি রূপান্তরিত নারী (ট্রান্সজেন্ডার) হিসেবে প্রথম সংবাদ পাঠ করবেন। শৈশবের কামাল হোসেন শিশির থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে তাসনুভা আনানে রূপান্তরিত করে তিনি নজিরবিহীন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এই সাহসী পথচলা এখন অনেকেরই অনুপ্রেরণা। কিন্তু তিনি কীভাবে অনুপ্রাণিত হলেন? সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কীভাবে বদলে গেল তার জীবনযাপন? জানতে তাসনুভা আনানের সঙ্গে কথা বলেছেন রাইজিংবিডির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রাহাত সাইফুল।
রাহাত সাইফুল: অভিনন্দন। আপনার নতুন আরেকটি পরিচয় হতে যাচ্ছে- সংবাদ পাঠিকা। কীভাবে এটি সম্ভব হলো?
তাসনুভা: আমি মূলত থিয়েটারকর্মী। থিয়েটার আমার অনুপ্রেরণা। ২০০৭ থেকে আমি থিয়েটারে কাজ করি। এখন কাজ করছি ‘বটতলা’য়। নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী দিদির মাধ্যমে বৈশাখী টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমরা একটি অনুষ্ঠান নিয়ে কথা বলছিলাম। সেখানে দিদির পরিচালনায় আমার পারফর্ম করার কথা ছিল। তো মিটিংয়ের জন্য বৈশাখী টেলিভিশনের অফিসে যাই। সেখান থেকেই অন্যদের সঙ্গে পরিচয়। তখন তারা আমাকে বলে সংবাদ পাঠিকার বিষয়ে। কিন্তু এটি সহজ ছিল না। আমি প্রথমে অডিশন দেই। এরপরই মূলত কাজটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাই।
রাহাত সাইফুল: রূপান্তরিত নারী হিসেবে অন্যরা আপনাকে দেখে এখন উৎসাহিত হবে। আপনার কী মনে হয়?
তাসনুভা: প্রত্যেক মানুষ আসলে আলাদা। আমি নিউজ পড়তে এসেছি বলে সবাই নিউজ পড়বেন এমন নয়। যার যে কাজ করতে ইচ্ছে হবে তিনি সেই কাজ করবেন। প্রত্যেকে তার যোগ্যতায় সমাজে জায়গা করে নেবে। জেন্ডার আইডেন্টিটি ব্যক্তির একান্ত পরিচয়। আপনি যখন আমাকে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ বলছেন তাহলে প্রথম ও দ্বিতীয় লিঙ্গ কে? আপনি যখন আমাকে ক্যাটাগোরাইজ করছেন তখন আপনি আমাকে আরেকবার হ্যারাজমেন্ট করছেন। অর্থাৎ আরেকবার কাপড় খোলার মতো অপমান করছেন। আমরা তো নারী পুরুষের বাইরে অন্য কিছু ভাবতেই পারছি না। ‘পুরুষের মতো’, ‘নারীর মতো’ এই যে শব্দের ব্যবহার- এটা ওই মানুষটির জন্য কতটা পজিটিভ বা নেগেটিভ কেউ কি কখনও ভেবেছেন? স্কুল, পরিবার ও ফ্রেন্ড সার্কেল খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গাগুলোতে সাপোর্ট পেলে সামনে চলতে সহজ হয় বলে আমি মনে করি।
তাসনুভা: আমার বাড়ি বাগেরহাট। আমার পরিবার আমাকে স্কুল পর্যন্ত দেখেছে। এরপর আস্তে আস্তে দূরে চলে যাই। একটা সময় নারায়ণগঞ্জ ছিলাম। আমার স্কুলে ভালো পজিটিভ কোনো স্মৃতি নেই। আমার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ও তেমনই। আমাকে ছুটতে হয়েছে প্রচণ্ড! নেগেটিভ, খারাপ পরিবেশ সঙ্গে নিয়েই আমাকে তৈরি হতে হয়েছে। সরকারি তোলারাম কলেজে সমাজকর্মে অনার্স, মাস্টার্স করেছি। এখন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক হেলথে পড়ছি।
রাহাত সাইফুল: আপনার নতুন জার্নি- বিষয়টি আপনার পরিবারের লোকজন এখন অবশ্যই জেনেছেন। তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন?
তাসনুভা: হয়তো তারা পজিটিভ। ভাইয়ার সঙ্গে, আপুদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা খুশি।
রাহাত সাইফুল: আপনার কথায় মনে হচ্ছে কোথাও এখনও অলক্ষ্যে অভিমান বা ঘাটতি রয়ে গেছে।
তাসনুভা: (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) আসলে কি, আমার জায়গাটা এত ফাঁকা, এত ব্যবধান- সত্যি কথা বলতে ওই অনুভূতিটা কেমন আমি জানি না। কিন্ত তারা পজিটিভ। প্রায় সাত-আট বছর বাড়িতে আমার যাওয়া হয় না। কথা হয় অবশ্য। এর মধ্যে মায়ের সঙ্গে জাস্ট দু’বার দেখা হয়ছে।
রাহাত সাইফুল: এখন যাবেন?
তাসনুভা: একটা পরিচয়ের অপেক্ষায় ছিলাম। আমাকে ‘হিজড়া’ বা ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ কোড, আনকোড আমি পছন্দ করি না। এই শব্দ নিয়ে আমি বাড়ি যেতে চাইনি। সারা জীবন একটা কথা শুনেছি। আমি তাদের বাড়ির মানসন্মান নষ্ট করেছি। আমার কারণে তাদের অপমানিত হতে হয়। তাদের মানসন্মান যাতে না যায় সে জন্য আমি বাড়ি যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছি। বাড়ি ফিরব কিনা সিদ্ধান্ত এখনও নেইনি। যদি ফিরি তাহলে অবশ্যই সেই সন্মান নিয়ে ফিরব।
রাহাত সাইফুল: জানি প্রচণ্ড ব্যস্ততায় এখন আপনার দিন কাটছে। আপনি এই সাফল্য উদযাপন করুন। আমার শেষ প্রশ্ন- আপনার কমিউনিটির জন্য কী বলতে চান?
তাসনুভা: আমার কমিউনিটির জন্য পরামর্শ হলো- যোগ্য হওয়াটা খুব জরুরি। নিজ নিজ জায়গায় যোগ্য হতে হবে। অন্তত চেষ্টাটা করতে হবে। পড়াশোনা করাটা আরো জরুরি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নবজাতকের জন্ম ঘিরে হিজড়াদের উপদ্রব বেড়েছে। কোনো বাড়িতে শিশু জন্ম হয়েছে খবর পেলেই হানা পড়ছে তাদের। দাবি করছে ইচ্ছামাফিক চাঁদা। না দিলেই তুলে নিয়ে যেতে চায় বাচ্চা। ঘটাচ্ছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা।
বুধবার এমন একটি ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন ঢাকার পূর্ব রামপুরার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক ওসমান গণি। সম্প্রতি তিনি দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হয়েছেন। আর এ খবর পেয়ে বাসায় আসে একদল হিজড়া। তারা এসেই চাঁদা দাবি করে ১০ হাজার টাকা। তবে করোনাকালে বেতন বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে পড়া ওই শিক্ষক তাদের অন্যায় আবদার রাখতে পারেননি।
ওসমান গণি যে বাড়িতে থাকেন সেই বাড়িতেই বাস করেন ফরহাদ হোসেন। ঘটনার বৃত্তান্ত ফেসবুকে তুলে ধরেছেন ফরহাদ। ঢাকাটাইমসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘গণির বাসায় এসেই হিজড়ারা তুলকালাম শুরু করে। দাবি করে দশ হাজার টাকা চাঁদা। দিতে না পারায় এক পর্যায়ে বাচ্চা নিয়ে যেতে উদ্যত হয় তারা। তবে সেটিও করতে না পেরে যাওয়ার আগে বাড়ির মূল ফটকে ভাংচুর চালায়।’
হিজড়াদের এমন তুলকালামের খবর থানা পুলিশকে জানান বাড়ির মালিক। পরে পুলিশের পরামর্শে সাধারণ ডোয়েরি করেন ভুক্তভোগী পরিবার। বুধবার সন্ধ্যায় সাধারণ ডায়েরিটি করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত আব্দুল কুদ্দুস ফকির।
বৃহস্পতিবার ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘জিডি হলেও আদালতের নির্দেশনা পেলে কাজ করতে হয়। আদালত থেকে নির্দেশনা এলেএ নিয়ে আমরা এ বিষয়ে কাজ করবো।’
ঢাকায় নবজাতকের জন্ম ঘিরে হিজড়াদের নাচ গান গেয়ে টাকা আদায়ের সংস্কৃতির চল ছিল। তবে সেসময় ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে হিজড়াদের দাবিও থাকতো সামান্য। তবে গত কয়েক বছর ধরে তারা বাড়িঘরে হানা দিয়ে চাঁদা আদায় আর তা না পেলে ভাংচুরসহ অপ্রীতিকর নানা ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ আসে।
হিজড়াদের এমন অপ্রীতিকর আচরণের শিকার হচ্ছেন নানা শ্রেনী পেশার মানুষ। চাঁদা না দিলে নানা হুমকিধামকি, গালিগালাজ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও বাজে আচরণের মুখোমুখি হতে হয়।
অনেকে লোকলজ্জায় নীরবে টাকা দিয়ে রেহাই পেলেও বেশিরভাগ ঘটনায় প্রকাশ্যে আসে না। কেউ আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শরণাপন্ন হলেও খুব বেশি প্রতিকার পান না বলেও অভিযোগ আছে।
যদিও সম্প্রতি পুলিশের পক্ষ থেকে এমন অন্যায় আচারণ বন্ধে হিজড়াদের প্রতি কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও করোনা মহামারির মধ্যে হিজড়াদের বেপরোয়া আচরণ বেড়ে চলেছে বলেই খবর আসছে।
গত ১৬ জুন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের একটি বাসায় নতুন বাচ্চা জন্মের খবর শুনে হানা দেয় একদল হিজড়া। তারা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নাচার কথা বললে করোনার কথা চিন্তা করে পরিবারটি বাচ্চা দেয়নি।
এরপরই শিশুটির মায়ের সঙ্গে অশালীণ আচরণ শুরু করে তারা। একপর্যায়ে ১১ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে ৫ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পায় ভুক্তভোগী পরিবারটি।
একইরকম তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ধানমন্ডির ঝিগাতলার বাসিন্দা নিখিল আহমেদ। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘প্রথম বাচ্চা হওয়ায় যখন সবাই আনন্দে ভাসছি, তখন তিন দল হিজড়ারা আমাদের বাসায় ঢুকে রীতিমত ডাকাতি করেছে। তিনবার তাদের চাঁদা দিতে হয়েছে। ফ্রিজের মাছ মাংস নিয়ে গেছে এক গ্রুপ।’
Read More: হ্যাল এলরড 10টি বানী হ্যাল এলরড 10টি বানী
কালিদাস গোপাল ভাঁড় খনার জনপ্রিয় বচন ধাঁধাঁ 1000 শালি দুলাভাই এর রসের ধাঁধা সমগ্র ডাউনলোড PDF
মজার তথ্য ✓ হাসির জোকস ✓ বাংলা হট জোকস ✓ বুদ্ধির ধাধার বই সমগ্র ডাউনলোড PDF
Most Popular Downloads:
Adobe Premiere Pro CC
TechSmith Camtasia Studio 8.6.0
TechSmith snagit
Download and Install Explaindio Video Creator For FREE 2021
ProShow Producer 9 Full with Crack
Download and Install Sparkol VideoScribe FREE
Download and Install Edius Pro For FREE
Top Popular Downloads:
Top Maltimedia Media Player Download
wondershare-filmorago-Free download
বাণী চিরন্তণী all Quotes 1000 TOP POPULAR DOWNLOADS.pdf
Tutorial html blog code all.pdf
Himu Ebong Harvard Ph.D. Boltu Bhai By Humayun Ahmed [2011] PDF Downloads
বিখ্যাত লেখক ও মণীষীদের নির্বাচিত ৩০০০ টি [বাংলাঃ ১২০০ English 1800 ] বানী বা উক্তি সমূহের বাংলা বই বা ই-বুক বা PDF [ কম্পিউটার + মোবাইল ভার্সন ]
বাণী চিরন্তণী all Quotes 1000 TOP POPULAR DOWNLOADS.pdf
পড়ুন
আরও পড়ুন: Stephen Hawking Biography
বন্ধুরা, এই পোস্টে আমরা আপনাকে পোস্টটি সম্পর্কে বলেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পছন্দ করবেন।
আপনার এই পোস্টটি কেমন লেগেছে, মন্তব্য করে আমাদের জানান এবং এই পোস্টে কোনও ত্রুটি থাকলেও আমরা অবশ্যই এটি সংশোধন করে আপডেট করব।
Biography, Famous Quotes ও উক্তি সমূহ লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। এই ধরনের লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি ফলো ।
ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।
Subscribe to the Daily News Times bd.com YouTube channel and follow the Facebook page.
উক্ত আর্টিকেলের উক্তি ও বাণীসমূগ বিভিন্ন ব্লগ, উইকিপিডিয়া এবং .. রচিত গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়তে পারেন: হিজড়াদের কি মাসিক হয় হিজড়া সন্তান কেন হয়?
আরও পড়ুন: সুচিত্রা সেন শৈশব, ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন | সুচিত্রা সেনের স্মৃতিঘেরা পাবনা
Read More: ভালবাসার কথা, ভালবাসার বানী আবেগি উক্তি |
তথ্যসূত্র: Wikipedia, Online
Sourc of : Wikipedia, Online Internet
ছবিঃ ইন্টারনেট
দৃষ্টি আকর্ষণ এই সাইটে সাধারণত আমরা নিজস্ব কোনো খবর তৈরী করি না.. আমরা বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবরগুলো সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি.. তাই কোনো খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ সবাইকে।
- ট্রান্সজেন্ডার, হিজড়া, নারী, তৃতীয় লিঙ্গ, বাংলাদেশ, প্রথম, তাসনুভা আনান শিশির, নুসরাত মৌ, বৈশাখী টেলিভিশন