Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
ঢাকা নিউমার্কেট বর্ণনা কোথায় অবস্থিত বিস্তারিত

ঢাকা নিউমার্কেট বর্ণনা কোথায় অবস্থিত বিস্তারিত | Dhaka New Market Description Where is it located?

নিউমার্কেট, ঢাকা আজিমপুর এবং ধানমন্ডি এলাকাসমূহে বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরের নতুন জনবসতির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ১৯৫২-৫৪ সালে নির্মিত একটি বিপণি কেন্দ্র। পর্যায়ক্রমে এটি ঢাকার বাইরের ক্রেতাদেরও আকর্ষণ করে। মার্কেটটি আজিমপুরে অবস্থিত, যার পূর্বদিকে রয়েছে মিরপুর রোড, উত্তরে ঢাকা কলেজ, পশ্চিম পার্শ্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং দক্ষিণে পিলখানা রোড। নিউমার্কেট, ঢাকা মার্কেটটির পাশেই খুচরা দোকানের একটি কেন্দ্র আছে। সেখানে কাপড়-চোপড়, ঔষধ, টয়লেট সামগ্রী ও গৃহস্থালি ব্যবহারের টুকি-টাকি দ্রব্যাদি বিক্রয় হয়। এছাড়া, বেশ কয়েকটি দোকানে বিক্রয় হয় প্রসাধনী সামগ্রী, স্যুভেনির ও শোপিস সামগ্রী, তৈজসপত্র, হালকা বৈদ্যুতিক দ্রব্য ও আসবাবপত্র। মার্কেটটির উত্তর দিকে মুদির দোকান এবং মাছ, মাংস, ফল-মূল ও সবজির বাজার রয়েছে। আজকের দিনে ‘নিউমার্কেট’ বলতে ভিতরে এবং বাইরে বৈচিত্র্যপূর্ণ দোকানের এক বিপুল সমাহারকে বোঝায়।

মূল মার্কেটে তিনটি উঁচু খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার রয়েছে, ভিতরে আছে বই-পত্র ও লেখা-লেখির সামগ্রী, ঘড়ি, চশমা, চামড়ার সামগ্রী ও ভ্রমণের উপকরণাদি, মুদি দ্রব্যাদি, কাপড়-চোপড়, অলঙ্কার ও বৈদ্যুতিক দ্রব্যাদি এবং দরজি, ফাস্টফুড ও ছবি তোলা ও প্রসেসিং-এর দোকান। দোকানগুলির সামনে একটা আচ্ছাদিত টানা বারান্দা রয়েছে। মার্কেটটিতে মোট ৪৬৮টি দোকান রয়েছে এবং বাজার করতে আসা ক্রেতারা এখানে তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রায় সব জিনিস-পত্রই পেয়ে থাকে। [এস.এম মাহফুজুর রহমান]

 

ঐতিহ্যের ধারক-বাহকঃ ঢাকা নিউ মার্কেট

কথায় আছে ঢাকার গৃহিণীরা চুলের ক্লিপ কিনতেও নিউমার্কেটে ছোটেন। আধুনিক নগর সভ্যতায় কেনাকাটার গুরুত্ব যেভাবে বেড়েছে সে হারে বেড়েছে মার্কেটের গুরুত্ব। একথা আজ নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, রাজধানীর কেনাকাটার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের প্রথম পছন্দই হচ্ছে নিউমার্কেট এবং তৎসংলগ্ন গাউছিয়া মার্কেট।যদিও এখন ঢাকা শহর মানেই মার্কেটের শহর। পাড়া মহল্লা সর্বত্রই এখন বিশাল বিশাল শপিং কম্পলেক্স।এমনতরো অজস্র শপিং কম্পলেক্স থাকা সত্যেও ঢাকা নিউ মার্কেটের আবেদন এতোটুকু কমেনি!

নিউমার্কেটের নানা দিকের ওপর আলোকপাত করার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ ১৯৫২ সালে ৩৫ একর জায়গা নিয়ে এ মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এর পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৫৪ সালে। বিকিকিনির জন্য নিউমার্কেটকে বলা যায় এ-ওয়ান। অবশ্য রাজধানীতে আয়েশী অবকাশ কাটাতে ঘুরে ঘুরে প্রশস্ত চত্বরে শপিং করার বেশ কিছু মার্কেট এবং এ সমস্ত শপিং মলে ক্রেতাসাধারণ আকর্ষণীয় সেবা পেলেও নিউমার্কেট তার আকর্ষণ ঠিকই বজায় রেখেছে। ত্রিকোণী কেন্দ্রভূমি নিউমার্কেটের সরকারী ভাবে বরাদ্ধ ৪৪০টি দোকানে আপনি এমন কিছু নেই যা পাবেন না। অভিজাত বেনারসী শাড়ি থেকে শুরু করে শাটিং-স্যুটিং, অলংকার, লেদার আইটেম, বই-পুস্তক, ফটো স্টুডিও, রেস্টুরেন্ট-সবকিছুই পাচ্ছেন কেন্দ্রে অবস্থিত পার্কের চারপাশে। ৫০ এবং ৬০ এর দশকে ঢাকার নিউমার্কেট শপিং এবং চমৎকার সময় কাটাবার সবচেয়ে সুন্দর জায়গা ছিল। ঢাকা রক্ষণশীল শহর হলেও উঠতি যুবকদের বান্ধবী নিয়ে ঘোরার জন্য নিউমার্কেট ছিল নিরাপদ স্থান। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা একে অপরকে কিছু গিফট করতে সান্ধ্য ভ্রমণটা নিউমার্কেটেই সেরে থাকে।

মুফাসসিল ইসলামের জীবনী | Biography of Mufassil Islam

আশির দশকে নিউমার্কেটের উত্তর মুখে গড়ে ওঠে ক্রোকারিজ সামগ্রীর জন্য নিউ সুপার মার্কেট, কিচেন সামগ্রীর জন্য বনলতা মার্কেট, বিবিধ জিনিসের জন্য চন্দ্রিমা মার্কেট এবং ডি ব্লকে গড়ে ওঠে গ্রোসারিজ মার্কেট। মসজিদের পাশে মনোরম পার্ক এবং নতুনভাবে বরাদ্ধ দেয়া ৬২টি দোকান দ্রব্যসামগ্রীর পসরা খুলে বসেছে।অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে এর অনেক পরিবর্তন-বিবর্তন এবং অন্তর্ভুক্তি ঘটলেও নিউমার্কেট সকলের কাছে এখনোর “নিউ”। সময়ের প্রয়োজন মেটাতে নিউমার্কেট তার পরিধি বাড়িয়েছে, সাথে সাথে প্রাচ্য সভ্যতা ও ঐতিহ্যের ধারক নিউমার্কেট মানুষের চাহিদার কথাও ভোলেনি। গ্রোসারি থেকে শুরু করে বই-পুস্তক, ম্যাগাজিন, জুয়েলারি, চশমা, লোকাল এবং ওয়েস্টার্ন ক্রোকারিজ এবং গৃহসজ্জার যাবতীয় সামগ্রী অর্থাৎ আপনার সম্ভাব্য সব প্রয়োজন মেটাতে নিউমার্কেট সদা প্রস্তুত। গৃহিণীরা অনেকেই জানে নিউমার্কেটের কোন দোকানে তার কাঙিক্ষত দ্রব্যটি মিলবে। ছাত্র থেকে শুরু করে পিতা-মাতারা তাদের প্রয়োজনীয় স্টেশনারী গুডসের সবটাই পেয়ে যায় নিউমার্কেটে।

প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ এবং সহনীয় দামের প্রশ্নেও নিউমার্কেট তার অবস্থান ধরে রেখেছে। আজকের নিউমার্কেট শহরের ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দু। তার তোরণ এবং টাওয়ার ধ্রুপদী ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। নিউমার্কেটের ছোট ছোট কর্নারেও মিলবে আপনার প্রত্যাশিত সামগ্রী। ঢাকাবাসীরা নিউমার্কেটের জন্য রীতিমত গর্ববোধ করে।

প্রাচ্য এবং পাশাত্যের লেটেস্ট ফ্যাশন যদি আপনি হাতের নাগালে পেতে চান তাহলে নিশ্চিতভাবে নিউমার্কেটে চলে আসতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের প্রচুর দেশে কোয়ালিটি পোশাক-পরিচ্ছদ সরবারাহ করছে আমাদের দেশীয় পোশাক শিল্প ফ্যাক্টরিগুলো। ঢাকা কলেজের বিপরীতে বা ওডিসিতেও এগুলো পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশের প্রচুর সংখ্যক মানুষ বিশেষ করে পুরুষেরা পশ্চিমা স্টাইলের পোশাকে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই ওডিসি ফেয়ার প্রাইজ এই অভিরুচি পূরণ করছে। নিউমার্কেটের বিশাল ছাদের নিচে রয়েছে বাহারি পোশাকের বিপুল সমাহার। টি-শার্ট, ট্রাউজার, গরম কাপড়ের তো কথাই নেই। সপ্তাহ শেষের ছুটির দিনে পিক আওয়ারে যিনি নিউমার্কেটে মার্কেটিং এর প্রথম অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন তিনি বুঝতে পারবেন নিউমার্কেটের বিপুল সম্ভারের আভিজাত্য। বিশেষ করে বিপুল সম্ভারের বড় বড় স্টোরগুলোতে যদি কেনাকাটা করতে যান তাহলে ভীড়ের চাপ, কটাক্ষ বা দুই এক বার মৃদ্যু কনুইয়ের গুঁতো আপনাকে কবুল করে নিতে হবে।

পোশাক সম্ভার বিভাজনে ওডিসির রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। এক্সপোর্ট কোয়ালিটি পোশাক তা যে রং বা যে ডিজাইনের চান না কেন, তা ওডিসিতে মিলবে। ছেলে এবং মেয়েদের জিন্স এবং টিশার্ট প্রাপ্তির মনোলোভা স্থান হচ্ছে ওডিসি। গ্যাবার্ডিন এবং ট্রাউজার প্রচুর বিক্রি হয় ওডিসিতে। ফিটিং প্যান্ট, শার্ট, থ্রি কোয়ার্টার তো আছেই। খাঁচ কাটা, স্পষ্ট দাগ এবং বিচিত্র প্যাটার্নের টি শার্টের জুড়ি নেই ওডিসির। ওডিসির দ্রব্য সম্ভারের মূল্য যথেষ্ট নমনীয়, অধিক উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা ছাড়াও ওডিসির সহনীয় মূল্য মধ্যম আয়ের ব্যক্তিদেরও এর ক্রেতা সাধারণের অন্তর্ভূক্ত করেছে। শীত মৌসুমে ছেলে-মেয়েদের আকর্ষণীয় আইটেম হচ্ছে ডেনিম, জ্যাকেট, সোয়েটার এবং হাতাওয়ালা টি-শার্ট। শরীরের নানা ডিজাইনের বাহারি রংয়ের পোশাকের আকর্ষণীয় প্রাপ্তিস্থানের নাম হচ্ছে ওডিসি। বিপুল সমাহার বড় কথা নয়, এর ফেয়ার প্রাইজই ওডিসি সাধারণ ক্রেতাদের টানছে। মোটামুটি মানসম্পন্ন একটা পোশাক ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় পেয়ে যাবেন।নিউমার্কেট শুধু শপিং’র জন্যই নয়, ঢাকার গর্বের সাথে নিজেকে অংশীদার করারও একটা সুযোগ।

Leave a Reply