তল্লাশি ও দলিলের নকল প্রাপ্তির নিয়মাবলী| যেকোনো প্রকার জমির দলিল খুজে পাওয়ার উপায়

রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮ এর ৫৭(১) ধারা মোতাবেক, প্রয়োজনীয় ফিস পূর্বে পরিশোধ সাপেক্ষে, যে কোন ব্যক্তি ১ নং (স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত দলিলের) ও ২ নং (রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করা দলিলের) রেজিস্টার বহি ও ১ নং রেজিস্টার বহি সম্পর্কিত সূচিবহি পরিদর্শন করতে পারে এবং উক্ত আইনের ৬২ ধারার বিধানাবলি সাপেক্ষে উক্ত বহিসমুহে লিপিবদ্ধ বিষয়ের নকল (অর্থাৎ দলিলের সার্টিফাইড কপি) গ্রহন করতে পারে।

একই আইনের ৫৭(২) ধারা মোতাবেক, প্রয়োজনীয় ফিস পূর্বে পরিশোধ সাপেক্ষে, দলিল সম্পাদনকারী বা তার এজেন্ট এবং সম্পাদনকারীর মৃত্যুর পর (পূর্বে নয়) যে কোন আবেদনকারী ৩ নং বহি (নিবন্ধিত উইলের রেজিস্টার বহি) তে লিপিবদ্ধ বিষয়ের (অর্থাৎ উইল বা অছিয়ত দলিলের নকল বা সার্টিফাইড কপি) এবং ৩ নং বহি সম্পর্কিত সূচিপত্রের নকল গ্রহন করতে পারে।

একই আইনের ৫৭(৩) ধারা মতে, প্রয়োজনীয় ফিস পূর্বে পরিশোধ সাপেক্ষে, দলিলের সম্পাদনকারী বা দাবীদার ব্যক্তি বা তার এজেন্ট অথবা প্রতিনিধি ৪ নং বহিতে লিপিবদ্ধ বিষয়ের নকল গ্রহন করতে পারে।

 

একই আইনের ৫৭(৪) ধারা মতে, ৩ নং ও ৪ নং বহিতে লিখিত বিষয়ের তল্লাশি, সাব-রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে করা যাবে।

কিভাবে তল্লাশ করবেনঃ

যদি মূল দলিল থাকে- রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের রেজিস্ট্রি কার্যক্রম শেষ হলে মূল দলিলের শেষ পৃষ্টার উল্টোদিকে “দলিলটি কত সালের, কত নম্বর বালাম বইয়ের, কত পৃষ্ঠা থেকে কত পৃষ্ঠায় নকল করা হয়েছে” তা লিখে সাব-রেজিস্ট্রার কর্তৃক স্বাক্ষর করা হয়। এটা থেকে সহজেই রেজিস্ট্রি অফিসে থেকে দলিলের নকল উঠানো যায়।

 

মূল দলিল না থাকলে- রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি শেষ হলে দলিলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য নিয়ে সূচিবহি তৈরি করা হয়। একটি সূচিবহি তৈরি হয় দলিলে উল্লিখিত জমির দাতা/বিক্রেতা, গ্রহিতা/ক্রেতা বা অন্য কোন পক্ষের নাম দিয়ে, আর একটি তৈরি হয় জমির মৌজার নাম দিয়ে।

 

দলিলের নকল প্রাপ্তির আবেদনের নিয়মাবলিঃ

 

রেজিস্ট্রেশন বিধিমালা ২০১৪ এর ১০৮ অনুচ্ছেদে সূচিবহি তল্লাশ ও দলিলের নকলের জন্য আবেদনের নিয়মাবলী লিপিবদ্ধ আছে। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যে সকল ক্ষেত্রে তল্লাশ ও পরিদর্শনের জন্য কোন ফিস পরিশোধযোগ্য নহে, সে সকল ক্ষেত্র ব্যতিত, সকল ক্ষেত্রে নকলের জন্য আবেদন দাখিল করিবার পূর্বে (৩৬ নং ফরম অনুযায়ী) তল্লাশ ও পরিদর্শনের জন্য আবেদন করিতে হইবে। এরপর ৩৭ নং ফরমে নকলের জন্য আবেদন করিতে হইবে।

জমি সংক্রান্ত যেকোনো ঝামেলা এড়াতে প্রয়োজন সেই জমির দলিল। যদি আপনার কাছে জমির দলিল এখন অব্দি নাহ থাকে তাহলে দেখে নিন কিভাবে তা বের করবেন।

আমাদের চারপাশে নজর দিলে যা প্রায়শই নজরে পরে সেটি হচ্ছে জমি নিয়ে বিরোধ৷ সেই সৃষ্টির শুরুর সময় থেকে চলমান নিজ জমি দখলে রাখা বা সীমানা নির্ধারণ নিয়ে গন্ডগোল৷ আর সমস্যা আরও বেশি বৃদ্ধি পায় তখনই যখন জমির দলিল না পাওয়া যায় বা কিভাবে জমির দলিল পেতে হয় সেটি না জানলে৷

 

বর্তমান সময়ে জমি সম্পর্কই মামলা, ভূমি অফিস সম্পর্কিত নানাবিধ অভিযোগ ও দেশকে ডিজিটালাইজ করার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে জমির দলিল প্রাপ্তির পুরাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ডিজিটাল পদ্ধতিতেও জমির দলিল পাবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে৷ আজকের এ আর্টিকেলে অতি প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে জমির দলিল বের করার নিয়ম বা যেকোন প্রকার জমির দলিল খুজে পাবার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে৷

জমির দলিল কি?

 

জমির দলিল হচ্ছে নির্দিষ্ট জায়গা সম্পর্কিত তথ্যের সমষ্টি৷ প্রতিটি জমির দাগ নম্বর থাকে৷ নির্দিষ্ট দাগ নম্বরে, মৌজায় একটি ভুখন্ডের বিষয়ে কর, খাজনা, ক্রয়-বিক্রয়, ওয়ারিশ হিসেবে হস্তান্তর ইত্যাদি বিষয় যে একটি কাগজে সরকারি স্ট্যাম্প সমেত ও সরকারি রেকর্ডে স্থান পাওয়া দলিলটি হচ্ছে জমির দলিল৷

 

তাই কেবলমাত্র জমি ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজটি দলিল নয় বরং জমি সম্পর্কিত অন্যান্য যে কোন কাগজপত্র দলিল হিসবে গণ্য৷

জমির দলিলের প্রয়োজনীয়তাঃ

 

জমির দলিলের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য! দলিলের মাধ্যমেই ব্যক্তির জমি সম্পর্কিত মালিকানা নির্ধারণ হয়৷ প্রকৃত মালিকের কাছে জমির দলিল থাকা আবশ্যকীয়৷ অন্যথায় প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্ত্বেও জমি বেদখল হয়ে যেতে পারে৷ কেননা, জমির দলিলে যার নাম থাকে, জমি তার বলেই গণ্য হয়৷

 

এজন্য পারিবারিক বন্টননামা করার পর তা রেজিষ্ট্রি করে যার যার জমির দলিল তার নিকট হস্তান্তর করতে হয়৷ এছাড়াও জমি ক্রয় করলে আসল জমির দলিল দেখে তা ক্রয় করতে হয়৷ কোন কারনে ক্রয়-বিক্রয়ের দলিল না পাওয়া গেলে সর্বশেষ খাজনা পরিশোধ ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করে নিতে হবে৷ নাহলে ভুয়া জমি ক্রয়ের শিকার হবার সম্ভাবনা থাকে ও জেল, জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়৷

জমির দলিলের প্রকারভেদঃ

 

পূর্বেই যেমনটা বলেছি, জমির দলিল কেবল ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজটি কেবল নয়৷ দলিল হিসেবে গণ্য হয় অন্যান্য ডকুমেন্টস ও৷ জমির দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয় এগুলোকেও:

 

খতিয়ান: আমরা অনেকেই হয়তো খতিয়ান শব্দটি শুনে থাকবো৷ খতিয়ান হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত জমির মালিকানা/দাগের বর্ণনাসহ প্রস্তুতকৃত নথিচিত্র৷ মূলত খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় জমির প্রকৃত মালিকদের নিকট থেকে সরকারি খাজনা আদায় করা নিমিত্তে৷ এই খতিয়ানকে আবার কয়েকভাগে ভাগ করা হয়৷ যার মাঝে রয়েছে,

 

(ক) সিএস খতিয়ান

(খ) এসএ খতিয়ান

(গ) আরএস খতিয়ান

(ঘ) বিএস খতিয়ান/সিটি জরিপ

(ঙ) পেটি খতিয়ান

 

মাঠ পর্চা: মাঠ পর্চা হচ্ছে সরকার প্রদত্ত জমির মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ান৷ জমি জরিপ করার সময় জমি মালিকদের তাদের জমি সম্পর্কিত তথ্য এতে দেওয়া থাকে৷ খতিয়ান প্রকাশের আগে একে খতিয়ানের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়৷ যদি মাঠ পর্চায় কোন ভুল থাকে তবে খতিয়ান প্রকাশের পূর্বেই তা সংশোধন করে নিতে হবে৷

বিক্রয় দলিল:

 

বিক্রয় দলিল হচ্ছে জমি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত দলিল৷ অর্থাত এতে খতিয়ানে উল্লেখিত দাগ নাম্বারের কোন জমি কার নিকট হতে ও কার কাছে বিক্রয় করা হল তা উল্লেখ করা থাকে৷ মূলত একেই সাধারণভাবে আমরা জমির মূল দলিল হিসেবে বিবেচনা করে থাকি৷

অনলাইনে খতিয়ান দলিল বের করার পদ্ধতিঃ

 

অনলাইনে খতিয়ান বের করতে চাইলে সর্বপ্রথমে https://www.eporcha.gov.bd/khatian-search-panel ব্রাউজারে লিখে গো দিতে হবে বা সার্চ করতে হবে৷

 

২. এখানে সর্বপ্রথম বিভাগ সিলেক্ট করতে হবে এরপর জেলা, অতপর উপজেলা এবং সর্বশেষে মৌজা বাছাই করে নিতে হবে। (তবে তার আগে আপনার জমির জরিপ ধরণ অনুযায়ী বিএস, সিএস, বিআরএস, আরএস, এসএ, পেটি, দিয়ারা; ইগুলোর ভিতর যেইটি হবে সেইটি সিলেক্ট করে নিন)

 

৩. এরপর আপনার জমির খতিয়ান যাচাই করার জন্য ৪টি অপশন পাবেন৷ যেগুলো হচ্ছেঃ

 

(ক) খতিয়ান নং অনুযায়ী

(খ) দাগ নং অনুযায়ী

(গ) মালিকানা নাম অনুযায়ী

(ঘ) পিতা/স্বামীর নাম অনুযায়ী

 

এই ৪টি অপশনের মধ্যে যে অপশনের তথ্য আপনার নিকট রয়েছে সেই অপশনের বাম পাশের গোল ঘরে মাউস দিয়ে ক্লিক করে ফেলুন।

 

গোল ঘরে সিলেক্ট করলে তার নিচেই আরেকটি বক্স দেখা যাবে। তার ঠিক নিচে একটি ছোট বক্স আসবে, বক্সটি অবশ্যই পূরণ করুন।

 

অর্থাৎ খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখুন, দাগ নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে দাগ নম্বরটি বক্সে লিখুন, মালিকের নাম সিলেক্ট করে থাকলে মালিকের নাম বক্সে লিখুন, মালিকের পিতা/স্বামীর নাম সিলেক্ট করে থাকলে পিতা/স্বামীর নাম বক্সে লিখুন।

 

৪. এরপর নিচে দুটি সংখ্যা যোগ করতে বলা হবে। সংখ্যা দুটি যোগ করে যোগফল নিচের বক্সে লিখুন।

 

৫. সর্বশেষ ‘খুজুন’ অপশনে ক্লিক করুন। আপনার অনুসন্ধানকৃত খতিয়ানটি মনিটরে দেখা যাবে।

 

আর এভাবেই আপনি আপনার অনুসন্ধানকৃত আর এস খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন।

 

ডাকযোগে খতিয়ান দলিল লাভের প্রক্রিয়াঃ

 

ডাকযোগে জমির খতিয়ান দলিল উত্তোলন করতে চাইলে সর্বপ্রথম গুগল প্লেস্টোর থেকে SoftBD Ltd এর eKhatian এ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে৷ অনলাইনে খতিয়ান দেখার পদ্ধতি অনুসরণ করে তথ্য পূরণ ও বক্স পূরণ করে নিতে হবে৷ সবকিছু ঠিকভাবে দেওয়া হলে জমির মালিক বা দখলদার দেখানো হবে৷ তার নিচে “আবেদন করুন” অপশনে ক্লিক করুন ডাকযোগে খতিয়ান পেতে চাইলে৷

 

আবেদনকরুন এ চাপ দিলে আবেদন ফর্মের পাতাটি আসবে৷ সেখানে “ডাকযোগে” অপশনটি সিলেক্ট করে নিন৷ ডাকযোগে সাধারণত ৭ দিন সময় লাগে খতিয়ান আসতে৷ জরূরী প্রয়োজন হলে জরুরী অপশন বেছে নিন৷ এতে ৩ দিনে খতিয়ান পেয়ে যাবেন৷

 

খতিয়ান সিলেক্ট করার পর পরবর্তীতে অনলাইনে বিকাশের মাধ্যমে ৩৫ টাকা প্রদান করে খতিয়ান প্রাপ্তির আবেদন পূর্ণ করুন৷ ব্যস, নির্দিষ্ট সময় পর আপনি খতিয়ান পেয়ে যাবেন৷

জমির দলিলের নকল লাভের পদ্ধতি khatian download from

 

জমির দলিলের নকল তুলতে হলে যেতে হবে রেজিষ্ট্রি অফিসে৷ রেজিষ্ট্রি অফিসে যেয়ে আসল দলিলের সহায়তায় জমিটি কত সালে, কত নম্বর কলাম বইয়ের কত পৃষ্ঠায় নকল করা হয়েছে, সে সকল তথ্য প্রদান করে জমির নকল লাভের জন্য আবেদন করতে হবে৷ আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে পরবর্তীতে আপনি জমির নকল দলিল উত্তোলন করতে পারবেন৷

দলিল নিবন্ধন আইন ১৯০৮ সনের ৫৭(১) ধারা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ফিস পরিশোধ পূর্বক, যে কোন ব্যক্তি অর্থাৎ স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত দলিলের এবং রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করা দলিলের রেজিস্ট্রার বহি ও ১ নং রেজিস্ট্রার বহি সম্পর্কিত সূচি বহি পরিদর্শন করতে পারে এবং উক্ত আইনের ৬২ ধারার বিধানা মতে উক্ত বহি সমূহে লিপিবদ্ধ বিষয়ের নকল গ্রহন করতে পারে।

এবং ৫৭(২) ধারা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ফিস পরিশোধ পূর্বক দলিল দাতা বা তার এজেন্ট এবং দাতার মৃত্যুর পর যে কোন আবেদনকারী ৩ নং বহি (নিবন্ধিত উইলের রেজিস্টার বহি) তে লিপিবদ্ধ বিষয়ের এবং ৩ নং বহি সম্পর্কিত সূচিপত্রের নকল গ্রহন করতে পারে।

এবং ওই আইনত ৫৭(৩) ধারা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ফিস পরিশোধ পূর্বক দলিলের সম্পাদনকারী বা গ্রহীতা ব্যক্তি বা তার প্রতিনিধি ৪ নং বহিতে লিপিবদ্ধ বিষয়ের নকল গ্রহন করতে পারে।

একই আইনত ৫৭(৪) ধারা মতে, ৩ নং ও ৪ নং বহিতে লিখিত বিষয়ের তল্লাশি, সাব-রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে করা যাবে।

 তল্লাশের আবেদনঃ

দলিল নিবন্ধন আইন ২০১৪ এর ১০৮ অনুচ্ছেদে তল্লাশ ও নকলের আবেদনের নিয়মাবলী লিপিবদ্ধ আছে।

এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যে সকল ক্ষেত্রে তল্লাশ ও পরিদর্শনের জন্য কোন ফিস পরিশোধ যোগ্য নহে, সে সকল ক্ষেত্র ব্যতিত, সকল ক্ষেত্রে নকলের জন্য আবেদন দাখিল করিবার পূর্বে (৩৬ নং ফরম অনুযায়ী) তল্লাশ ও পরিদর্শনের জন্য আবেদন করিতে হইবে। এরপর ৩৭ নং ফরমে নকলের জন্য আবেদন করিতে হইবে।

জমির খতিয়ান থেকে অংশ বের করার নিয়ম

কিভাবে তল্লাশ করবেন ও নকল তুলবেন?

যদি মূল দলিল থাকে, তবে রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের রেজিস্ট্রি পূর্নাঙ্গ কাজ শেষ হলে মূল দলিল খানার শেষ পৃষ্ঠার অপর পার্শ্বে লেখা থাকবে দলিলটি কত সালের নিবন্ধিত, কত নাম্বার বালাম বহিতে, কত পৃষ্ঠা হইতে কত পৃষ্ঠায় নকল করা হইয়াছে, এবং তা সাব-রেজিস্ট্রার দ্বারা স্বাক্ষর করা হয়ে থাকে আছে এভাবে সহজেই সাব- রেজিস্ট্রি অফিসে থেকে দলিলের নকল উঠানো যায়।

আর যদি মূল দলিল না থাকে, রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি শেষ হলে দলিলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য নিয়ে সূচি বহি তৈরি করা হয়। একটি সূচি বহি তৈরি হয় দলিলে উল্লিখিত জমির দাতা/বিক্রেতা, গ্রহিতা/ক্রেতা বা অন্য কোন পক্ষের নাম দিয়ে, আর একটি তৈরি হয় জমির মৌজার নাম, খতিয়ান ও দাগ নম্বর দিয়ে।

আপনি চাইলে জমির ক্রেতা/গ্রহিতা, বিক্রেতা/ দাতার নাম এবং জমির মৌজা উল্লেখ্য করে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত নকলনবীশদের নিকট তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফিস পরিশোধ সাপেক্ষে দলিলের নকল কপি সংগ্রহ করতে পারবেন ৷

নকলের ফি ঃ

স্ট্যাম্প শুল্ক বৃদ্ধি ০১ জুলাই ২০২২ ইং

স্ট্যাম্প ফি ২০০/- টাকা

জি (এ) ফি– ১। বাংলা প্রতি ৩০০ শব্দের প্রতি পৃষ্ঠার জন্য ১৬ টাকা

২। ইংরেজি ভাষার প্রতি ৩০০ শব্দের প্রতি পৃষ্ঠার জন্য ২৪ টাকা

জি জি ফি– ১। বাংলা প্রতি ৩০০ শব্দের প্রতি এক পৃষ্ঠার জন্য ২৪ টাকা

২। ইংরেজি ভাষার প্রতি ৩০০ শব্দের প্রতি এক পৃষ্ঠার জন্য ৩৬ টাকা

দ্রষ্টব্যঃ- (ক) কোনো নকল আবেদনকারী যদি জরুরী কোনো নকল উত্তোলন করতে চান তবে অতিরিক্ত ৫০/- টাকা দিতে হবে এবং প্রতি পৃষ্ঠার জন্য ১৫/- টাকা হারে অতিরিক্ত ফি  করতে হবে

(খ) কোনো নকল প্রার্থী যদি রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মূদ্রিত বা টাইপকৃত নকল যাহা “অবিকল নকল” হিসাবে দাখিল করেন তাহলে এমন মূদ্রিত নকলের তুলনা করার জন্য ফিস ও পারিশ্রমিক জি ও জি জি অনুসারে ধার্য যোগ্য ফি ও পারিশ্রমিক এর অর্ধেক হইবে । [ যাহা নিবন্ধন ম্যানুয়াল ২০১৪ ইং পৃষ্ঠা নং ২০৩]

(গ) সকল নকলের আবেদন কোর্ট ফি আইন ১৮৭০ অনুসারে ২০ টাকা কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হবে [নিবন্ধন ম্যানুয়াল ২০১৪, পৃষ্ঠা নং ২৩০]

এসব বিষয়ে যদি কোনো অভিজ্ঞতা না থাকে তবে সাব- রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবীশ এর সাথে যোগাযোগ করে আপনি জমির দাতা/বিক্রেতা, গ্রহিতা/ক্রেতা বা অন্য কোন পক্ষের নাম দিয়ে অথবা জমির মৌজার নাম, খতিয়ান ও দাগ নম্বর দিয়ে তল্লাশির মাধ্যমে খুব সহজে নকল তুলতে পারবেন ।

ঘরে বসেই পাওয়া যাবে জমির দলিলের নকল

পর্চা, খতিয়ান বা ম্যাপের মতো ভূমি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিলাদি (সার্টিফায়েড ডকুমেন্ট) সেবাগ্রহীতাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ডাক বিভাগের মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস ও ডাক বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

ভূমি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই সমঝোতার আওতায় ভূমি অফিস থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে নাগরিকদের ঠিকানায় ডাকযোগে পৌঁছে দেবে ডাক বিভাগ।

প্রতিটি ডাকঘরের নিযুক্ত ব্যক্তি প্রতিদিন ভূমি অফিস থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে নাগরিকদের ঠিকানা বরাবর ডাকে পাঠাবে।

এ সেবার জন্য অনলাইনে আবেদনের সময়েই সেবাগ্রহীতা অনুরোধ জানাবেন এবং খাম, প্রস্তুতি ও ডাক মাশুল বাবদ অতিরিক্ত সেবামূল্য পরিশোধ করবেন।

বিভিন্ন প্রয়োজনে বাংলাদেশের নাগরিকরা ভূমি সংক্রান্ত সব আবেদন ও তার ভিত্তিতে ডকুমেন্ট এবং ম্যাপ সংগ্রহ করে থাকেন। এতদিন পর্যন্ত সেবাগ্রহীতাকে ভূমি অফিসে একাধিকবার যেতে হতো। ডিজিটাল ভূমি সেবার আওতায় সেবাগ্রহীতাদের জন্য অনলাইন তথা ওয়েব, অ‌্যাপ বা কল সেন্টারের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ সৃষ্টি করা হলেও প্রাপ্য পর্চা, খতিয়ান বা ম্যাপ সংগ্রহের জন্য ভূমি অফিসে যাওয়ার কোনো বিকল্প ছিল না। এখন এসব সংগ্রহের জন্য আর ভূমি অফিসে যেতে হবে না।

 

সর্বশেষঃ

 

অনলাইনে জমির দলিল বের করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ ও সাশ্রয়ী৷ ঝামেলাহীন এ পদ্ধতিতে জমির দলিল বের করা যায় যাতে একজনের শক্তি, সময় উভয়ই সাশ্রয় হয়৷ তথাপি জমির মালিকানা নিয়ে যে কোন ঝামেলা, আপত্তি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভবপর হয়ে থাকে৷

Leave a Reply