দুই বোনের এক দেহ পিন-প্যান

জমজ দুইবোন। দৈনন্দিন জীবনে আটদশজন মানুষের মতো খুব সাধারাণভাবেই চলছে তাদের জীবন। নিজেদের মধ্যে শেয়ার করছে মনের জানা-অজানার নানান খবর। আবার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকেও শেয়ার করে। এদের বলা হয় কনজয়েন্ড বেবি বা জোড়া জমজ। শারীরিক অবস্থা বুঝে কনজয়েন্ড বেবি আলাদা করা যায় তবে পিন-প্যানের কথা ভিন্ন। তারা আজীবন কনজয়েন্ড অবস্থায়ই থাকতে চায়।

পিন আর প্যান জোড়া জমজ দুই বোন। সাত বছর বয়সী এ জমজের কোমর একসঙ্গে জোড়া লাগানো। মাথা ও হাত আলাদা আলাদা তবে দু’জনের নির্ভরতা ‌একজোড়া পায়ের ওপর। একজোড়া পা দু’বোনের ভারসাম্য রক্ষায় যথেষ্ট নয় বলে পায়ের সঙ্গে পিন-প্যান তাদের হাতের ওপরও ভর দিলে চলাফেরা করে।

পিন-প্যান

পিন একটি পা ও প্যান বাকি আরেকটি পা নিয়ন্ত্রণ করে। এই জোড়া জমজ একক ব্যক্তি হিসেবে একসঙ্গে খাওয়া, হাঁটা, জামাকামড় পরা ও ট্রিসাইকেলে চড়া শিখেছে। যেনো দুটি দেহ একটি স্বত্ত্বা।

ডাক্তার এই জোড়া জমজকে আলাদা করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেও তাদের বন্ধুত্ব এতই ভালো যে আজীবন জোড়া অবস্থাতেই থাকতে চায় তারা।

কনজয়েন্ট টুইন বেবির জন্ম বিরল ঘটনা। প্রতি ২.৫ মিলিয়ন শিশুর মধ্যে একজনের এই ঘটনা ঘটে।

পিন-প্যান তাদের দাদা-দাদীর সঙ্গে ব্যংককের প্রায় ২৫০ কিলোমিটার উত্তরে থাকে। তারা জানান, সাধারণ হাসিখুশি শিশুদের মতোই চলাফেরা করছে তারা।

তাদের দাদী নোকনোই পংচুমনান বলেন, তারা গান গাইতে ভালোবাসে, আইসক্রিম খেতে ভালোবাসে, আর একে অপরকে পোশাক পরিধানে সাহায্য করে।

এমনিতে পিন-প্যান চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে চলাফেরা করে। দূরত্বে যেতে ব্যবহার করে ট্রিসাইকেল আর স্কুলে একজন শিক্ষক তাদের হুইল চেয়ারে করে এক ভবন থেকে অন্য ভবনে নিয়ে যায়। স্কুলে তারা স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলা ও ক্লাস পারফরমেন্সে অংশ নেয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনান জাপান পিন-প্যানের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, পড়াশোনা তাদের ভবিষ্যতে স্বাধীন জীবন-যাপন করতে আরও দক্ষ করে তুলবে। কারণ তাদের মধ্যে সম্ভাবতা ও ক্ষমতা উভয়ই উপস্থিত।

বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দাদী নোকনোই বলেন, আমি আশা করিনি আমার নাতনীরা কনজয়েন্ট বেবি হবে। ভালো হতো যদি তাদের আলাদা করা যেতো। তবে মনে হয় না এটা সম্ভব কারণ তারা এভাবেই সুখে রয়েছে।

 

 

 

Leave a Reply