দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত প্রবন্ধের বিষয় ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় নিকট আমার জিজ্ঞাস্য

১ আগস্ট দৈনিক শিক্ষা অনলাইন পত্রিকায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জনাব কামরুন্নাহার মূকুল এর ফোনালাপ নিয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ জনাব জানাব আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার স্যার লেখা প্রকাশিত প্রবন্ধের বিষয় আমার কিছু প্রশ্ন? ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ জনাব আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার স্যার এর কাছে বিনয়ের সাথে জানতে চাই এখানে বেসরকারি ভালো প্রতিষ্ঠানটি দেখে আপনারা কেন লোভ সামলাতে পারলেন না?আপনারা এটাকে অনিয়ম মুক্ত করার দায়িত্ব নিয়ে আসলেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এটার অনিয়ম বন্ধ করতে পারবেনা, তাই আসলেন।

খুব ভালো আপনাদের যোগ্যতা যাচাই হল।স্যার আপনারা তো যোগ্য শিক্ষক তবে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর ১০০% অকৃতকার্য হয়ে এম. পি. ও হারাচ্ছে তার একটা শিক্ষা প্রতিষ্টানের দায়িত্ব নিয়েছেন কী কেউ ? এমন কোন নজির কিন্তু নেই। আপনাকে ঢাকা কলেজ বাদ দিয়ে অন্য একটি মফস্বল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পোষ্টিং দিলে যাবেন কী?কথা বলা যায়, চোখের সামনে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য নিরসনের বিষয় আপনাদের টুশব্দটি করতে শোনা যায় না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিন শিক্ষা অধিদপ্তর, বোর্ড,ডি আই, এ, এবং এন টি আর সি এ,পরিচালনা করার দায়িত্ব আপনারা পালন করেন।জনবল কাঠামো ও এম. পি. ও নীতিমালা আপনারা প্রনয়ণ করেন। এমন ভাবে তৈরি করেন যাতে গাছেরটা খাওয়া যায় এবং তলারটাও কুড়ানো যায়। আপনাদের ম্যানেজিং কমিটির জ্বালা পোহাতে হয়না।সম্প্রতি একজন শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আমরা কয়েকজন প্রধান শিক্ষক গিয়েছিলাম।আমরা কমিটির সমস্যার কথা বলায় তিনি আমাদের স্পষ্ট বলে দিলেন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবেন এলাকার সাথে সমন্নয় করে।

এবারে আপনারা বুঝতে পারছেন ম্যানেজ করা যে কত কঠিন?আমরা ম্যানেজিং কমিটি সমস্যা, রাজনৈতিক চাপ সব সয্য করে স্কুল পরিচালনা করি।আপনারা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। আমরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগন এ সকল নির্যাতনের কথা বুঝি।সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোন ম্যানেজিং কমিটি নেই তাই আপনারা চাপও বুঝেন না।অনেক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান মনেকরে আপনারা আমাদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অযোগ্য মনেকরে দেশের শ্রেষ্ঠ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রেষণে চলে এলেন অধ্যক্ষ্যের দায়িত্ব নিয়ে।

এখানে কিন্তু এর আগেও আপনাদেরএকজন আসছিলেন। তাকে দূর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিদায় হতে হয়েছে। এর পরে যিনি এলেন তিনি কী ভাষা ব্যবহার করলেন? এর আগে কোন দিন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে এমন ভাষা ব্যবহার করতে শুনি নি।আমরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা প্রতিনিয়ত এরূপ সমস্যার সম্মুখীন হই। কোন দিন আমরা এরূপ ভাষা ব্যবহার করি নাই। আমরা ম্যানেজিং কমিটির সত্য মিথ্যা অভিযোগের দায় মাথায় নিয়ে সাময়িক বরখাস্ত হই।তারা নামকাওয়াস্তে তদন্ত করে চুড়ান্ত বরখস্থের জন্য বোর্ডে পাঠায়।সেখানে বিচারক হিসেবে শিক্ষা ক্যাডারের লোকজন থাকে।

আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সুবিচার পাইনি। যে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে নিয়ে আমরা তোলপাড় করছি তার ঠিক উল্টো দিকের স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ঢাকা বোর্ড কর্তৃক চুড়ান্ত বরখাস্ত হয়েছেন। তিনি বোর্ডের কাছে সুবিচার না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আপনি আর একটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের সরকার বেতন দেয় তার পরেও তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশি বেতন কেন আদায় করবে? অত্যন্ত সুন্দর কথা বলেছেন। ঢাকা মহানগরের দুই /তিনটি বিদ্যালয় দিয়ে বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা

প্রতিষ্ঠান বিচার করলে হবে না। আপনারা আমাদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য নিরসনের জন্য কোন দিন একটা কথা বলেছেন? বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কর্মচারী সরকারি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশ মিলিয়ে যে বেতন পায় তার চেয়ে সরাসরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী অনেক বেশি বেতন পায়। এখানের বৈষম্য আপনাদের চোখে পরে না।চোখ যায় শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের দিকে।

হ্যাঁ এটা ঠিক সরকারি স্কুল ও কলেজ থেকে বেসরকারি স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের বেতন বেশি দিতে হয়।এই বৈষম্য নিরসনের কথাও আমরা বলি। এ বৈষম্য নিরসনের জন্য সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় করন করতে হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় করন করে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন সমান করুন। সকল শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন সমান করা হউক। এ দাবি নিয়ে আমারা বছরের পর বছর আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছি।

আপনারা কোন দিন এ বিষয় কোন কথা বলেছেন? আপনারা সবই জানেন এবং বুঝেন কিন্তু করেন না।আপনারা ১০০% উৎসব ভাতা পাচ্ছেন আর আমরা বেসরকারি শিক্ষকবৃন্দ পাচ্ছি ২৫% উৎসব ভাতা। এই উৎসব ভাতার বিল আবার আপনারাই তৈরি করেন। নিজের উৎসব ভাতা বিল করেন ১০০% আর আমাদের জন্য করেন উৎসব ভাতা ২৫%। সেই সময় আপনাদের বিবেক কোথায় থাকে?আপনারা সরকারি স্কুল কলেজে যে সিলেবাস ও পাঠ্যবই পড়ান আমরাও সেই সিলেবাস ও পাঠ্যবই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াই। একই ধরনের প্রশ্নপত্রে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়।

আপনাদের চেয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা খারাপ ফলাফল করে না।তাহলে আমরা কেন বেতন কম পাব? এবার আপনার আরেকটি বিষয় নিয়ে একটু আলোচনা করতে চাই – আপনি বলেছেন আমরা শিক্ষকবৃন্দ শুধু শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করাব।আমরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক বা প্রভাষকবৃন্দ বাঁচা তাগিদে শ্রেনি কক্ষের বাহিরে বড় জোর ২/৩ টিউশনি করাতে যাই।এ ছড়া আমাদের অন্য কোন উপায়ে উপার্জনের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু সরকারি স্কুল কলেজে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে থাকার ইচ্ছে খুবই কম।যাদের যাওয়ার সুযোগ নেই তারাই শ্রেণি কক্ষে থাকে।

বেশির ভাগই প্রশাসনিক পদ দক্ষলের চাঞ্চে থাকে। স্যার আর কথা বাড়াতে চাইনা আসুন সবাই মিলে বৈষম্য নিরসনের দাবি তুলি।শিক্ষা জাতীয় করন চাই। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়েরযে ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে তা যদি তার না হয় তবে তাকে ফাঁসানোর যে বা যারা এটা করেছে আমরা তার বিচার চাই। আর এ বক্তব্য অধ্যক্ষ মহোদয়ের হলে, আমারা তার বক্তব্য সমর্থন করতে পারিনা।এটা কোন প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না।

দুলাল চন্দ্র চৌধুরী

সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ।

ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।

Leave a Reply