পৃথিবীর কেন্দ্রে কি পৌঁছানো সম্ভব?

পৃথিবীর কেন্দ্রে কি আছে? বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন সেখানে রয়েছে অতি উচ্চ তাপমাত্রা, অত্যন্ত বেশি চাপ এবং প্রচলিত যন্ত্রপাতির পক্ষেও ওই দূরত্বে যাওয়া সম্ভব নয়। লোহা, সিসা, নিকেল, পারদ ইত্যাদি কঠিন ও ভারী ভারী পদার্থ দিয়ে তৈরি পৃথিবীর কেন্দ্র। কিন্তু পৃথিবীর প্রচণ্ড চাপে সেসব পদার্থ গলিত অবস্থায় আছে। এমন কোনও বস্তু বা পদার্থ নেই যেটি পৃথিবীর কেন্দ্রে টিকতে পারে! তারপরও পৃথিবীর কেন্দ্রে পৌঁছাতে বিজ্ঞানীরা চালিয়েছেন চেষ্টা। আর তাতেই সৃষ্টি হয়েছে গভীর কিছু মানবসৃষ্ট গর্ত।

 

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সর্বপ্রথম পৃথিবীর কেন্দ্রে পৌঁছাতে একটি খননকাজ চালায়। এই খননকাজটি করা হয়েছিল বর্তমান রাশিয়ার পেচেংস্কি জেলার কোলা উপদ্বীপে।প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছিল ‘কোলা সুপারডিপ বোরহোল’। খননকাজ প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল কৃত্রিমভাবে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে যতদূর সম্ভব হয় খনন করা। ১৯৭০ সালের ২৪ মে প্রথমে ড্রিলিং রিগ ব্যবহার করে খনন কাজটি শুরু করা হয়েছিল। গভীরতম এই প্রকল্পটি ১৯৮৯ সালে ১২,২৬২ মিটার বা ৪০,২৩০ ফুট গভীরতায় পৌঁছায় এবং এখনও পর্যন্ত এটিই পৃথিবীতে মানুষের তৈরি সবচেয়ে গভীর কৃত্রিম পয়েন্ট।

 

আরও পড়ুন:৩৮০ কোটি বছরের বৃহত্তম কালো হীরা

 

কিন্তু পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে যত আগানো হচ্ছিল ততই বাড়তে থাকলো তাপমাত্রা। যার ফলে ১২,২৬২ মিটারের গভীরে খনন করা সম্ভব হয়নি। কারণ ১৫,০০০ মিটার বা ৪৯,০০০ ফুট পর্যন্ত খনন করতে প্রায় ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মোকাবিলা করতে হতো যেখানে ড্রিলিং বিট অচল হয়ে যেত। অবশেষে ১৯৯২ সালে খনন কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।

 

আরও পড়ুন:স্মার্টফোনে স্টোরেজ খালি কীভাবে করবেন? ফোন স্লো হয়ে গেলে এই উপায়ে ফাস্ট করুন

 

২০০৮ সাল পর্যন্ত গভীরতার পরিমাপে এবং বোরের বিচারে এটিই ছিল মানুষের তৈরি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বোরহোল, কিন্তু ২০০৮ সালে কাতারের আল শাহীন তেল খনির গভীরতা পরিমাপ করা হয় ১২,২৮৯ মিটার দৈর্ঘ্য এবং পরবর্তীতে এর তিন বছর পর রাশিয়াতেই আরেকটি গর্ত খনন করা হয়। এর দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয় ১২,৩৪৫ মিটার।

 

তারপরও থেমে নেই বিজ্ঞানীরা। একের পর একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছেন চেষ্টা এবং গবেষণা। হয়তো একদিন উন্মোচন হবে পৃথিবীর কেন্দ্রে কি আছে তার রহস্য।

Leave a Reply