রায়পুরে মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকার, অভিযুক্তরা পলাতক

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলাধীন মিতালী বাজারে আল মাদানী মডেল মাদ্রাসায় দশ বছর বয়সী এক ছেলে আড়াই বছর ধরে হেফজ বিভাগে লেখাপড়া করছেন। এখনো সে শৈশবই পার করতে পারেনি। সমাজের অন্য আট দশটি শিশুর মতো এই শিশুটির শৈশবও হেঁসে খেলে কাটানোর কথা। তবে শিশুটি সেই সুযোগ পায়নি। মাদ্রাসায় লেখাপড়াকালীন সময়ে আট থেকে ৯ মাস তাকে একাধিক ব্যক্তির হাতে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। তাও আবার অভিযুক্ত তিন ব্যক্তি তারই মাদ্রাসা শিক্ষক। ভুক্তভোগীর ধর্ষণের ঘটনাটি প্রকাশ পায় চলতি বছরের এপ্রিলের দিকে। সে সময় বিষয়টি এতো বৃহৎ পরিসরে রূপ পায়নি।

কেননা সে সময় ভুক্তভোগীর শারীরিক অবস্থা বর্তমানের মতো এতটা নাজুক ছিল না। অভিযুক্তরা হলেন, মাদানী মডেল মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক রাহাত (২৪), আবু হুরায়রা (২৩) ও আমিরুন ইসলাম (৩৫)। রাহাতের বাড়ি কিশোরগঞ্জ, আবু হুরায়রার বাড়ি সিলেট এবং আমিরুনের বাড়ি ভোলা জেলায়। ভুক্তভোগী ও তার পরিবার জানায়, হেফজ বিভাগে লেখাপড়ার কারণে ভুক্তভোগী প্রথম থেকেই মাদ্রাসায় আবাসিকভাবে অবস্থান করে আসছে।

Brandi Carlyle is having an tremendous year—and retaining it shifting

গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আবাসিকের সকল ছাত্র ঘুমিয়ে পড়লে ভুক্তভোগীকে শিক্ষকদের কক্ষে ডেকে নিয়ে যেতেন অভিযুক্তরা। সেখানে তারা ভুক্তভোগীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতেন এবং বলাৎকার করতেন। ওই মাদ্রাসায় অবস্থান করার বেশ খানিকটা সময় তিনি শারীরিকভাবে নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন।

আরও জানা গেছে, একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ভুক্তভোগী একদিন টয়লেটে প্রায় ২ ঘণ্টা দরজা বন্ধ করে বসে থাকেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মুফতি ইসমাইল হোসেনকে (৩৫) অভিযুক্ত শিক্ষকদের কর্মকাণ্ডের বিষয়টি অবহিত করেন। পরে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল তাৎক্ষণিকভাবে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতিসহ সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে অভিযুক্তদের জুতাপেটা করে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন।

তবে, সে সময় বিষয়টি ভুক্তভোগীর পরিবারের কাউকে জানানো হয়নি। ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের মুখোমুখি হন সময়ের আলো প্রতিবেদক। প্রিন্সিপাল আমাদের প্রতিবেদককে জানান, চাকুরিতে যোগদানের সময় নিয়ম অনুযায়ী তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেও পরবর্তীতে তারা কৌশলে মাদ্রাসার দাফতরিক কাগজপত্র রাখার ড্রয়ের থেকে নিজেদের কাগজ সরিয়ে নেন।

তাই তাদের ঠিকানা সম্বন্ধে তেমন কোন তথ্য মাদ্রাসার কাছে নেই। তাদের বর্তমান অবস্থানও তিনি জানেন না। বিষয়টি নিয়ে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অঞ্জন দাশকে অবহিত করা হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মাদ্রাসায় পুলিশ প্রেরণ করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন।

এ বিষয়ে রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, ইউএনওয়ের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আবির এ ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ভাই-বোন বিয়ে করে ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট, জেলে পাঠানোর দাবি তুলে সরব নিন্দকেরা

অভিযোগ পেলে আইনিভাবে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে। তবে ঘটনাটি আট মাস আগের হওয়ায় অভিযুক্তদের খুঁজে বের করতে তদন্ত করতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ জানায়, শুভ বর্তমানে শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তাই, তাঁকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ায় থানায় অভিযোগে একটু সময় লাগছে।

Leave a Reply