সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহ প্রধান ও প্রধানদের একই গ্রেডে বেতন চাই।

বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়ন অনিস্বীকার্য।স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পরে আমরা এই সরকারের মাধ্যমেই সর্বজন গ্রহণযোগ্য জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ পেয়েছি। শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়ন বলতে আমরা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এবং বেসরকারি শিক্ষকদের উন্নয়ন বুঝি।কারণ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯৭% বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাত্র ৩% সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন তাই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর উন্নয়নকেই বুঝায়।২০১০ সালে শিক্ষানীতিতে ধীরে ধীরে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যামান বৈষম্য নিরসনের কথা উল্লেখ আছে।সে অনুযায়ী কাজও করেছে বর্তমান সরকার। না পাওয়ার বেদনায় তা ভুলে গেলে চলবে না।

আমি কিছু প্রাপ্তির তালিকা তুলে ধরছি।

০১. সরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা প্রদানের সাথে সাথে আমরা বেসরকারি শিক্ষকবৃন্দও তা পেয়েছি।
০২. বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাস্তবায়ন এ সরকারই করেছে
০৩. জাতীয় বেতন স্কেল বেতন তাও এ সরকারের অবদান।
০৪. বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষেত্রে এ সরকারের অবদান অনিস্বীকার্য।
০৫. বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ এ সরকারের অবদান
০৬. ছাত্রীদের অবৈতনিক পাঠদানের সুযোগ করে দেওয়া এ সরকারের অবদান।
০৭. শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব করা এ সরকারের অবদান।
০৮ মেয়েদের উপবৃতি প্রদান এ সরকারের অবদান
০৯.শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশ্বমানের কারিকুলাম প্রনয়ণ এ সরকারের অবদান
১০. কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
১১ আমাদের শিক্ষকদের থেকে বাছাই করে মাষ্টার ট্রেইনার তৈরি করা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
১২. সর্বশেষ প্রনোদনার টাকাও আমরা সরকারি কর্মচারীদের মত পেয়েছি। এর জন্য কোন আন্দোলন করতে হয়নি।
শিক্ষাক্ষেত্রে এ সকল প্রাপ্তি এ সরকারের কাছ থেকে। তাই আমরা এ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।

আমরা সরকারের সকল আদেশ নির্দেশ সব সময় বিনা বাক্য ব্যয়ে পালন করে চলছি এবং চলব।আমাদের দেশ উন্নত হয়েছে এ কথা সরকারের নিন্দুকও স্বীকার করে। তার পরেও আমরা বেসরকারি শিক্ষকবৃন্দ সরকারের এ ভালো কাজের প্রশংসা করতে পারছি না কেন? এটা কি আমাদের হীনমন্যতা? আমার মনে হয় হীনমন্যতা নয়।সরকারের মধ্যে একটি মহল বা প্রশাসনের মধ্যে একটি মহল সুকৌশলে শিক্ষকদের সাথে সরকারের দূরত্ব বৃদ্ধি করছে।

২০০৪ সালে একটি সরকার শিক্ষকদের ২৫ % উৎসব ভাতা এবং কর্মচারীদের ৫০% উৎসব ভাতা দিয়েছেন। তার পরে বর্তমান সরকার আমাদের বেতন স্কেল আড়াই গুণ বাড়িয়েছে।সর্বশেষ সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় ইনক্রিমেন্ট প্রদান করায় প্রতি বছর বেসিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা সরকারের দেওয়ার সামর্থ আছে।আর সরকার শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করতে পারে না এটা আমরা বিশ্বাস করি না।এই উৎসব ভাতা প্রতিমাসে দিতে হয় না। দিতে হবে বছরে দুই বার মাত্র।তবে কেন এই উৎসব ভাতা দেওয়া হচ্ছে না? কারণ তারা অন্য একটি গ্রুপেরস্বার্থ রক্ষা করে চলছে।কি স্বার্থ? একটি গ্রুপকে বলার সুযোগ করে দিচ্ছে যে আমরা ২০০৪ সালে আপনাদের ২৫ % উৎসব ভাতা দিয়ে গেলাম কিন্তু এই সরকার ২০ বছরেও তা বৃদ্ধি করে শতভাগ করতে পারল না।

আমার কথা হল আপনারা কেন তাদের এই কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যারা এই সুযোগ করে দিচ্ছে তারা বর্তমান সরকারের ভালো চায় না।
১৯ জুলাই ২০২৩ তারিখ তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় এবং বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সাথে সভা করে বলেছিলেন বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ করার জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হবে। আপনারা এও বলেছিলেন আপনারা আমাদের আস্তায় নিন। একটি সংগঠন বাদে সবাই আপনাদের কথা বিশ্বাস করে আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করিনি।এখন আমরা আপনাদের কথার বাস্তবায়ন চাই। সেই কমিটি দুটোর খবর কি?

এখন পর্যন্ত কমিটি দুটির জন্মই হলো না।কবে তারা বড় হবে।কবে গবেষণা করবে? কবে গবেষণার ফল বের হবে? কবে সরকার গ্রহণ /বর্জন করবে।আমরা আপনাদের বিশ্বাস করেছি। আমরা আশা করি আপনারা আমাদের বিশ্বাস ভঙ্গ হয় এমন কাজ করবেন না। বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ হলে শুধু আমরা শিক্ষকরা লাভবান হব এমন নয়। সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে ৯৭% অভিভাবক। লাভবান হবে ৯৭% শিক্ষার্থী। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এক হলে বদলি হবে সর্বজনীন। এতে লাভবান হবে ১০০% শিক্ষক .।

শিক্ষাক্ষেত্রে যে বৈষম্য আছে তা দূর হবে। সরকারের সুনাম বৃদ্ধি পাবে।নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন সহজ হবে। জাতি পাবে তাদের কাঙখিত স্মার্ট নাগরিক।
সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহ প্রধান ও প্রধানদের একই গ্রেডে বেতন চাই।
তাই আমরা শতভাগ উৎসব ভাতা চাই

সর্বশেষ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ চাই
দুলাল চন্দ্র চৌধুরী
সাংগঠনিক সম্পাদক
কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ

Leave a Reply