স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটি প্রবন্ধ লিখ (চারটি রচনা ১০০০ শব্দ) | Write an essay on building smart Bangladeshq?

রচনা নাম্বার ওয়ান 

স্মার্ট বাংলাদেশ

 

ভূমিকা

ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবনের পথ ধরে আসা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বিজয়ে আজ বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুত “ডিজিটাল বাংলাদেশ” বাস্তবায়ন অনেকটা সম্পন্ন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশর বাস্তবায়নের পর সরকারের নতুন লক্ষ্য “স্মার্ট বাংলাদেশ।” ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত এবং উদ্ভাবনী। অর্থাৎ সব কাজই হবে স্মার্ট।

স্মার্ট বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে দেওয়ার যে লক্ষ্য ধরে সরকার কাজ করছে, সেই বাংলাদেশই হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ।’ আর সেজন্য চারটি ভিত্তি ধরে সরকার কাজ করছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।

 

চার স্তম্ভে স্মার্ট বাংলাদেশ

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরে এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্তম্ভ চারটি। যথা :

 

ক)        স্মার্ট সিটিজেন

খ)         স্মার্ট ইকোনমি

গ)         স্মার্ট গভর্নমেন্ট

ঘ)         স্মার্ট সোসাইটি

 

  ক) স্মার্ট সিটিজেন

এই স্তম্ভের আওতায় দেশের সকল নাগরিক প্রযুক্তিগত সুবিধা পাবে।

  খ) স্মার্ট ইকোনমি

এই স্তম্ভের আওতায় দেশের ইকোনমিকে ডিজিট্যাল করা হবে।

 

  গ) স্মার্ট গভর্নমেন্ট 

এই স্তম্ভের আওতায় দেশের সরকারি কার্যক্রমগুলো অনলাইন পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

 

  ঘ) স্মার্ট সোসাইটি

এই স্তম্ভের আওতায় যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিট্যাল করা হবে।

 

ডেল্টা প্ল্যান 

২০৪১ সালেই শেষ নয়, ২১০০ সালেও এই বঙ্গীয় বদ্বীপ যেন জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়, দেশ উন্নত হয়, দেশের মানুষ যাতে ‘সুন্দরভাবে, স্মার্টলি’ বাঁচতে পারে, সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ে সুধীজনের মন্তব্য

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাইন্ডসেট পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের আলেম সমাজ ও বিভিন্ন ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো। বিজ্ঞ আলেম সমাজের বক্তব্যে বলা হয়েছে, “আমরা প্রযুক্তিবান্ধব, প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে দক্ষ মানুষ তৈরি করতে চাই। যাদেরকে মানবিক ও সৃজনশীল হতে হবে।” হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও হিউম্যানওয়্যারকে একসাথে কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন বিভিন্ন মুসলিম উদ্যোক্তারা।

 

স্মার্ট প্রযুক্তি

২০২১ সালেই আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দেশে ফাইভজি (5G) সেবা চালু করেছি এবং এরইমধ্যে ফাইভজি (5G) কানেক্‌টিভিটি সেবা নিয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে। স্মার্ট সিটি ও স্মার্ট ভিলেজ বিনির্মাণে স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নে আমাদেরকে ফাইভজি কানেক্‌টিভিটি সুবিধাকে কাজে লাগাতে হবে।

 

উপসংহার

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অত্যাধুনিক পাওয়ার গ্রিড, গ্রিন ইকোনমি, দক্ষতা উন্নয়ন, ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে স্বীকৃতি প্রদান এবং নগর উন্নয়নে বেশ জোরেসোরে কাজ চলছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়কে মোকাবেলা করতে ডিজিটাল সংযুক্তির জন্য যতটুকু প্রস্তুতির প্রয়োজন, সরকার তার অধিকাংশই সুসম্পন্ন করেছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বলতে স্মার্ট নাগরিক, সমাজ,অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার গড়ে তোলা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রম স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তর হবে। মনে রাখতে হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের নয়, এটা দেশের ১৬ কোটি মানুষের, মুসলিম জনতার ধ্যানজ্ঞান ও চিন্তা-ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু।

 

রচনা নাম্বার টু

স্মার্ট নাগরিক গঠনে গ্রন্থাগারের ভুমিকা রচনা ১০০০ শব্দ

মানুষের জ্ঞানের এ অপূর্ণতাকে পূর্ণতায় ভরিয়ে দিতে পারে বই। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মনীষীর অমূল্য গ্রন্থে গ্রন্থাগার সমৃদ্ধ। তাই মানুষের অনুসন্ধিৎসু মন গ্রন্থাগারে এসে খুঁজে পায় কাঙ্ক্ষিত খােরাক। একই ব্যক্তির পক্ষে চাহিদা অনুযায়ী সকল বই কেনা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে গ্রন্থাগারই তার ভরসাকেন্দ্র। ফলে মানুষের জানার ভাণ্ডারকে পূর্ণ করতে গ্রন্থাগারের গুরুত্ব অপরিসীম। একটি জাতিকে উন্নত, শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান হিসেবে গড়ে তােলার ক্ষেত্রে গ্রন্থাগার উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখে। তাছাড়া বিভিন্ন বয়সের পাঠক গ্রন্থাগারে একত্রে পাঠগ্রহণ করে বলে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে আন্তরিকতা, একতা, এক্ষেত্রে বিচারপতি ও লেখক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের উক্তি প্রণিধানযােগ্য গ্রন্থাগারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠে সংহতি যা স্মার্ট জাতি গঠন কিংবা রক্ষার কাজে রাখে অমূল্য অবদান। সুতরাং, ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে গ্রন্থাগারের প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য।

তথ্য এবং জ্ঞানের উপলব্ধি:

গ্রন্থাগার বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন এবং ডিজিটাল সামগ্রী সহ বিস্তৃত তথ্য এবং জ্ঞান অর্জনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রন্থাগার জ্ঞান এবং তথ্যের ভান্ডার হিসাবে কাজ করে, যার ফলে ব্যক্তিদের শেখার এবং গবেষণার উদ্দেশ্যে এই তথ্য গুলো ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
গ্রন্থাগার ব্যক্তিদের তথ্য এবং জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন পরিষেবাও প্রদান করে, যেমন রেফারেন্স সহায়তা, গবেষণা সহায়তা ইত্যাদি। লাইব্রেরিয়ানরা ব্যবহারকারীদের প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে বের করতে এবং তাদের গবেষণার দক্ষতা বিকাশে গাইড করার ক্ষেত্রে একটি মূল ভূমিকা পালন করে।
অধিকন্তু, গ্রন্থাগার প্রায়শই শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম, কর্মশালা এবং ইভেন্ট হোস্ট করে যা সাক্ষরতা, জীবনব্যাপী শিক্ষা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনাকে উন্নীত করে। অধ্যয়ন এবং সহযোগিতার জন্য একটি শারীরিক স্থান প্রদান করে, গ্রন্থাগার জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরিতেও অবদান রাখে।
আজকের ডিজিটাল যুগে, লাইব্রেরিগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে অনলাইন ডেটাবেস, ই-বুক এবং অন্যান্য ডিজিটাল সংস্থানগুলিতে অ্যাক্সেসের অফার করছে, তথ্য এবং জ্ঞান অর্জনের সুবিধার্থে তাদের ভূমিকা প্রসারিত করছে। সামগ্রিকভাবে, লাইব্রেরিগুলি তথ্যের অ্যাক্সেসের প্রচার এবং জ্ঞানের অন্বেষণকে সমর্থন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করে।

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং বৈচিত্র্যের প্রচার:

গ্রন্থাগারগুলি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং বৈচিত্র্যের প্রচারে অবদান রাখে। গ্রন্থাগার একটি সংরক্ষণাগার, বিশেষ সংগ্রহ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের নথিভুক্ত সাংস্কৃতিক নিদর্শন রাখে। এই উপকরণগুলি সংরক্ষণ করে এবং সেগুলিকে জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার মাধ্যমে, গ্রন্থাগারগুলি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উদযাপন করে এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার প্রচার করে। তারা ব্যক্তিদের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি অন্বেষণ করতে, অন্যান্য সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে এবং মানব ঐতিহ্যের সমৃদ্ধির প্রশংসা করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে।

উপসংহার:

লাইব্রেরি তথ্যের উপলব্ধি প্রদান করে, সাক্ষরতার প্রচার করে, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করে, আজীবন শিক্ষাকে সমর্থন করে, ডিজিটাল বিভাজন দূর করে এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উদযাপন করে স্মার্ট নাগরিক তৈরিতে বহুমুখী ভূমিকা পালন করে। জ্ঞান এবং উদ্ভাবনের গতিশীল কেন্দ্র হিসাবে, গ্রন্থাগার ব্যক্তিদেরকে সমাজের সচেতন, নিযুক্ত এবং উত্পাদনশীল সদস্য হওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে। লাইব্রেরি সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধি এবং সামগ্রিকভাবে সমাজের অগ্রগতি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যক্তি ক্ষমতায়নের বাইরে প্রসারিত। যেহেতু আমরা দ্রুত পরিবর্তন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির যুগে পাড়ি দিচ্ছি। তাই স্মার্ট নাগরিক তৈরিতে গ্রন্থাগারগুলির ভূমিকা বরাবরের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

রচনা নাম্বার তৃতীয়

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য সরকারের, কী থাকবে তাতে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের   (বিআইসিসি) অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে সর্বপ্রথম ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আগামী ৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ। এ স্মার্ট শব্দটি দেশ ও শহরের ক্ষেত্রে প্রথম ব্যবহার শুরু হয় ভারতে স্মার্ট সিটি প্রকল্প নামে।

 

পরিকল্পনা: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি চারটি। এগুলো হচ্ছে

১. স্মার্ট অর্থনীতি

২. স্মার্ট নাগরিক

৩. স্মার্ট সরকার

৪. স্মার্ট সমাজ

 

স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে এ চারটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে অগ্রসর হলে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের কোনো অবশিষ্ট থাকবে না। আর্ট নাগরিক স্মার্ট সরকার এর মাধ্যমে সব সেবা এবং মাধ্যম ডিজিটালে রূপান্তরিত হবে। আর স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

 

স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত ও উদ্ভাবনী । এককথায় সব কাজই হবে স্মার্ট। যেমন স্মার্ট শহর ও স্মার্ট গ্রাম বাস্তবায়নের জন্য স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট পরিবহন, স্মার্ট ইউটিলিটিজ, নগর প্রশাসন, জননিরাপত্তা, কৃষি, ইন্টারনেট সংযোগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এক শিক্ষার্থী, এক ল্যাপটপ, এক স্বপ্নের উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এর আওতায় ডিজিটাল সেবা কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত ক্লাউডের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের নাম পরিবর্তন করে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ঢাকফোর্স গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার।

 

টাস্কফোর্স গঠন

বাংলাদেশ সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট স্মার্ট বাংলাদেশ টাঙ্কফোর্স গঠন করেছে। এ টাস্কফোর্সের চেয়ারপারসন হলেন প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। বাকি ২৯ জন সদস্য।

টাস্কফোর্সের কার্যাবলীঃ  অগ্রসরমান তথ্য প্রযুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান; শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রমকে স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তরের সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে দিক নির্দেশনা প্রদান; স্মার্ট এবং সর্বত্র বিরাজমান সরকার গড়ে তোলার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক ও বৈজ্ঞানিক পরিমন্ডলে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক বিধিবিধান প্রণয়নে দিক নির্দেশনা প্রদান ইত্যাদি।

রচনা নাম্বার চতুর্থ

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য সরকারের, কী থাকবে তাতে

২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ গঠনের পর এই টাস্কফোর্সের একটি নির্বাহী কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যারা, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সুপারিশ দেবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে এই কমিটি। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আগামী নির্বাচনে তাদের স্লোগান হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে এই কথা বলেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এই নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ প্রতিষ্ঠার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সুপারিশ দেবে এই কমিটি।

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বলতে স্মার্ট নাগরিক, সমাজ, অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার গড়ে তোলা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রম স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তর হবে। এ জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং এর উন্নয়নে একটি দক্ষ ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন কার্যক্রম ডিজিটাইজেশন করা হবে।

টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটির কর্মপরিধিতে আরও বলা হয়, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, আইন ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামো সৃষ্টি এবং সব পর্যায়ে তা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনা দেবে এই কমিটি।

এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রমকে স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তরের সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন, স্মার্ট ও সর্বত্র বিরাজমান সরকার গড়ে তোলার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক এবং বৈজ্ঞানিক পরিমণ্ডলে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিধিমালা প্রণয়ন, রপ্তানির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নীতি প্রণয়ন ও সময়াবদ্ধ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে ব্যবস্থা, আর্থিক খাতের ডিজিটাইজেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এই কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’-এর গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোও বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়াও হবে এই কমিটির কাজ।

কারা আছেন এই কমিটিতে

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এ নির্বাহী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন বাণিজ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এ টু আই প্রকল্পের পরিচালক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের সভাপতি, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব (সদস্যসচিব)। অবশ্য কমিটি প্রয়োজনে আরও সদস্য নিতে পারবে (কো-অপ্ট)। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।

Leave a Reply