আয়োজনে: বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ
অদ্য ১২ অক্টোবর ২০২১খ্রি. মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সারাদেশে শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের উদ্যোগে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানব বন্ধন কর্মসূচি শিক্ষক সমাজের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে বিশাল শিক্ষক সমাবেশে রূপ নেয়। বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জনাব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাস।
ঘটনার বিবরণ:
৭ই অক্টোবর ২০২১খ্রি. বগুড়া জেলার কোষাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জনাব মোঃ শামিম হোসেন লিটন কর্তৃক নন্দীগ্রাম ভরতেঁতুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান জনাব মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম দুদুকে শারীরিক লাঞ্ছিত হন। সভাপতির ঘুষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের তিনটি দাঁত ভেঙ্গে যায়। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লম্বরি মালকা বানু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের টেকনাফ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ ইসমাইল স্কুলের জমি আত্মসাৎ-এ বাঁধা দেওয়ায় একটি বিশেষ মহলের প্ররোচণায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ১৭ জুলাই, ২০২১খ্রি. স্কুলের সামনে গুরুতরভাবে আহত করে। আমরা এর প্রতিবাদ জানায়। দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
করোনাকালে নিয়মিত কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে এডহক কমিটি গঠন করতে হয়। এই এডহক কমিটি গঠন করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে নাজেহাল হতে হয়। কিছু দিন পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার লাল ফতেহপুর আর এন টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ আলামীন খান নবীনগর উপজেলার ভাইস চ্যান্সেলর কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার হন। পরে বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের প্রতিবাদে একটি সমাধান হলেও ঐ বেয়াদবকেই এডহক কমিটির সভাপতি করতে হয়েছে। এখন বুঝুন বি.বাড়িয়া জেলায় ভালো লোকের কত অভাব পরেছে? জানিনা ঐ প্রধান শিক্ষক কেমন আছেন?
কিছু দিন পূর্বে আপনারা পত্রিকার মাধ্যমে দেখেছেন বরিশাল জেলার মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে না পেরে, বাথরুম থেকে ময়লা এনে প্রকাশ্য দিবালোকে মাদ্রাসার সুপারের মাথায় ঢেলে দিয়েছেন।
সম্প্রতি গোপালগঞ্জ জেলা সহকারী প্রাথমিক থানা শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষককে লাথি মেরেছে। ২য় দফায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি সাহেব প্রধান শিক্ষককে মারধর করে হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে বসে প্রধান শিক্ষক জানতে পারেন তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ আমরা কোন দেশে বাস করছি! ছোট খাটো ঘটনায় কমিটি এক তরফাভাবে তদন্ত করে কোন প্রকার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করেন যা কোন ভাবেই বিধিসম্মত নয়। আমরা এ অবস্থার অবসান চাই। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষক কর্মচারী অসদাচরণের জন্য পাঁচ ধরনের শাস্তির বিধান আছে। কোন কমিটিকে বরখাস্ত ছাড়া বাকি চার ধরনের শাস্তি দিতে দেখা যায় না। অপরাধ যাই হউক সর্বোচ্চ শাস্তি বরখাস্তই তারা করে থাকেন। কারণ এ শাস্তি তাদের পূর্ব নির্ধারিত। এগুলোও আমরা আইনিভাবে এতদিন মোকাবিলা করেছি। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না।
আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারেনা। কিন্তু বগুড়ার নন্দীগ্রামের ঘটনা, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ঘটনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের ঘটনা আমাদেরকে হতবাক করে। প্রত্যেকটি ঘটনা দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি প্রদর্শন করে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে দেখা যায়। বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ মনে করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য একটি চিহ্নিত মহল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় নেমেছে।
আমরা এই দুষ্ট চক্রের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের জনাব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ মজিবুর রহমান বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব দুলাল চন্দ্র চৌধুরী, সহ-সভাপতি জনাব মোস্তফা কামাল, জনাব মোঃ শফিউদ্দীন, জনাব রামকৃষ্ণ মিত্র, জনাব এস এম ফেরদৌস হেলাল, জনাব মোঃ এনামুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক জনাব আলতাফ হোসেন নাজির, জনাব আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জনাব আবুল হোসেন মিলন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি জনাব মোঃ হোসেন, গাজীপুর জেলার সভাপতি জনাব আখতার হোসেন, মুন্সীগঞ্জ জেলার সভাপতি জনাব মহিউদ্দীন আল মামুন, জনাব মোঃ আব্দুল মোমেন।
বার্তা প্রেরক
আইয়ুব আলী
দপ্তর সম্পাদক
বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ