Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
ফাঁসিতে ঝুলতেই হচ্ছে দুই খুনিকে

ফাঁসিতে ঝুলতেই হচ্ছে দুই খুনিকে

কারাগারের চার দেয়ালে ফাঁসির প্রহর গুনছে শফিউদ্দিন আহমেদের দুই খুনি শিপন হাওলাদার ও নাইমুল ইসলাম ইমন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে মার্চের যে কোনোদিন তাদের ফাঁসি কার্যকর হবে। সুপ্রিম কোর্টে তাদের ফাঁসির রায় বহাল থাকায় এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো এখন সময়ের অপেক্ষামাত্র। তারা দু’জনই ছিল আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর রেলওয়ে এলাকার ‘গডফাদার’ মোহাম্মদ হোসেন হিরণের অনুসারী।শিপন ও নাইমুল এখন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি। শফিউদ্দিনকে বাসায় গুলি ও কুপিয়ে হত্যার ১৮ বছর পর কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসির সাজা কার্যকর হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে রেলওয়ে বস্তিতে মদ, জুয়া ও অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে খুন হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন।

সুপ্রিম কোর্টে তাদের ফাঁসির সাজা বহাল রাখার চিঠি গত ১৬ ডিসেম্বর কুমিল্লা কারাগারে এসে পৌঁছে। তারপর গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার চিঠিও কুমিল্লা কারাগারে এসে পৌঁছেছে। এর পরই তাদের ফাঁসি কার্যকরে প্রস্তুতি শুরু করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। শিপন হাওলাদার চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর দক্ষিণ আমবাগানের মৃত ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়ার নন্দন সদর এলাকায়। আরেক খুনি নাইমুল ইসলাম ইমন চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার ডেবারপাড় এলাকার ঈদুল মিয়া সরকারের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের পূর্বপাড়ার রতনপুর এলাকায়। এই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত প্রধান আসামি ছিলেন ‘বিতর্কিত’ আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ। তার নামে রেলওয়ের জমি দখলসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ ও মামলা রয়েছে।
কিয়েভ বাঁচাতে লড়ছে ইউক্রেইন
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান সমকালকে বলেন, চট্টগ্রামের খুলশীর একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড পাওয়া দুই আসামি কুমিল্লা কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছে। তাদের ফাঁসির রায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখার পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। কয়েক দিন আগে সে আবেদন খারিজ হওয়ার চিঠি আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই ২১ দিন থেকে ২৮ দিনের মধ্যে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
এ ব্যাপারে চসিকের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে আমাকে ওই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছিল। মামলার ১৩ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামির মধ্যে আমিসহ চারজন ট্রাইব্যুনাল থেকে খালাস পেয়েছি। শিপন ও ইমনের ফাঁসির আদেশ হয়। তারা আমার অনুসারী নয়। আমার বিরুদ্ধে যত মামলা ও অভিযোগ রয়েছে, সবই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সৃষ্টি।’ মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী মামলার বাদী মাহমুদা বেগম বলেন, ‘খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছি। যেদিন ফাঁসি হবে সেদিন মন শান্ত হবে। ঘরে ঢুকে তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় আমার স্বামীকে সেদিন খুন করেছিল।
ভারত, আমেরিকা বা ইউরোপে ভেঙে পড়তে পারে মহাকাশ স্টেশন: হুমকি রাশিয়ার
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর উত্তর আমবাগান রেলওয়ে কোয়ার্টারের ৩৬/এ বাসায় বাস করতেন শফিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন স্থানীয় রেলওয়ে আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক। ছিলেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এলাকায় সন্ত্রাসী ও সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে মদ, জুয়া ও রেলওয়ের অবৈধ সম্পদ দখলের প্রতিবাদে সোচ্চার ভূমিকা ছিল তার। সে কারণে ওই সময় রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন।
এ ঘটনায় বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা হিরণ ও তার অনুসারী সন্ত্রাসীরা শফিউদ্দিনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এর জের ধরে ২০০৩ সালের ১৪ জুন বাসায় ঢুকে গুলি করে শফিউদ্দিনকে খুন করা হয়। গুলি তার ডান কাঁধের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। বাথরুমে আত্মগোপন করলেও সেখান থেকে টেনে বের করে এনে গুলি করে খুনি ইমন। ইমন তার হাতে থাকা পিস্তলের বাঁট দিয়ে শফিউদ্দিনের মাথায় একাধিক আঘাত করে মাথা থেঁতলে দেয়। গুলি ও ছুরিকাঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বোমা ফাটিয়ে এলাকা ছাড়ে খুনিরা। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এ হত্যা মামলায় দুই খুনি শিপন ও ইমনকে ফাঁসি, সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেন।

 

Leave a Reply