Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেন বুয়েটের এই সাবেক ছাত্রী

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেন বুয়েটের এই সাবেক ছাত্রী

উদ্ভাবনী বিষয়ে মার্কিন সরকার ও প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয় প্রেসিডেনশিয়াল ইনোভেশন ফেলো। তারই দশম ব্যাচের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ২৫ জন বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞ। প্রথমবারের মতো সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রকৌশলী আওয়ালিন সোপান।

ছোটবেলা থেকেই নিজেকে প্রবলেম সলভার ভাবতে ভালো লাগত। পদার্থবিজ্ঞানে আগ্রহ থাকলেও বুয়েটে সুযোগ পেয়ে সেখানেই কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে শুরু করেন। এই বুয়েটেই তাঁর প্রোগ্রামিংয়ে হাতে খড়ি। আস্তে আস্তে প্রোগ্রামিংয়ের আশ্চর্য জগৎকে তাঁর ভালো লাগতে শুরু করে। আওয়ালিন সোপান বলেন, ‘আমি কিছু বাক্য, শব্দ স্ক্রিনে লিখি। কিন্তু যখন সেটা কাজ করে, তখন পর্দায় ভিন্ন এক জগৎ ফুটে ওঠে। এটা দেখেই বিষয়টির প্রেমে পড়ে যাই। তারপরই আবিষ্কার করি, কম্পিউটারের অ্যালগরিদম দিয়ে গণিত হোক, পদার্থবিজ্ঞান হোক কিংবা বাস্তব জগতের সমস্যার সমাধান করা যায়। তখনই পদার্থবিজ্ঞানে না পড়ার দুঃখ চলে যায়।’ দেশে ডেটা অ্যানালিসিস ও মেশিন লার্নিংয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান সোপান। সেখানকার ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড, কলেজ পার্ক থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স করেছেন সোপান।

ফেসবুক-টুইটার নিষিদ্ধ করলো রাশিয়া

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই প্রথম ইনফোগ্রাফের মাধ্যমে ডেটা তুলে ধরার বিষয়টা জানতে পারেন আওয়ালিন সোপান, ‘কতগুলো সংখ্যাকে আপনি যখন ছবি বা গ্রাফে দেখবেন, তখনই কিন্তু সেটি সহজে সাধারণ মানুষের বোধের মধ্যে চলে আসে। প্রথম আলোতেও আপনারা এখন ইনফোগ্রাফ ব্যবহার করেন। অনেক তথ্য কিন্তু একটা ছোট্ট ভিজুয়ালাইজেশনের মাধ্যমে তুলে ধরা যায়। তখন আর সেটা মিথ থাকে না।’ বাংলাদেশের জেলাগুলোর জন-ঘনত্বের উদাহরণ দিয়ে সোপান জানালেন, বাংলাদেশের মানচিত্রে জেলাওয়ারি জনসংখ্যাকে রং দিয়ে দেখালে দর্শক সহজে কোন জেলায় বেশি লোক, আর কোনটাতে কম, তা বুঝে ফেলে। এরপর নিজের কাজ ব্যাখ্যা করলেন সোপান, ‘এভাবে ডেটাকে দেখানোটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে দেখলাম, এটিকে আরও ইন্টারেকটিভ করা যায়। যেমন ওই মানচিত্রের কোনো জেলায় ক্লিক করলে সেখানকার পুরুষ-মহিলার তুলনামূলক একটি গ্রাফ চলে আসতে পারে, সেখান থেকে কোন বয়সী মেয়েরা কী ধরনের খাবার গ্রহণ করে, সেটিও জেনে নেওয়া যায়। এখানে ডেটা কিংবা তথ্য নেহাত কিছু সংখ্যা থাকে না। হয়ে ওঠে ইনসাইট।’

 

যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স শেষেই চাকরিতে যুক্ত হন। শুরুতে ডেটা ভিজুয়ালাইজেশনের টুলস বানানোর কাজ করতেন। এর মধ্যে একটু একটু করে সাইবার নিরাপত্তাও তাঁকে আকর্ষণ করল। কারণ, ডেটা বিশ্লেষণ করে অজান্তে হ্যাকিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটা যেমন জানা যায়, তেমনি সামনের দিনগুলোতে কোনো প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশনে নিরাপত্তা হানিকর কিছু হবে কি না, সেটাও বোঝা যায়। বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সোফোসের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দলের মুখ্য ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন সোপান। এখানে তিনি কয়েকটা মেশিন লার্নিং মডেল আর তার প্রয়োগ নিয়ে কাজ করেছেন, যা সাইবার ক্রাইম রোধ করতে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উদ্ভাবন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন এখন সোপান। যার লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে কোভিড-১৯ প্রণোদনা পৌঁছে দেওয়া, যাতে নিজেদের ক্ষুদ্র ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারে তারা।

বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের আরও বেশি করে প্রোগ্রামিংয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন সোপান। কারণ, এই ক্ষেত্রে প্রচুর কাজের সুযোগ। আর্থিক প্রণোদনাও খুব ভালো। বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের বিকাশের কারণে সরকার ও বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোকে নিশ্ছিদ্র করতে চায়। অন্যদিকে এগুলোকে কবজা করার জন্য একদল হ্যাকারও নিত্যনতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। প্রোগ্রামারের গুরুত্ব ও চাহিদা তাই দিন দিন বাড়তেই থাকবে। অন্যদিকে একটি ভালো ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই নিজেকে বিশ্বমানের প্রোগ্রামার হিসেবে গড়ে তোলা যায়। যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও দেশের নতুন প্রজন্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান সোপান। গত মাসে ইন্টারন্যাশনাল ডে অব সায়েন্স ফর ওম্যান অ্যান্ড গার্লসের একটি সেশনে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের আমন্ত্রণে।

 

বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের আরও বেশি করে প্রোগ্রামিংয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন সোপান

বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের আরও বেশি করে প্রোগ্রামিংয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন সোপানছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞাপন

 

ছোটবেলা থেকে আকাশ দেখার শখ। একটা ব্যাকইয়ার্ড টেলিস্কোপ দিয়ে এখনো বজায় রেখেছেন আকাশবিহার। সময় ও সুযোগ হলে ওয়াশিংটনের আশপাশের পাহাড়-জঙ্গলে হাইকিং করতে চলে যান। নিজের বাগানে পেঁয়াজ, মরিচ ফলান। নিজের পরিবারের লোকজন তিন মহাদেশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকায় নতুন নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। সোপানের আরও একটি শখ রেস্তোরাঁয় নতুন নতুন খাবারের স্বাদ নেওয়া। ওয়াশিংটনের রেস্তোরাঁগুলোর নতুন মেনু চেখে দেখার লোভ তাই সংবরণ করতে চান না।

রাশিয়ার তেল-গ্যাস আমদানিতে বাইডেনের নিষেধাজ্ঞা

যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সময় গীতবিতান সঙ্গে নিয়ে গেছেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজে যেমন গুণ গুণ করে গাইতে থাকেন, আবার শোনেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গলায় ‘আমারে তুমি অশেষ করেছ, এমনি লীলা তব-ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব।’

 

 

 

Leave a Reply