#প্রবাসী_ভাইবোনদেরকে সবাই সম্মান করবেন। 

*একটানা ৭ বছর বিদেশে থেকে,আজকেই দেশে ফিরে আসলেন।বিমান বন্দরে নামানোর পর পর আমাকে অনেক যত্ন করে এসি নিয়ন্তিত এক মাইক্রোবাসে
করে গ্রামে আনা হলো।
*সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা।আগে থেকেই ভাই-বোন,
বাবা-মা সহ গ্রামের অনেকেই আমাকে দেখার জন্য বাড়িতে বসে আছেন।এলাকার মাওলানা সাহেবও এসে গেছেন।শুধু একজনের আসার বাকি,তার জন্যই সবাই অপেক্ষা করে বসে আছে।
*বাহ! কয়েক বছর আগে,বেকার বলে আমাকে পরিত্যাগ করা মেয়েটাও আজ দেখি আমাকে দেখতে আসছে।তার সাথে একটা কন্যা সন্তানও আছে দেখছি।মাশাল্লাহ একদম অর মত দেখতে।টানা টানা চোখ,তবে মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আছে,মনে হয় ভয় পেয়ে এমন হয়েছে।
*চারদিকে হৈহল্লা অবস্থা।তবে একটা জিনিস খেয়াল করলাম,সবাই আমাকে নয় আমার সাথে আসা বড় বাক্সটাকে নিয়েই বেশি আগ্রহী।
*ছোট ভাইটা মনে মনে ভাবছে,যাক এবার ভাইয়ার সাথে আসা বক্সের মধ্যে থাকা টাকাগুলা থেকে কিছু টাকা দিয়ে ভাল ব্যাবসা শুরু করা যাবে।
*আমার কষ্টের টাকা দিয়ে বিয়ে দেয়া বিবাহিত বোনটা ভাবছে,কি ভাবে আমার সাথে আসা টাকা গুলা থেকে কিছু টাকা দিয়ে স্বামীকে বিদেশ পাটাতে পারবে।
*আর বাবা ভাবছে,ছেলেটা সারাটা জীবন পরিবারের শান্তির জন্য কষ্ট করে গেলো।কিন্তু ঠিক মত পরিবারটা গুছাতে পারলো না।কিছুই হলো না ছেলেটাকে দিয়ে।কি অভাগা এক ছেলে।
*আর ঘরের একটা কোনায় বসে মা ভাবছে,কেউ খুলছে না কেনো এখনো কফিন বক্সের ঢাকনাটা।কেউ দেখায় না কেনো তাকে, আমার থেথলে যাওয়া চেহারাটা।
*আর আমি নিজেকে নিজেই মরা হাতির মত ভাবছি।
মরার পর নাকি হাতির মূল্য লক্ষ টাকা।সবার কাছে এখন আমার ও দেখছি তেমনি অবস্থা,কখনো কোথাও মূল্য পাই নাই।যখন বিদেশে ছিলাম তখন আমার নাম ছিলো কামলা। নিজের দেশের মানুষ ও সম্মান দিতো না।
*আজ পরিবার ও দিলো না।যাক এখন আমি সব চাহিদা কিংবা দায়িত্বের বোঝা থেকে হাজার যোজন দূরে। এখন শুধু ঘুম হবে খুব শান্তির ঘুম ।


মা এখনও অংক বোঝেনা,
১ টা রুটি চাইলে ২ টো নিয়ে আসে।
কোথাও যাওয়ার সময় ২০ টাকা চাইলে ৫০ টাকা পকেটে ঢুকিয়ে দেয়।
মা ইংরেজিও বোঝে না,
I hate u বললে উল্টো না বুঝে ছেলেকে ভালোবেসে বুকে টেনে নেয়।
মা মিথ্যেবাদী,
না খেয়ে বলে খেয়েছি। পেটে খিদে থাকা সত্ত্বেও নিজে না খেয়ে প্রিয় খাবারটা ছেলের জন্য যত্ন করে তুলে রাখে।
মা বোকা,
সারাজীবন কলুর বলদের মতো রান্নাঘর আর আমাদের ভালোমন্দের পিছনে কাটিয়ে দেয়।
মা চোর,
বন্ধুদের সাথে পিকনিকে যাব বললে রাতেই বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে আমাকে দিয়ে দেয়।
মা নির্লজ্জ,
মাকে কতবার বলি আমার জিনিসে যেন হাত না দেয়। তবুও মা নির্লজ্জের মতো আমার এলোমেলো পড়ে থাকা জিনিসগুলো নিজের হাতে গুছিয়ে রাখে।
মা বেহায়া,
আমি কথা না বললেও জোর করে এসে বেহায়ার মতো গায়ে পড়ে কথা বলে। রাতে ঘুমের ঘোরে আমাকে দরজা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে যায়।
মায়ের কোন কমনসেন্স নেই,
আমার প্লেটে খাবার কম দেখলে কেমন জানি করে। খোকা এতো খাবার কম কেন? এই বলে প্লেটটা ভর্তি করে দেয়। এতো খাওয়ার পরেও মায়ের চোখে যেন কত দিনের না খাওয়া ছেলে।
মা কেয়ারলেস,
নিজের কোমরের ব্যথা, পিঠের ব্যথায় ধুঁকে ধুঁকে মারা গেলেও কখনো ঔষধের কথা বলে না। অথচ আমাদের একটা কাশিতে তাঁর দিনটা যেন ওলটপালট হয়ে যায় ডাক্তার, হাকিম, বৈদ্য সব এক করে বসে।
মা আনস্মার্ট,
অনেকের মায়ের মতো করে মা দামী দামী শাড়ি পড়ে না। ভ্যানিটিব্যাগ ঝুলিয়ে, স্মার্টফোন হাতে নিয়ে ঘুরতেও যায়না। সারাদিন খালি রান্নাঘর আর আমাদের ভালোমন্দের চিন্তায় পুরোনো হয়েই জীবনটা কাটিয়ে দেয়।
মা স্বার্থপর,
নিজের সন্তান ও স্বামীর জন্য মা দুনিয়ার সব কিছু ত্যাগ করতে পারে।
পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ বোধহয় মা। তাই বুঝি আমরা সন্তানেরা তাঁদের এত কষ্ট দেই। তবুও তাঁদের পরিবর্তন হয়না। প্রতিদিন এসব আচরণগুলো বারবার তাঁরা করে। একটু বড় হয়ে গেলেই আমরা তাদের বৃদ্ধাশ্রমে বা জীবন থেকে দূরে রাখি। তবুও তারা বোকার মতো আল্লাহুর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করে।
সারাজীবনটা আমাদের খালি ভালোবাসা দিয়েই যায় বিনিময়ে দিনে একবার হলেও সন্তানের মুখে আদর করে ‘মা’ ডাক শুনতে চান। তাঁরা কতো নির্বোধ তাই না



আসুন যাদের মা বেঁচে আছেন তাদের কে সন্মান করুন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা মূল্য করুন।যাদের মা মারা গেছেন তাদের জন্য নিয়মিত দোয়া করেন।
মা বাবা ছাড়া দুনিয়া অন্ধকার।

গ্রীন রোডে দেখি একজন বয়স্ক বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মহিলা একটি চায়ের স্টলের দিকে তাকিয়ে আছেন। দেখে মায়া হল, গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কি চাচী চা খাবেন নাকি? তার উত্তর শুনে আমি থ হয়ে গেলাম।
“না বাবা চা খাবনা, বইসা আছি কখন চায়ের দোকান বন্ধ হইব, ওনাগো বসার জায়গায় ঘুমাই আমি। কিন্তু মাঝে মইধ্যে হেরা পানি ঢাইলা দেয়, তখন শুইতে অনেক কষ্ট হয়।”
এই কথা শুনে আমার মুখে আর কোন কথা নাই… কিছু টাকা বাড়ায় দিলাম।
“সকালে কিছু খেয়ে নিয়েন।”
খুব খুশী হয়ে টাকাটা নিজের লাল শাড়ির আঁচলে বাধতে বাধতে বলল,
“দোয়া করি বাবা, আমার আব্বা আম্মা যখন বাইচা ছিল, তখন আমাদের প্রত্যেকদিন দেখত, খাওয়া থাকার কষ্ট হয় নাই। আব্বা আম্মা মারা যাওয়ার পর আমার ভাই আমাদের দেখশুন করত। এখন সেও নাই। এখন আমি একলা থাকি।”
মেয়ে হয়ে বেঁচে থাকাই যে শহরে অনেক কঠিন, সেখানে বয়স্ক হয়ে, বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হয়ে, একলা বেঁচে থাকা কেমন সংগ্রাম, তা বুঝার মত ক্ষমতা আমার মাথায় নাই। আমি খালি পারি এরকম অবস্থায় কাউকে দেখলে তাকে কিছু সাহায্য করে পালিয়ে যেতে।
পুনশ্চঃ মহিলা আমার কাছে সাহায্য চায় নাই, কথা বলে মনে হয়েছে সেরকম চাহিদা তার নেই। ছবি তুলতে চেয়েছিলাম, তাও মানা করে দিয়েছে। তাই হাতে আঁকা, কিন্তু একটু পরিবর্তিত করা।
’’একজন রিকশাচালক বাবা ছোট মেয়েকে কাঁধে নিয়ে রিকশার পাদানিতে দাঁড়িয়ে আছেন। বড় মেয়ে রিকশার সিটে দাঁড়িয়ে। রিকশাচালক বাবা দুই মেয়েকে এভাবেই শিশুপার্কের বিভিন্ন রাইড দেখাচ্ছেন।
পটুয়াখালী শহরের শেখ রাসেল শিশু পার্কের সীমানা প্রাচীর বাইরের এমন দৃশ্যটি ধারণ করেছেন একজন পথচারী। তবে ছবিটি পেছন থেকে তোলায় রিকশাচালক ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
পটুয়াখালী শেখ রাসেল শিশুপার্কে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ২৫ টাকা করে প্রবেশমূল্য দিতে হয়। টিকিট কিনতে না পেরে মেয়েদের এভাবেই পার্কের ভেতরের দৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করছিলেন ওই ব্যক্তি।
একেকজন বাবার ত্যাগ নিয়ে একেকটি মহাকাব্য লেখা যায়’’
Sanaul Haque Sunny এর ওয়াল থেকে

যাচ্ছিলাম এক ফ্রেন্ডের সাথে কমলাপুর রেলওয়ে। যাত্রাবাড়ী থেকে অটোরিকশা নিলাম। রিক্সা চালকের আসনে বসেছেন একজন সংগ্রামী “মা”। এই প্রথম দেখা এমন কিছু। কথা হলো রিক্সা চলন্ত অবস্থায়। ছোট দু’টো মেয়ে আছে তার । বড়ো মেয়ের বয়স ১৩বছর। মাদরাসায় পড়াচ্ছেন।হেফজ পড়ছে এখন সম্ভবত। ছোট মেয়ের বয়স আড়াই বছর।
সন্তানরা বড়ো হয়ে যখন শুনবে, “মা” তাদের অন্যের অর্থে চলেছেন। আমাদেরও চালিয়েছেন অন্যের অর্থে। সেদিন হয়তো তারা বুক ফুলিয়ে গর্ব করতে পারবে না। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন। অন্যের করুণার অপেক্ষায় থাকতেন, তাদের আত্মমর্যাদা সেদিন হয়তো তাদের আহত করবে, ব্যথিত করবে। এমন মনোভাব থেকেই হয়তো এ পথ বেছে নিয়েছেন এ সংগ্রামী “মা”।
জিজ্ঞেস করলাম আঙ্কেল কি করেন? এতো টুকুই বললেন: শারীরিক ভাবে দূর্বল তিনি। বেশি কিছু আর জিজ্ঞেস করিনি। অল্পতেই বুঝে নিয়েছি। একজন “মা” পরিবার কে আগলে রেখেছেন। স্বামীর অক্ষমতা স্বত্তেও ভিক্ষাবৃত্তি করছেন না। নিজের সবটুকু দিয়ে পরিবার চালাচ্ছেন।
জীবনযুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। গাড়ি চালানোর সময়কাল তার ১০ বছর। এই রিক্সা নিয়েছেন ২বছর হলো। নারী হয়ে এই পেশায় মানুষ কোন চোখে দেখে? কতটা মূল্যায়িত আপনি এ পেশায়? এমন প্রশ্নে বললেন: একশ জন থেকে সর্বোচ্চ ত্রিশ জন উঠে। বাকিরা অবহেলিত চোখে দেখে। রিক্সায় উঠতে চান না। যদি কোন রিক্সা চালক বলে যাবনা, আর আমি যাব যদি বলি, তবুও মানুষ উঠে না আমার রিক্সায়।
আহ্,, আমরা কতটা পাষাণ! কতটা অহমিকা আমাদের মনে। মানুষ হয়ে মানবিকতা নেই আমাদের। অসহায়দের সাহায্য তো করিই না বরং তাদের সংগ্রামও পছন্দ করছি না। কর্তব্য নয় কি দেখে দেখে তাদের রিক্সায় উঠা? অল্প পথ চলে দূরের ভাড়া দিয়ে নেমে পড়া? অতিরিক্ত কিছু হাতে তুলে দেয়া ?
© সংগৃহীত। ।
আমার বাবা আমার বাসায় হঠাৎ করেই হাজির । আমি বেশ বিব্রত বোধ করলাম । বাসা ভর্তি মেহমান ।
এর ভিতরেই বাবা একটা পুরোনো, ময়লা পাঞ্জাবি পরে এসেছে। পাঞ্জাবির এক জায়গায় আবার সেলাই করা । সম্ভবত মা যত্ন করে সেলাই করে দিয়েছে।
বাবা এই দিয়ে সম্ভবত তিনবার আমার বাড়িতে এসেছে । আমি বাবাকে স্টোর রুমে নিয়ে বসালাম। তারপর বেশ চাপা রাগের স্বরে বললাম,
– যখন তখন আসার মানে কি ? আমি কোন সাহায্য সহযোগিতা করতে পারবো না । এ মাসেই আমার একটা বিদেশ টুর আছে। বেশ কয়েক লাখ টাকা ওখানে খরচ হবে ।
বাবা বেশ অবাক হয়ে বললো,
– তোমার কাছে তো কোনদিন সাহায্য চাইনি বাবা !!!
তা অবশ্য ঠিক । কিন্তু যখন তখন বাড়িতে আসলে যে আমার প্রেস্টিজ নষ্ট হয়, তা যে কেন এই অশিক্ষিত লোকগুলো বুঝে না । না পারি সইতে, না পারি কইতে। তাই বেশ ঝাঝের সাথেই বললাম,
– সাহায্য না লাগলে, খামোখা আসছো কেন ?
– তোমার মা আজ সকালে মারা গেছে । আছরবাদ দাফন হবে । মরার আগে তোমাকে খুব দেখার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু তুমি ব্যস্ত মানুষ । অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার সময় ছিল না তোমার । এখানে এনে যে দেখিয়ে নিয়ে যাবো, তাতে আবার তোমার সম্মান নষ্ট হয়। তাই মরার আগে তোমাকে আর দেখতে পারলো না । যদি তার জানাজাতে যেতে, তাহলে তার আত্মা একটু শান্তি পেতো।
বাবা কি আমাকে ইচ্ছা করে কটু কথা শোনাচ্ছে? বয়স হইলে মানুষ তো মারা যাবেই। এতে এত আপসেট হওয়ার কি আছে? আজ বাসায় এত মেহমান, যাবো কি করে? সোমার জন্মদিন উপলক্ষে সোমার আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধু বান্ধবীরা এসেছে । কিন্তু গ্রামে না গেলে, গ্রামের মানুষ জনও কথা শোনাবে । গ্রামের মানুষ জন তো গীবত ছাড়া আর কিছুই পারে না । তাই বাবাকে নিয়ে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে ।
আমাদের বাড়ি শহরতলীতে, গ্রামই বলা যায়। আমার নিজস্ব গাড়িতেই গিয়েছিলাম । যখন পৌঁছালাম, তখন লাশ অলরেডি জানাজার জন্য মসজিদে নেওয়া হয়েছে । আমাকে দেখে, সবাই সরে দাঁড়ালো। মাতবর চাচা বললো,
– রায়হান বাবা, শেষ বারের মত মায়ের মুখখান দেখবা নাকি ?
আমি বললাম,
– থাক, দরকার নেই । জানাজা শুরু করুণ।
মাকে কবর দিয়ে এসে ঘরে এসে বসলাম । কেমন যেন একটু মন খারাপ মন খারাপ লাগছে। হয়তো, আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীরা কান্নাকাটি করছে, সেজন্য । কান্নাকাটি একটা ছোঁয়াচে রোগ। একজনের থেকে আর একজনের ভিতর সংক্রামিত হয়। গ্রামের কেউ কেউ সুর করে কাঁদছে – “ওরে রায়হান, তুই শেষ পর্যন্ত আইলি, কিন্তু তোর মা তোরে একটু দেখতি পারলো না ।”
বাবা ঘরে ঢুকে সবাইকে অনুরোধ করলো, পাশের ঘরে যাওয়ার জন্য । সবাই চলে গেলে, বাবা একটা নতুন টেবিল ফ্যান বের করে আমার সামনে চালু করে দিল। অনেকক্ষণ পরে একটু আরাম লাগলো। আসলেই গরমে খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম । দেখি বাবাও ঘেমে গেছে। ফ্যানটা মুভ করে দিলাম । কিন্তু বাবা আবার আমার দিকে ফিক্সড করে দিলো। বললো,
– এ ফ্যানের বাতাসতো আমার গায়ে লাগাতে পারবো না বাবা । তোমার মা যখন খুব অসুস্থ ছিল, গরমে খুব কষ্ট পেতো। কিন্তু এই ফ্যানটা চালু করতে দিতো না । বলতো, ” থাক, নষ্ট হয়ে যাবে । খোকা আসলেই ফ্যানটা চালাবো।”
বাবা একটু থেমে আবার বলতে লাগলো,
– গতবার তুমি যখন আইছিলে, তখন গরম বলে বাড়িতে দু ঘন্টাও বসতে পারোনি। তাই তোমার মা তোমার জন্য এই ফ্যানটা কিনাইছে। যাতে বাড়ি আসলে, তোমার কষ্ট না হয়।
আমার মার জন্য হঠাৎ করেই খারাপ লাগতে শুরু করলো। বাবা মায়ের পুরোনো বাক্সটা খুললো। একটা পুটলা বের করে নিয়ে আসলো । আর একটা খেলনা গাড়ির প্যাকেট । আমার হাতে দিয়ে বললো,
– তোমার বাসায় তোমার মা জীবনে একবার গিয়েছিল । তুমি বলেছিলে, তোমার ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ, অনেক টাকা লাগবে। সেই থেকে তোমার মা আমার সাথে সারাক্ষণ ঘ্যান ঘ্যান করে । আমাদের দক্ষিণ মাঠের তিন বিঘা জমি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য । উত্তর মাঠের জমিটাতো তোমার পড়াশুনার জন্য বিক্রি করেছিলাম। শেষ সম্বল ছিল দক্ষিণ মাঠের জমিটা। তাই আমি রাজি হতাম না । কিন্তু তোমার মায়ের শরীর দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। তাই তার শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য গতমাসে বিক্রি করে দিলাম জমিটা। পনেরো লাখ টাকা পেয়েছি জমিটা বিক্রি করে । তার ভিতর তিন হাজার টাকা দিয়ে ফ্যানটা কিনেছি। আর এক হাজার টাকা দিয়ে এই খেলনা গাড়িটা কিনেছি । বাকি টাকা এই পুটলিতে আছে। তুমি যখন ছোট ছিলে, তখন মাতবরের ছেলের এমন একটা গাড়ি ছিল । তুমি সারাক্ষণ তোমার মার সাথে ঘ্যান ঘ্যান করতে, এরকম একটা গাড়ির জন্য । তোমার মা খুব কষ্ট পেতো । সামর্থ্য ছিল না বলে, কিনে দিতে পারি নাই । যখনই তোমার মা তোমার জন্য খুব মন খারাপ করতো, তখনই বলতো, ছেলেডারে একটা খেলনা গাড়িও কিনে দিতে পারি নাই । গাড়িটা যেদিন কিনে আনি, সেদিন যদি তোমার মায়ের খুশিটা দেখতে বাবা ! খুব ইচ্ছা ছিল তার, এই টাকা কয়টা আর এই খেলনা গাড়িটা নিজ হাতে তোমারে দেবে। তোমারে অনেকবার খবরও পাঠাইছি, কিন্তু তোমার ব্যস্ততার জন্য তুমি আসতে পারো নাই । যাই হোক, তার আত্মা নিশ্চয়ই দেখতেছে।
মনে পড়লো, মা একবারই আমার বাড়িতে গেছে। মনে করেছিলাম, সাহায্য চাইতে পারে । তাই আগে থেকেই, ব্যবসায় লসের গল্প শুনিয়েছিলাম মাকে।
পৃথিবীটা কেমন যেন অর্থহীন লাগছে আমার কাছে । মাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে আমার । কবর খুঁড়ে মাকে তো আর দেখতে পারবো না । আমি বাচ্চা ছেলেদের মত বাবাকে ধরে কাঁদছি। বাবা পরম স্নেহে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আর বলছেন, ” কাঁদে না বাবা । মা তো সবার চিরকাল বাঁচে না । “

লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোন অজুহাত নয়,,,, লেগে থাকো,,, চেষ্টা করো,,, ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করো,,,
১১ বছরের এই ছোট্ট পাহাড়ি মেয়েটির নাম রেহা বালোস। স্থানীয় আন্তঃস্কুল ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে বলে সে তার বাবা মাকে একটি জুতো কিনে দিতে বলে কিন্তু বাবা মা সেটি কিনে দিতে পারেনি । কিন্তু এই লড়াকু মেয়ে থেমে থাকার পাত্র নয়,বাকি প্রতিয়োগিরা যখন দামি জুতো পরে মাঠে নামে তখন রেহা পায়ে টেপ পেঁচিয়ে তার ওপর Nike ✓ লিখে মাঠে নামে এবং ৪০০,৮০০ ও ১৫০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনটি সোনার মেডেল জয় করে সবাইকে অবাক করে।
Israfil Ahmed 


তখন ১৯৬৯ সাল।
এই বাচ্চা ছেলেটার নাম আদৌ জানা যায়নি।
ঢাকায় প্রতিটি রাজপথে মিছিল চলছে। হঠাৎ এই ছোট্ট নাবালক শিশু মিছিলের সামনে চলে আসে, ওকে সামনে রেখেই মিছিল আগাতেই থাকে। এক সাংবাদিক এই ছবিটা তোলার পর ২য় ছবি তোলার জন্য রিল টানতে গিয়ে হঠাৎ বিকট গু/লি/র শব্দ হয় তারপর তাকিয়ে দেখে ছেলেটার বুক ঝাঁঝরা করে দিয়েছে মিলিটারিরা।
বাচ্চা ছেলেটার ২য় ছবি আর তোলা হয়নি।
(সুত্রঃ রাশিদ তালুকদার, তৎকালীন ফটোসাংবাদিক)
‘৩০ লক্ষ’ শহীদদের মধ্যে একটি মাত্র ‘গল্প’ এইটি।
স্বাধীনতার ওজন বুঝতে হবে। শুধু নামমাত্র গদ্য রচনা করলেই হবেনা।
আসুন এই বিজয়ের মাসে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে এদেরকে স্বরন করি। 

লেখাঃ গিরিধর দে।
দন্ডবিধির কোন কোন ধারার শাস্তি মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড?

এই কথাটির অর্থ হলো –কোন অপরাধী অপরাধ করে যদি বলেন আমি আইন জানতাম না, এই অজুহাতে তাকে শাস্তি প্রদান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না। অর্থাৎ শাস্তি তাকে পেতেই হবে। তাই আইন জানা যেমন জরুরি, তেমনি কোন অধিকার লঙ্ঘিত হলে বা কোন অপরাধ সংঘঠিত হলে ঐ অপরাধের শাস্তি কি হবে তাও জানা অত্যন্ত জরুরী।।
আসুন জেনে নেই, দন্ডবিধি অনুসারে, কোন কোন অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধী কে মৃত্যুদণ্ড ( Death sentence) দেওয়া যেতে পারে ———-
Death sentence (মৃত্যুদণ্ড)- নিম্নোক্ত ধারায় যদি কেউ দোষি সাব্যস্ত হয় তবে তার সাজা হলো মৃত্যু দন্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
—————————————
১। বাংলাদেশেরর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া বা লিপ্ত হওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করা বা সহায়তা করা ( ধারা– ১২১ )
২। বিদ্রোহে (সৈনিকদের) সহায়তা করা এবং এর ফলে বিদ্রোহ সংঘঠিত হলে।
( ধারা —-১৩২) ।
৩। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার ফলে নির্দোষ ব্যাক্তি কে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হলে, যিনি মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করেছেন তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া যেতে পারে। ( ধারা– ১৯৪) ।
৪। খুন ( ধারা- ৩০২)
৫। যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত ব্যাক্তি কতৃক খুন করিলে (ধারা–৩০৩)
৬। নাবলক উন্মাদ ব্যাক্তি কে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে এবং তার ফলে আত্মহত্যা করিলে। ( ধারা–৩০৫)
৭। যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত ব্যাক্তি কতৃক যখম করে খুনের চেষ্টা করিলে।(ধারা–৩০৭) ।
৮। এসিড জাতীয় পদার্থ দারা মুখ, মাথা বা উভয় চোখে গুরুতর যখম করিলে।(ধারা—৩২৬ ক)
৯। দশ বছরের নিচের কোন ব্যাক্তি কে খুন,গুরুতর আঘাত ইত্যাদি উদ্দেশ্য অপহরন বা বলপূর্বক অপহরন করলে( ধারা —- ৩৬৪ ক)
১০। খুনসহ ডাকাতি করলে। ( ধারা–৩৯৬)
৬ বছর প্রবাস জীবন পার করার পর যখন দেশে ফিরলাম তখন বাবা মা খুব করে চাইলেন আমি যেন বিয়ে করি। আমিও ভেবে দেখলাম বয়স তো কম হলো না। তাই বিয়ে করার জন্য রাজি হলাম।
আমার খালাতো ভাই সুজনকে সাথে নিয়ে এক জায়গায় মেয়ে দেখতে গেলাম। মেয়ে দেখার আগেই মেয়ের বাবা আমায় বললো,
-” দুবাইতে তো তোমার রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে তাই না?”
আমি মুচকি হেসে বললাম,
–বিদেশে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা করা অনেক ব্যয়বহুল। নিজে ব্যবসা করার মত এতো টাকা আমার এখনো হয় নি।
মেয়ের বাবা অবাক হয়ে বললো,
-”ঘটক যে বললো তোমার সেখানে নিজের রেস্টুরেন্ট আছে?”
আমি তখন বললাম,
–উনি মিথ্যা বলেছেন। বিদেশে আমার নিজের কোন রেস্টুরেন্ট নেই বরং আমি একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করি।
মেয়ের বাবা রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-”আমি আমার মেয়েকে কোন কামলার কাছে বিয়ে দিবো না। সাহস কত বড়! বিদেশ গিয়ে কামলাগিরি করে দুইটাকা ইনকাম করেছে বলে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে আসছে। তোমরা এখন আসতে পারো।”
আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে চলে গেলাম।
বাসায় আসার পর মা আর খালা যখন জিজ্ঞেস করলো মেয়ে কেমন দেখেছি তখন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আমার খালাতো ভাই মুচকি হেসে বললো,
-”মেয়ে দেখার আগেই মেয়ের বাবা পাত্রকে কামলা উপাধি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে”
আমি মন মরা হয়ে মাকে বললাম,
–মা, নেক্সট টাইম এত বড়লোক ঘরের মেয়ে না দেখে আমাদের মত নিন্মমধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে দেখো।তাহলে হয়তো এতোটা অপমান করবে না।
খালা তখন আমায় বললো,
-“কামলাকে তো কামলায় বলবে। আমার ছেলের মতো ভালো করে পড়াশোনা করলে আজ বিদেশ গিয়ে কামলা খাটতে হতো না। তুই পরেরবার মেয়ে দেখতে গেলে আর আমার ছেলেকে সাথে নিয়ে যাস না যে। তোর জন্য আমার ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ুয়া ছেলে অপমানিত হোক সেটা আমি চাই না”
আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেলাম।
কয়েকদিন পর অর্পা নামের একটা মেয়েকে দেখতে যায়। মেয়ে আমার খুব পছন্দ হলে মেয়ের সাথে আমাকে একা কথা বলতে বলে। আমি আর মেয়ে যখন আলাদা রুমে যায় তখন মেয়ে সাথে সাথেই দরজা লাগিয়ে আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
-“আপনাদের মত প্রবাসীদের এই এক সমস্যা। বিদেশে গিয়ে সুইপারের কাজ করবে আর দেশে এসে টাকার ফুটানি দেখিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের সুন্দরী আর শিক্ষিতা মেয়েকে বিয়ে করতে চাইবে। আপনার টাকা পয়সা দেখে আমার বাবা মা গলে গেলেও আমি গলবো না। আপনি আমায় বিয়ে করলে আমি আমার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ের পরের দিন পালাবো বলে দিলাম। তাছাড়া আপনার সাহস কতবড় নিজে ইন্টার ফেল করা ছেলে হয়ে অনার্সে পড়া মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছেন?”
আমি মাথা নিচু করে মেয়ের কাছে হাত জোর করে বললাম,
–আমি জানতাম না আপনি অনার্সে পড়েন। জানলে আমি আসতাম না। দয়া করে আমায় আর অপমান করেন না যে।
এই কথা বলে মেয়ের বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম।
রাতে নিজের বাসায় ফিরে এসে দেখি মা, খালা আর খালাতো ভাই সোফাই বসে আছে। মা আমায় দেখে বললো,
-“কিরে, মেয়ে পছন্দ হয়েছে?”
আমি তখন মাকে বললাম,
–শুধু আমার একা পছন্দ হলে তো হবে না। আমাকেও তো মেয়ের পছন্দ হতে হবে। মেয়ে আমার মত ইন্টার ফেল করা প্রবাসী ছেলেকে বিয়ে করতে পারবে না।
এই কথা শুনে মায়ের পাশে বসে থাকা খালা আর খালাতো ভাই হেসে দিলো। হাসতে হাসতে খালাতো ভাই আমায় বললো,
-“তোমার কপালে আর বউ জুটবে না।”
খালা তখন মুখ বাঁকিয়ে বললো,
-“বউ জুটবে কি করে, বিদেশ গিয়ে রেস্টুরেন্টের থালা বাসন ধুলে কি আর বউ পাওয়া যাবে”
আমি সচরাচর বড়দের মুখের উপর কথা বলি না। কিন্ত খালার বারবার অপমান করে কথা বলা আমার সহ্য হচ্ছিলো না। তাই একটু রেগে গিয়েই খালাকে বললাম,
–হার্ট ব্লক হয়ে যখন হাসপাতালে পড়ে ছিলেন তখন এই কামলায় কামলাগিরি করে আপনাদেরকে দুইলাখ টাকা পাঠিয়েছিলো অপারেশনের জন্য। আপনার ছেলের আইফোনের শখ পূরণ করেছিলো এই কামলায় কামলাগিরি করে। আমি জানি এই দেশের মানুষের চোখে আমরা সকল প্রবাসীরা কমলা। তাই দয়া করে বারবার কামলা কামলা বলে সেটা মনে করিয়ে দিতে হবে না
আমার কথা শুনে খালাতো ভাইটা রেগে গিয়ে বললো,
-“দুইলাখ টাকা আর একটা আইফোন দিয়েছো বলে আমার মাকে যা তা বলে অপমান করতে পারো না। সময় হলে তোমার টাকা আর ফোন তোমার মুখে ছুড়ে মারবো।”
আমি আমার খালাতো ভাইকে কিছু না বলে শুধু একটু হাসলাম। পরদিন সকালে মাকে ডেকে বললাম,
–মা, আমি এখন বিয়ে করবো না। আরো কয়েক বছর প্রবাসে কামলাগিরি করে আসি তারপর একেবারে দেশে এসে বিয়ে করবো।
–—
—–
৪বছর পরের ঘটনাঃ-
আমি দেশে এসেছি শুনে আমার খালা আর খালাতো ভাই আমার সাথে দেখা করতে এসেছে। খালা আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
-“তুই যেখানে জব করিস সেখানে সুজনের একটা কাজের ব্যবস্থাব করে দিতে পারবি। পাস করার পর তিন বছর ধরে বেকার ঘুরছে কোথাও কোন চাকরি পাচ্ছে না।”
আমি হেসে খালাকে বললাম,
–তোমার শিক্ষিত ছেলে বিদেশ গিয়ে কামলাগিরি করবে তোমার খারাপ লাগবে না? পরে তো নিজের ছেলের জন্য বউ খুঁজে পাবে না।
খালা আমার কথা শুনে চুপ হয়ে আছে। আমি তখন খালাতো ভাইটাকে বললাম,
–নিজে যখন কষ্ট করে টাকা ইনকাম করবি তখন অন্য কারো মুখে টাকা ছুড়ে ফেলবার ইচ্ছে হবে না। খালা আর খালাতো ভাইটা আমার কথা শুনে মাথা নিচু করে আছে। আমি আর কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
একটা বিষয়ে পরামর্শের জন্য এক পরিচিত উকিলের কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি ঐ আংকেল যার মেয়েকে আমি বিয়ে করতে গিয়ে ছিলাম বলে আমাকে অপমান করে বের করে দিয়েছিলো উনি উলিকের সাথে কথা বলছে।
আংকেল চলে গেলে আমি উকিলকে জিজ্ঞেস করলাম,
–উনি এইখানে এসেছিলো কেন?
উকিল তখন বললো,
-“উনার মেয়ের ডিভোর্সের বিষয় কথা বলতে। অনেক বড় ঘরে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলো কিন্তু জামাইটা নেশাখোর।মেয়েকে অত্যাচার করে বলে মেয়ে সংসার করতে চাইছে না”
তার কয়েকদিন পর বাসায় বসে খবরের কাগজ পড়ছি। হঠাৎ একটা লেখা দেখে চোখটা আটকে গেলো।
“স্বামীর পরকীয়ার জের ধরে স্ত্রীর আত্মহত্যা” ফ্যানে ঝুলন্ত লাশটার দিকে তাকিয়ে দেখি মেয়েটা অর্পা। আমি প্রাবাসী দেখে যে মেয়েটা আমায় অপমান করেছিলো।
আমি পত্রিকা বন্ধ করে ভাবতে লাগলাম, দ্য ডেইলি স্টারের একটা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২০ সালে কোরনা মহামারীতেও বাংলাদেশের প্রবাসীরা ২২ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছে। অথচ তবুও বাংলাদেশের বেশিভাগ মানুষ প্রবাসীদের কামলার চোখে দেখে। নিজের মেয়েকে নেশাখোর ছেলেদের সাথে বিয়ে দিবে তবুও প্রবাসীদের কাছে বিয়ে দিবে না। বদ চরিত্রের প্রেমিককে বিয়ে করবে তবুও প্রবাসীদের বিয়ে করতে চাইবে না….!

নায়ক মিঠুন চক্রবর্তী মুম্বইয়ের একটি ব্যাংকে গিয়ে ম্যানেজারের কাছে 50,000/- টাকা Loan চাইলেন। ব্যাংক ম্যানেজার গ্যারান্টি চাইল। বাঙ্গালি বাবু ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিজের BMW গাড়িটি দেখিয়ে বললেন, ওটি গ্যারান্টি রাখতে পারেন। Bank manager গাড়ীর কাগজপত্র দেখে বাঙ্গালি বাবুকে 50,000/ টাকা Loan দিতে রাজি হলেন। বাঙ্গালি বাবু ৫০,০০০ টাকা নিয়ে চলে গেলেন। এক কোটি টাকার গাড়ী মাত্র ৫০০০০ টাকায় বন্ধক রেখে যাওয়াতে ব্যাংকের কর্মচারীরা বাঙ্গালির বোকামিতে নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করতে লাগলেন।
দুই মাস বাদে, বাঙ্গালি বাবু ব্যাংকে এসে নিজের গাড়ী ফেরত চাইলেন এবং ৫০,০০০ মূল আর ১২৫০ টাকা সুদ দিয়ে গাড়ী ছাড়িয়ে নিলেন।
ম্যানেজার থাকতে না পেরে জিগ্যেস করলেন,
“Sir, কোটিপতি হয়েও মাত্র ৫০,০০০ টাকার জন্য নিজের BMW গাড়ী কেন বন্ধক রাখতে হলো একটু বলবেন? বাঙ্গালি বাবু, দেখুন- আমার দুই মাসের জন্য আমেরিকা যাওয়ার দরকার ছিল। কলকাতা থেকে মুম্বাই এসে গাড়ি parking করা নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম। Parking ওয়ালারা দুই মাসের জন্য ২০,০০০ টাকা চাইছিল। আপনার এখানে মাত্র ১,২৫০ টাকায় আমার কাজ হয়ে গেল। গাড়ি টাও secured থাকল। তাছাড়া আপনি ৫০,০০০ টাকাও দিলেন খরচ করার জন্য। ধন্যবাদ।
ম্যানেজার বেহূঁশ 
।




(সংগৃহীত)