প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করাসহ ছয় দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবক ফোরাম।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বরাবর এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা বলেন, ভাতা হিসেবে প্রতিবন্ধীরা মাসে মাত্র ৭৫০ টাকা পেয়ে থাকেন। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে এটি ১০০ টাকা বেড়ে ৮৫০ টাকা হওয়ার কথা । এটি এখনো কার্যকর হয়নি।
তারা বলেন, একজন স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় একজন প্রতিবন্ধীর খরচ বেশি। স্বাভাবিক খরচের পাশাপাশি তাকে চিকিৎসায় খরচ করতে হয় নিয়মিত। ৭৫০ টাকা দিয়ে বর্তমানে এক সপ্তাহও চলা সম্ভব নয়। সেখানে একজন প্রতিবন্ধী কীভাবে বেঁচে থাকবেন। তাই অবিলম্বে প্রতিবন্ধী ভাতা ৫০০০ টাকা করার দাবি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করছি।
মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশেষ শিক্ষা বিদ্যালয়ের এমপিওভুক্তির মোট ১৭৭২টি আবেদন গ্রহণ করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। আবেদন গ্রহণের ২ বছর ৯ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। দীর্ঘদিন যাবত এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা বিনা বেতনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
অসহায় প্রতিবন্ধী শিশুর স্কুল রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন ও অনশন
তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে একটি করে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় স্থাপন করা না হলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকসহ স্নায়ু বিকাশ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা দান সম্ভব নয়। তাই তাদের জন্য প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় অবশ্যই প্রয়োজন। একইসঙ্গে বিদ্যালয়গুলোর বেতন-ভাতা অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতোই দেওয়া প্রয়োজন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেওয়া দাবিগুলো হচ্ছে-
১। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সাধারণ বিদ্যালয়ের ন্যায় শিক্ষা উপবৃত্তি দিতে হবে। প্রতিবন্ধী ভাতা ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়াতে হবে।
২। অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের স্বাস্থ্য সেবাসহ শিক্ষা কারিকুলাম নিশ্চিত করতে হবে।
৩। অভিভাবকহীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন করার আশ্বাস দিতে হবে।
৪ । চলতি মাসের মধ্যেই ২০২০ সালে অনলাইনে আবেদন করা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতি প্রদানপূর্বক এমপিওভুক্তকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। আবেদনের সময় থেকে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দিয়ে এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৫। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তর অবিলম্বে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, এস এম ফেরদৌসসহ শিক্ষক ও অভিভাবকরা।