বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা-মুক্তিযুদ্ধের উপাধি

ছোটবেলায় বাংলা বইয়ে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠকে নিয়েই শুধু বিস্তারিত পড়েছিলাম। বীর প্রতীক, বীর উত্তম বা বীর বিক্রমদের নাম ছাড়া ছাড়া ভাবে শুনেছি। পুরো একটা তালিকা পড়ি নি কখনো। তাই মনে হল, বিভিন্ন পেইজে আলাদা আলাদাভাবে না থেকে যদি একটা লেখায়ই সবার নাম উল্লেখ করা যায়, অনেকের উপকার হতে পারে। তাছাড়া আজকালকার ছেলেমেয়েদের অনেকেই ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠর নাম সঠিকভাবে বলতে পারে না; ভাষা শহীদ এবং ভাষা সৈনিকদের সাথে মিলিয়ে ফেলে। এই লেখাটি তাদের জন্যও উপকারী হবে বলে আশা করছি।

বীরশ্রেষ্ঠ:
★মোট সাতজনকে এ উপাধি দেওয়া হয়।
★খেতাব প্রদান করা হয়- ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে।
★সেনাবাহিনী থেকে প্রাপ্ত- ৩ জন
১. ক্যাপ্টন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর(বরিশাল)
২. সিপাহী হামিদুর রহমান(ঝিনাইদহ) সবচেয়ে বয়সে ছোট বীরশ্রেষ্ঠ।
৩. সিপাহী মোস্তফা কামাল(ভোলা)
★ বিমানবাহিনী থেকে প্রাপ্ত- ১ জন
১. ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান(ঢাকা)
★ নৌ-বাহিনী থেকে প্রাপ্ত- ১ জন
১. মো রুহুল আমিন(নোয়াখালী)
★ ইপিআর থেকে প্রাপ্ত- ২ জন।
১. ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ(ফরিদপুর)
২. ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ (নড়াইল)
★ বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে সর্বপ্রথম শহিদ হন- ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ(৮এপ্রিল, ১৯৭১)
★ বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে সর্বশেষ শহিদ হন- ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর(১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১)

অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলো হাইকোর্ট

বীর উত্তম:
★ জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় উপাধি দেওয়া হয়- ৩ ধরনের (বীর উত্তম, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক)
★ বীর উত্তম পুরষ্কার দেওয়া হয়- ৬৮ (১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩) +১(১৫ এপ্রিল ২০১০)
★একমাত্র মুক্তিযুদ্ধে অবদান ছাড়া মরনোত্তর বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ(১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হন)
★ মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বীরর উত্তম দেওয়া হয়- ৬৮ জনকে।
★বীর উত্তম – আর্মি- ৪৯+১; নেভি- ৮; বিমান বাহিনী- ৬ ; বেসামরিক – ৫ জন
★ বীর উত্তম সেনাবাহিনীর ৫০ জনের মধ্যে ২১ জনকে দেয়া হয় মরোনত্তর।
★ বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধার বীরউত্তম-
১. শাহাবুদ্দিন
২. আকরাম
৩. শারফুদ্দিন
৪. এম এইচ সিদ্দিক
৫. আব্দুল কাদের সিদ্দিকী

বীর বিক্রম:
★ তৃতীয় বীরত্বসসূচক পুরস্কার হলো – বীর বিক্রম
★ জীবিত -১০১ ও মৃত- ৭৬ জন ; মোট ১৭৭ জনকে এ উপাধি দেওয়া হয়।
★ একমাত্র উপজাতি বীর বিক্রম- ইউকে চিং মারমা

বীর প্রতীক:
★ বীর প্রতীক পুরস্কার লাভ করেন- ৪২৬ জন(১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩)
★নারী মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক- ২ জন
১. তারামন বিবি(১১নং সেক্টর)
২. সেতারা বেগম(২নং সেক্টর)
★ একমাত্র বিদেশি খেতাবপ্রাপ্ত বীর প্রতীক- ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড( ডাচ- অস্ট্রোলিয়ান কমান্ডো অফিসার) তিনি ঢাকায় আসেন ১৯৭০ সালে এবং বাটা-সু কোম্পানিতে কাজ করেন। তিনি ২য় বিশ্বযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন।
★ মৌখিক বীর প্রতীক উপাধি(১৯৯৬) দেওয়া হলেও গেজেটভুক্ত হননি- কাঁকন বিবি। তিনি খাসিয়া উপজাতির ছিলো।
★ সর্বকনিষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা- শহীদুল ইসলাম লালু(বীর প্রতীক)
★বাংলাদেশ “স্বাধীনতা সম্মাননা” দেওয়া হয়- ১ জনকে(ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে)
★ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পান- ১৫ জন
★মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা- ৩১১ জন ও ১১টি সংগগঠন)
★ মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বিদেশি নাগগরিক- ইতালির ফাদার মারিও ভেরেনজি
★ মুক্তিযুদ্ধে ৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ৬৭৭ জনকে খেতাব দেওয়া হয়।
★এ পর্যন্ত বীরঙ্গনা খেতাব- ২৩১ জনকে; নারী মুক্তিযোদ্ধা- ২০৩ জন
★৫৮ জনকে শব্দ সৈনিক উপাধি দেওয়া হয়।

Leave a Reply