ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে রাশিয়া

ইউক্রেনের মারিউপোল শহরে একটি মাতৃসদন হাসপাতালের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। ভয়াবহ এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে হাসপাতালটিতে বিদ্যুৎ ছিল না। প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচতে ছিল না কোনো হিটার।

পানি ও খাবারের অভাব তো ছিলই। এর মধ্যেই সেখানে ভয়-শঙ্কা সঙ্গে করে সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেশ কয়েকজন মা। কিন্তু বুধবার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালটি। ৬ বছরের শিশুসহ নিহত হয়েছে ৩ জন। গুরুতর আহত প্রায় ১৭ জন সন্তানসম্ভবা মা।

হয়তো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে আরও কেউ কেউ। গত দুই সপ্তাহ ধরে এভাবেই ইউক্রেনের নারী ও শিশুদের টার্গেট করছে রাশিয়া। এর মধ্যদিয়ে মূলত ইউক্রেনের ভবিষ্যৎই ধ্বংস করছে মস্কো।

মারিউপোল শহরটি এখন কার্যত অবরুদ্ধ। নিরবচ্ছিন্নভাবে বোমাবর্ষণ করে চলেছে রুশ বাহিনী। যেমনটা জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুবেলা। বুধবার এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, শহরটিতে নির্বিচারে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। চার লাখের বেশি মানুষকে জিম্মি করেছে রাশিয়া। এছাড়া অন্তত তিন হাজার সদ্যজাত শিশু খাবার ও ওষুধের অভাবে রয়েছে।

ডিজিটাল ইন্টারেক্টিভ সাদা বোর্ডের দাম | Digital board price in bangladesh

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার নতুন আরেকটা মাতৃসদনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল রাশিয়া। বর্বরোচিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোরও নজর এড়ায়নি। ইউনিসেফ ইতোমধ্যে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, সংস্থাটি রাশিয়াকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার ও শিশুদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজ মারিউপোলের একটি মাতৃসদনে হামলার খবরে আমি খুবই শঙ্কিত। এই হামলায় আগে থেকে কষ্টের মধ্যে থাকা ছোট্ট ছোট্ট শিশু ও সন্তান সম্ভবা মায়েরা বিধ্বস্ত ভবনের নিচে চাপা পড়েছে। আমরা এখনো হতাহতের সংখ্যা জানি না। তবে সবচেয়ে খারাপ সংবাদের আশঙ্কা করছি।’

ইউনিসেফ আরও বলেছে, ইউক্রেনে স্কুল, হাসপাতাল, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ বেসামরিক স্থাপনা ও অবকাঠামোর ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এভাবে নির্বিচার হামলা অগ্রহণযোগ্য এবং এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। মাতৃসদনে হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও। সংস্থার প্রধার আন্তনিও গুতেরেস এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘মারিউপোলের একটি মাতৃসদনে আজকের হামলা সত্যিই রোমহর্ষক। এই যুদ্ধের সর্বোচ্চ মূল্য দিচ্ছে বেসামরিক নাগরিকরাই। এই রক্তপাত এখনই বন্ধ করুন।’

রোমানিয়া থেকে ঢাকার পথে ২৮ নাবিক

শত্রুর সবচেয়ে বড় দুর্বলতার জায়গা হচ্ছে তার নারী ও শিশু। এই জায়গাতেই অস্ত্র তাক করছে রুশ বাহিনী। গত দুই সপ্তাহে অন্তত ৬০ শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও শতাধিক। দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে প্রায় ১০ লাখ শিশু। রকেট মেরে একাধিক শিশু হাসপাতাল ধ্বংস করা হয়েছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার সময়ও শিশুদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

অধিকৃত শহরগুলোর রাস্তায় রাস্তায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। বাড়ির বেজমেন্টে খাদ্য ও পানি ছাড়াই মারা যাচ্ছে শিশুরা। ইউক্রেনে রুশ বাহিনী এই গণহত্যার কোনো সীমা নেই। এই পরিস্থিতিতেও যেকোনো শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে বড়রা। চেষ্টা করছে শহর ছেড়ে পালানোর। কিন্তু শহরে শহরে মানবিক করিডোর চালুর ঘোষণা দিয়েও আবারও বন্ধ করে দিয়েছে।

Leave a Reply