Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
সেট টপ বক্স কী, দাম কত, মিলবে কীভাবে?

সেট টপ বক্স কী, দাম কত, মিলবে কীভাবে? Top Box Office – Set Up Box,বক্স সম্পর্কে বিস্তারিত

কেবল টিভির গ্রাহকদের প্রান্তে ডিজিটাল ‘সেট টপ বক্স’ স্থাপন করা না হলে ৩০ নভেম্বরের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখা যাবে না বলে হুঁশিয়ার করেছে সরকার; তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুই শহরের ‘৪০ লাখ’ গ্রাহকের কাছে যন্ত্রটি সরবরাহ করা নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলছেন কেবল অপারেটররা।

সেট টপ বক্স কী সেট টপ বক্স হল এক ধরনের রিসিভার যন্ত্র; এটি টিভি ডিকোডার হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশে মূলত অ্যানালগ ব্যবস্থায় কেবল টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার করা হয়। কেবল অপারেটরদের সার্ভার থেকে অ্যানালগ সিগন্যাল গ্রহণ করে ডিজিটালি টেলিভিশনে পাঠায়। এর চেয়ে নিখুঁত, ঝকঝকে ছবি পাওয়া যায় সেট টপ বক্স ব্যবহারে। অ্যানালগ ব্যবস্থায় ৬০টির মতো টিভি চ্যানেল দেখা গেলেও সেট টপ বক্স লাগালে গ্রাহকরা আড়াইশ’র মতো চ্যানেল দেখতে পারেন।

গ্রাহকরা চাইলে আড়াইশ’, দেড়শ’ কিংবা একশ’ চ্যানেলের জন্য আলাদা আলাদা প্যাকেজও নিতে পারেন। এতে বাংলাদেশে চ্যানেল, নিউজ চ্যানেল, শিশুদের চ্যানেলের আলাদা আলাদা অপশন থাকে। কেবল টিভি দেখার জন্য যে পোর্টটি সরাসরি টেলিভিশনে যুক্ত করা হয়, সেটি সেট টপ বক্সে লাগাতে হবে। সেই বক্স থেকে ইউএসবিএন কেবলের মাধ্যমে সিগন্যাল টেলিভিশনে পাঠানো হয়। দাম কেমন, মিলবে কীভাবে বাংলাদেশের বাজারে যন্ত্রটি সহজলভ্য নয়। এটি মূলত চীনে উৎপাদিত হয়। কেবল অপারেটররাই চীন থেকে আমদানি করে গ্রাহকদের বাসায় স্থাপন করে দেয়।

তবে চাইলে গ্রাহকরা বাজার থেকে কিনেও নিতে পারে। সেট টপ বক্সের দাম বাজার ভেদে ১৬-১৮ শত টাকা থেকে ৪ হাজারের মধ্যে পড়ে। দামভেদে টিভির ছবি ও শব্দের মানের ভিন্নতা থাকে। সেট টপ বক্সের জন্য এককালীন কিংবা কিস্তিতে আলাদাভাবে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। মাসিক ফি আলাদাভাবে দিতে হবে, সেটি নির্ভর করতে গ্রাহকরা কোন প্যাকেজ ব্যবহার করছেন সেটির উপর। কেন দরকার প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই সেট টপ বক্সের ব্যবহার করা হয়। দুই কোটিরও বেশি গ্রাহকের বাংলাদেশে গত এক দশকে বাংলাদেশে কয়েক লাখ গ্রাহক যন্ত্রটি নিলেও তা সংখ্যায় খুবই নগণ্য। সম্প্রচার প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেট টপ বক্সের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটির মাধ্যমে দর্শকরা ঝকঝকে চ্যানেল পাবেন।

মাইক্রোসফট এর সম্পর্কে না জানা কিছু কথা, যা আমাদের জানা উচিত।

এই ইন্ডাস্ট্রি ডিজিটালাইজেশন না হওয়ায় কেবল টিভির গ্রাহকদের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যায় না। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেট টপ বক্স বসানো হলে দেশের প্রতিটি গ্রাহকের তথ্য অপারেটরদের কাছে থাকবে। সরকারের রাজস্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অপারেটরদেরও লাভ হবে। সরকার কী বলছে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) ও পরিবেশকদের বৈঠকের পর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সেট টপ বক্স স্থাপনের সময়সীমা বেঁধে দেয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

হাছান মাহমুদ তখন বলেন, “কেবল অপারটেররা জানিয়েছেন, তারা ডিজিটাল ডিভাইস বসিয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই। এখন গ্রাহকদের সেট টপ বক্স সরবরাহ করা হবে। গ্রাহকরা এই সেট টপ বক্স না বসালে ৩০ নভেম্বরের পর টেলিভিশন দেখার ক্ষেত্রে ব্যত্যয় হবে।” ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহরের সঙ্গে পুরোনো ১১টি জেলা কুমিল্লা, বগুড়া, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, রাঙামাটি ও কক্সবাজার, যশোর, গাজীপুর, নারায়ণঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা ডিজিটাল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।

কেবল অপারেটররা পারবেন? সরকারের বেঁধে দেওয়া ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ‘৪০ লাখ’ গ্রাহকের বাসায় সেট টপ বক্স স্থাপন করা সম্ভবপর নয় বলে জানান কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ার পারভেজ। কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ার পারভেজ জানান, ইতোমধ্যে কেবল অপারেটররা তাদের প্রান্তে ডিজিটাল নেটওয়ার্কের অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে।

Doctor List Popular Diagnostic Rajshahi Doctor List | পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার রাজশাহী ডাক্তারের তালিকা

সীমিত পরিসরে চীন থেকে সেট টপ বক্স আমদানির চেষ্টা করছেন কেবল অপারেটরা। পারভেজ জানান, পুরো দেশের প্রায় দুই কোটি গ্রাহককে সেট টপ বক্স সরবরাহ করতে তাদের প্রায় দুই বছরের মতো লাগতে পারে। ঋণ চান কেবল অপারেটররা দেশজুড়ে প্রায় দুই কোটি গ্রাহকদের জন্য দুই কোটি সেট টপ বক্স কিনতে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। এই অর্থের সংস্থান করতে সরকারের কাছে স্বল্পমূল্যে ঋণ চাইছেন কেবল অপারেটররা।

সেই সঙ্গে আমদানির শুল্ক মওকুফেরও দাবি করেন পারভেজ। আনোয়ার পারভেজ বলেন, “সেট টপ বক্সটা মানুষকে স্বল্পমূল্যে দেওয়ার জন্য শুল্কটা মওকুফ করা হোক। একটা বক্সের মধ্যে তিনশ’ টাকা শুল্ক থাকে সেটা মওকুফ হলে সেটা কমে গ্রাহককে আমরা দিতে পারব। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী।

বক্স আনার জন্য আমাদের লাইসেন্স জমা রেখে স্বল্প মেয়াদী ঋণ দেওয়া হোক। “সরকারি সহযোগিতা পেলে আমরা হয়তো দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে এটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাবে। সরকার অ্যানালগ বন্ধ করে দিলে দর্শকের বিশাল অংশ টেলিভিশন দেখা থেকে বঞ্চিত হবে।” সেই সঙ্গে সরকারের কাছেও সময়ও চাইছেন কেবল অপারেটরা। তাদের দাবি, চীন থেকে একসঙ্গে এতো পরিমাণ সেট টপ বক্স আমদানি করে স্থাপন করতেও আরও সময় প্রয়োজন।

সেট টপ বক্সের উচ্চমূল্যে দুশ্চিন্তায় ক্যাবল টিভির গ্রাহকরা

টেলিভিশনে স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখতে হলে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল সেট টপ বক্স বসাতে হবে। এ খবর শুনে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রাজধানীর দয়াগঞ্জের বাসিন্দা আফরোজা খাতুন। তাকে জানানো হয়, সেট টপ বক্সের দাম ৪ হাজার টাকা। দাম শুনে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আফরোজা খাতুন। তার মতোই চিন্তিত অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ। এত টাকা দিয়ে সেট টপ বক্স কিনতে অনীহা প্রকাশ করেছেন তারা।

আফরোজা খাতুন বলেছেন, ‘১ থেকে ২ হাজার টাকা দাম হলে টপ বক্স কিনতাম। অল্প আয়ের মানুষের পক্ষে এত দাম দিয়ে টপ বক্স কেনা সম্ভব নয়। ক্যাবল অপারেটররা ব্যবসা করে, তাই তাদেরকে বিনামূল্যে এ বক্স সরবরাহ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় আমরা বাড়তি চাপে আছি। ডিজিটাল সেট টপ বক্স টাকা দিয়ে সংগ্রহ করব না। অপারেটররা টপ বক্স দিলে টিভি দেখব, না হলে দেখব না।’

রাজধানীর রায়েরবাগের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘৪ হাজার টাকা দিয়ে ডিজিটাল সেট টপ বক্স কেনার সামর্থ্য কয়জনের আছে? ক্যাবল অপারেটরদের বিনামূল্যে এ বক্স সরবরাহ করা উচিত। এ বক্স সাধারণ মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। আমি টাকা দিয়ে টপ বক্স কিনব না।’

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, দয়াগঞ্জ, রায়েরবাগ এলাকার একাধিক ক্যাবল অপারেটর জানান, সেট টপ বক্স কেনার বিষয়ে গ্রাহকদের তেমন আগ্রহ নেই। গত ১ ফেব্রুয়ারি গ্রাহকদের ডিজিটাল সেট টপ বক্স বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রাহকরা ৪ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে চাইছেন না। অপারেটরদের পক্ষেও এত টাকার জিনিস গ্রাহকদের বিনামূল্যে দেওয়া সম্ভব নয়। গ্রাহকরা যদি টপ বক্স না কেনে এবং সরকারের পক্ষ থেকে যদি চাপ দেওয়া হয়, তাহলে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।

অ্যাডোবি ফটোশপ কি ? কি কি কাজ করা যায় এবং কিভাবে শিখব

রায়েরবাগের ডিস ব্যবসায়ী মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ডিজিটাল সেট টপ বক্সের সংকট আছে। সেট টপ বক্স আমদানি করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। এজন্য আমাদের আরও সময় দিতে হবে।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে ক্যাবল টিভির গ্রাহক প্রায় ৪ কোটি। টেলিভিশন সেবা খাতকে ডিজিটাল করা এবং রাজস্ব আদায়ে সেট টপ বক্সের ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার।

ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেছেন, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রায় ৫০ লাখ গ্রাহক আছে। এত গ্রাহককে সেট টপ বক্সের আওতায় আনতে সাত থেকে আট মাস সময় লাগবে। সরকার যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা শেষ হওয়ার পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। দেশে এখন পর্যন্ত ৫ লাখের মতো সেট টপ বক্স বসানো হয়েছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহক যেখান থেকে ক্যাবল কানেকশন নিয়েছে, সেখান থেকেই সেট টপ বক্স নিতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেট টপ বক্স নিতে হবে কোয়াবের কাছ থেকে। এর বাইরে কোনো স্থান থেকে কেনা যাবে না। ৯৫ শতাংশ সেট টপ বক্স চীন থেকে আমদানি করা হয়।’

বেঙ্গল কমিউনিকেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ ওমর ফারুক বলেছেন, ‘ডিজিটাল সেট টপ বক্স বসিয়ে গ্রাহকদের সার্ভিস দিচ্ছি। সরাসরি সংযোগের আওতায় প্রায় ৯০ শতাংশ গ্রাহক সেট টপ বক্স নিয়েছেন। এসব গ্রাহক মূলত উত্তরা, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী ও বারিধারার।’

 

ইউনাইটেড কমিউনিকেশন সার্ভিসের (ইউসিএস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোশাররফ আলী বলেছেন, ‘ডিস লাইন পদ্ধতিতে ধাপে ধাপে চ্যানেল কমিয়ে আনলে একসময় সব গ্রাহক ডিজিটাল টপ বক্স কিনবে। ডিস গ্রাহকের চাহিদা তৈরি হবে তখন, যখন বিকল্প থাকবে না।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) খাদিজা বেগম বলেছেন, ‘সরকার সব ক্ষেত্রকে ডিজিটালাইজ করছে। ক্যাবল টিভি সেবা ডিজিটাল হলে গ্রাহকরাও উন্নত সেবা পাবেন। সরকারের রাজস্ব ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর আয় বাড়ানোর সুযোগও তৈরি হবে।’

তিনি বলেন, ‘যখন একটা সিস্টেম অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল করা হবে, তখন দর্শকদের সে সিস্টেমের মধ্যে আসতে হবে। এটা বাধ্য করার কোনো বিষয় না।’

সেট টপ বক্স কী?
সেট টপ বক্স হলো এমন এক রিসিভার যা ক্যাবল টিভির গ্রাহক প্রান্তে থাকে। এই রিসিভার অ্যানালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করে। এতে গ্রাহক ঝকঝকে ছবি ও ভালো মানের শব্দ উপভোগ করতে পারেন।

সেট টপ বক্সে গ্রাকদের কী কী সুবিধা
গ্রাহকরা এইচডি (হাই ডেফিনিশন) কোয়ালিটির পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠান দেখতে পাবেন। বিদেশি চ্যানেলের ক্লিন ফিড বা বিজ্ঞাপনমুক্ত অনুষ্ঠান দেখতে পাবেন। পছন্দমতো অনুষ্ঠান এবং চ্যানেলের তালিকা তৈরি করা হবে, যাতে দর্শক তার পছন্দের অনুষ্ঠান বা চ্যানেল সহজেই দেখতে পাবেন।’

সেট টপ বক্সে সরকারের কী কী সুবিধা
সেট টপ বক্স সংযুক্ত করার ফলে সরকার ক্যাবল অপারেটরদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করতে পারবে। প্রতি মাসে প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব পাবে সরকার।

সেট টপ বক্সে কোয়াবের কী সুবিধা

মহল্লায় অনেকেই আছেন যারা ৩০টা বাসায় ক্যাবল সংযোগ দিয়ে ২০টার কথা বলেন। ডিজিটালাইজ হলে সেটা তারা করতে পারবে না।

এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশে ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ককে ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ৩১ মার্চের মধ্যে ক্যাবল অপারেটররা ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব গ্রাহকের কাছে ডিজিটাল সেট টপ বক্স সুলভ মূল্যে সরবরাহ করবে। আমি ইতোমধ্যে মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে তারা এখানে সেট টপ বক্স তৈরি করতে পারে। তারা সে উদ্যোগ নিচ্ছে। ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল করতে না পারার কারণে এ মাধ্যমের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের প্রাপ্য ভ্যাট-ট্যাক্সও ঠিকভাবে আদায় হচ্ছে না।’

কোথা থেকে সেট টপ বক্স কিনতে হবে?

কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলছেন সেট টপ বক্স নিতে হলে তাদের কাছ থেকেই নিতে হবে।

মি. পারভেজ বিষয়টা ভেঙ্গে বলেন “একজন গ্রাহক যেখান থেকে কেবল কানেকশন নিয়েছেন তাদের কাছ থেকেই সেট টপ বক্স নিতে হবে। ঐ প্রতিষ্ঠানকে আবার কোয়াবের কাছ থেকে এই সেট টপ বক্স নিতে হবে। এর বাইরে কোন স্থান থেকে কেনা যাবে না।”

তিনি বলেন ৯৫ শতাংশ সেট টপ বক্স চীন থেকে আমদানি করা হয়। বাংলাদেশে কোন সেট টপ বক্স প্রস্তুত করা হয় না।

সেট টপ বক্স: ক্যাবল টিভির আধুনিক যুগ

টিভি পর্দায় ঝকঝকে ছবি দেখিয়ে মন ভরাবে ডিজিটাল ক্যাবল সেবা। নারায়ণগঞ্জে প্রথম এ সেবা চালু করেছে এসবি স্যাটেলাইট ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই সেবায় ৭০-৭৫টি চ্যানেল নয়, দেখা যাবে দেশ-বিদেশের আড়াই শরও বেশি চ্যানেল। সব কটিই ঝকঝকে। রাজধানীর পরে নারায়ণগঞ্জেও ইতিমধ্যে এ সেবা চালুও হয়েছে। এই সুবিধা পেতে ঘরে বসাতে হবে তিন হাজার টাকা দামের একটি যন্ত্র, নাম সেট টপ বক্স। বেঙ্গল ডিজিটালের কর্মকর্তারা জানান, এই সেবার মাধ্যমে ডিজিটাল ক্যাবল ব্যবস্থায় প্রকৃত গ্রাহকসংখ্যা জানা যাবে। তাই রাজস্বও পুরোপুরি আদায় করতে পারবে সরকার।

প্রায় ৫২ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ টিভি অনুষ্ঠান দেখার স্বাদ পাচ্ছেন। ১৯৬৪ সালে ছিল সাদা-কালোর একটি চ্যানেল। আশির দশকের শুরুতে যা রঙিন পর্দায় রূপ নেয়। আর ১৯৯২ সাল থেকে শুরু হয় ডিশ অ্যান্টেনার যুগ। এতে রয়েছে দেশ-বিদেশের রকমারি সব চ্যানেল। অ্যানালগ ক্যাবল টিভির এই সেবায় খানিকটা ঘোলাটে ছবি, ঝড়-বৃষ্টিতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ নানা ঝক্কি-ঝামেলা থাকে। সব মিলিয়ে অতৃপ্ত দর্শক, যেন মন ভরছিল না তাঁদের।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, এ প্রযুক্তিতে বাড়িতে ডিটিএইচের মতো ছোট ডিশ অ্যান্টেনা বসাতে হবে না। আবার অ্যানালগ ক্যাবল টিভি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়ও বিঘœ ঘটবে না। অ্যানালগ সেবাদানকারীরা তাঁদের ক্যাবল সংযোগ নেবেন। এরপর তাঁরাই ক্যাবল দিয়ে দর্শকদের বাড়িতে সংযোগ দেবেন। এই ক্যাবল যুক্ত হবে সেট টপ বক্সে। আর সেট টপ বক্সের মাধ্যমে টিভি অনুষ্ঠান দেখা যাবে।

জানা গেছে, ঝড়-বৃষ্টি কিংবা রাস্তার খননকাজে ক্যাবল কাটা পড়লে বিকল্প ব্যবস্থায় সংযোগ চালু থাকবে। ছবি দেখাসহ যেকোনো ধরনের সমস্যা হলে সমাধানও দ্রুততম সময়ে হবে।

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় এই ডিজিটাল ক্যাবল টিভির সেবা পাওয়া যাচ্ছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি পুরো জেলাতেই এই ডিজিটাল ক্যাবল সেবা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ও সিটি কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু।

সেট টপ বক্সে যা আছে: কোনো কাজে ব্যস্ত থাকলে দর্শকেরা তাঁদের পছন্দের অনুষ্ঠান সেট টপ বক্সে পেন ড্রাইভ বা পোর্টেবল হার্ডডিস্কে রেকর্ড করতে পারবেন। পরে অবসর সময়ে তা দেখা যাবে। তা ছাড়া একই সময়ে একটি টিভি সেটে মাল্টি চ্যানেল দেখতে পারবেন দর্শকেরা। হাই ডেফিনিশন (এইচডি) চ্যানেল, ভিডিও অন ডিমান্ডসহ নানা সুবিধাও পাওয়া যাবে এই সেট টপ বক্সের মাধ্যমে। চীনের তৈরি একটি সেট টপ বক্সের ওজন প্রায় দেড় কেজি। স্মার্ট কার্ড ও রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে এটি পরিচালিত হবে।

প্যাকেজ আর খরচ: ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ীরা জানান, দর্শক চাহিদা, বয়স, রুচি ও ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে একাধিক চ্যানেলের বিভিন্ন প্যাকেজ রাখা হয়েছে এতে। ৩০০ টাকার প্যাকেজে ৯০টি চ্যানেল দেখা যাবে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সব চ্যানেলসহ ৭০টি ফ্রি চ্যানেল রয়েছে। এ ছাড়া ২০টি পে-চ্যানেল থাকবে। অন্যদিকে ৬০০ টাকার প্যাকেজে বর্তমানে ১৫১টি চ্যানেল দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি চ্যানেলসহ ৭৬টি ফ্রি চ্যানেল ও ৭৫টি পে-চ্যানেল রয়েছে। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে এই প্যাকেজে ২৫০টি বিদেশি চ্যানেল দেখা যাবে ।

জানা গেছে, একটি সেট টপ বক্স দিয়ে একটি টিভিতে অনুষ্ঠান দেখা যাবে। তবে বাসায় দুটি টিভি সেট থাকলে পুরোনো অ্যানালগ লাইন থেকে ওই টিভিতে সংযোগ দেওয়া যাবে। নারায়ণগঞ্জে ৩০০ টাকার একটি মাত্র প্যাকেজে আড়াই শ’ চ্যানেল দেখা যাবে।

অপারেটরের কাছ থেকেই নিতে হবে ‘সেট টপ বক্স’

দাম ২, ০০০ থেকে ৩, ৫০০

‘ডিশ লাইন’ নামে পরিচিত কেব্‌ল অপারেটরদের সংযোগের মাধ্যমে আসা সিগন্যালকে ডিজিটালে রূপান্তর করাই হলো সেট টপ বক্সের কাজ। ঢাকার লালমাটিয়া এলাকায় প্রতিটি বক্সের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কেব্‌ল অপারেটর কসমিক স্যাটেলাইট টিভি নেটওয়ার্কের মালিক মুজিবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগামী দিনগুলোতে দাম হয়তো কমবে।

ঢাকার ধানমন্ডি, বনানী, গুলশান ও বারিধারায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেট টপ বক্সের দাম তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী ও রামপুরা এলাকায় কেব্‌ল অপারেটরেরা জানান, এই বক্স কিনতে গ্রাহকদের দুই হাজার টাকার মতো লাগতে পারে।

চট্টগ্রামের চিটাগাং কেব্‌ল লিমিটেড নামের একটি অপারেটর প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্যামল পালিত প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এখন বক্সের জন্য তিন হাজার টাকা নিচ্ছেন। তাঁদের কাছে খুব বেশি বক্স নেই। তাই দাম একটু বেশি পড়ছে।

বাজার থেকে কেনা যাবে না

গ্রাহক চাইলে নিজে থেকে বক্স কিনে বসাতে পারবেন না। কেবল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা দুটি প্রতিষ্ঠানের দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহকের কাছে যে বক্সটি থাকছে, তাতে একটি কোড নম্বর থাকবে। অপারেটর প্রান্তে একটি সার্ভার থাকবে, সেখানে এই কোড নম্বরটি অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দুই কোড না মিললে সেবা পাওয়া যাবে না।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অপারেটরদের কাছ থেকে কেনার বাধ্যবাধকতার কারণে কেউ যাতে একচেটিয়া (মনোপলি) ব্যবসা করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। সুলভ মূল্যে গ্রাহকদের ভালো মানের বক্স দেওয়া হচ্ছে কি না, সে ক্ষেত্রে তদারকি দরকার।

সেট টপ বক্সের মান ও বৈশিষ্টে৵ ভিন্নতা রয়েছে। কোনো কোনো সেট টপ বক্সে অনুষ্ঠান রেকর্ড করে রাখা যায়। মান ও বৈশিষ্টে৵র ভিন্নতায় দামও কম-বেশি হয়। চীনা ই-কমার্স সাইট আলিবাবার ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, পাইকারি কেনার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সেট টপ বক্সের দাম ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। অপারেটরেরা জানিয়েছেন, তাঁরা যে বক্স আনছেন, তার প্রতিটিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা শুল্ক-কর পড়ছে। জাহাজভাড়া ও অন্যান্য খরচও রয়েছে।

বাংলাদেশে কেব্‌ল নেটওয়ার্ক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইউনাইটেড কেব্‌ল সার্ভিস (ইউসিএস) অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মোশারফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একসঙ্গে অনেক বক্স আনছেন। ফলে দাম কমে আসবে। ১ হাজার ৬০০ টাকায় গ্রাহককে সেট টপ বক্স দিতে পারবেন বলে আশা করছেন।

অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন প্রভাবশালীরা। তাঁরা গ্রাহকদের সাশ্রয়ী দামে সেট টপ বক্স দেবেন কি না, সে প্রশ্নও রয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শতে৴ ঢাকার শেওড়াপাড়ার একজন গ্রাহক বলেন, ডিশ সংযোগে জোর করে সংযোগ ফি ও বিল বেশি নেওয়া হয়। এখন দেড় হাজার টাকার বক্স তিন হাজার টাকা নিলে গ্রাহকের উপায় থাকবে না।

অবশ্য এ ক্ষেত্রে বাড়তি দাম নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না বলে দাবি করছেন কেব্‌ল অপারেটরদের সংগঠন কোয়াবের সভাপতি আনোয়ার পারভেজ। তিনি বলেন, একটি মূল সুবিধাসম্পন্ন বা বেসিক বক্স আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দাম যাতে বেশি নেওয়া না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।

টপ বক্স,সেট টপ বক্স কিভাবে কাজ করে, সেট টপ বক্স সেটিং, ডিস লাইনের সেট টপ বক্স সেট টপ বক্স, রিচার্জ সেট টপ বক্স এর দাম কত বাংলাদেশ, ইনটারনেটের জন্য কোনো, সেট টপ বক্স বেঙ্গল ডিজিটাল, সেট টপ বক্স ফ্রী সেট টপ বক্স

Leave a Reply