বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ: তিনি কেন গুরুত্বপূর্ণ

সাহাবুদ্দীন আহমদ এক দীর্ঘ এবং কার্যকর জীবন অতিবাহিত করেছেন। তার মতো খুব কম মানুষের এমন দীর্ঘ কর্মজীবন লাভ সম্ভব হয়। তিনি বহুগুণে গুণান্বিত ছিলেন। ভবিষ্যতে তার পূর্ণাঙ্গ জীবনী যখন লেখা হবে তখন তার জীবনের সবদিক উন্মোচিত হবে আশা করি।

এই মুহূর্তে বলতে পারি, সবচেয়ে বড় যে ৩টি কারণে জাতীয় পর্যায়ে তাকে আমাদের স্মরণ রাখতেই হবে সেগুলো হলো:

১. জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে তার বড় ভূমিকা

২. গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারার পুনপ্রতিষ্ঠায় তার অবদান এবং

৩. সংসদীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের সংকটময় সময়ে তার প্রভাবশালী ভূমিকা

তিনি জীবনে অনেক কিছুতে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। সেগুলো লিখলে দীর্ঘ একটি তালিকা হয়ে যাবে। সাবেক সিএসপি অফিসার হিসেবে বিচার বিভাগে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত যে এভাবে পরবর্তীতে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিবে এবং ইতিহাসের নায়ক হিসেবে এর অংশ হয়ে যাবেন, তা তিনি হয়তো সেদিন কল্পনাও করেননি।

দীর্ঘ সময় তিনি ঢাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্বপালন করেছেন। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। কিন্তু তার ব্যক্তিগত সুনাম ও গ্রহণযোগ্যতা এতটাই পরিষ্কার ছিল যে, ১৯৭২ সালে বিচারপতি পদে নিয়োগ পেতে কোনো বাধার মুখে পরতে হয়নি।

উল্লেখ্য, পাকিস্তান আমলে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন এমন কয়েক জনকে বাংলাদেশ আমলে বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখতে দেওয়া হয়নি।

সেই হিসেবে তিনি ব্যতিক্রম। একাত্তরে তিনি বিচারপতি ছিলেন না, কিন্তু হাইকোর্টের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্বে বহাল ছিলেন।

সাহাবুদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় জানাজায় সর্বস্তরের মানুষ

১.

গণঅভ্যুত্থানের মুখে এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি এরশাদ পদত্যাগ করেন সদ্য উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাহাবুদ্দীন আহমদের কাছে। এরশাদের সঙ্গে তার জীবনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কাকতালীয় যোগসূত্র ছিল। ১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক শাসন জারির ২ মাসের মধ্যে তাকে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছিল।

১৯৮৩ সালে শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন তিনি। এই তদন্ত রিপোর্টও এরশাদের পছন্দ হয়নি। আরেকটি বড় ঘটনা ছিল হাইকোর্ট বিভক্তিকরণ। এরশাদ ১৯৮২ সালে একটি হাইকোর্টকে ভেঙে ৬টি হাইকোর্ট দেশের ৬ জেলায় স্থাপন করেছিলেন। এর বিরুদ্ধে বিপুল আন্দোলন হয়েছিল। বিশেষ করে আইনজীবীদের সেই আন্দোলন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে একাকার হয়ে গিয়েছিল।

অবশেষে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক ঐতিহাসিক রায়ে এরশাদ কর্তৃক হাইকোর্ট বিভক্তিকরণের আইন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। যে ৩ জন বিচারপতি এই রায় প্রদান করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সাহাবুদ্দীন আহমদ।

এরশাদের শাসনের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির পদ খালি হয়। আপিল বিভাগের সর্বজ্যেষ্ঠ বিচারপতি হিসেবে সাহাবুদ্দীন আহমদ প্রধান বিচারপতি হওয়ার কাতারে। এর আগে কোনো দিন এ পদে নিয়োগ দিতে দেরি করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে এরশাদই প্রথম রাষ্ট্রপতি যিনি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে ১৪ দিন বিলম্ব করেছিলেন। তিনি চেষ্টা করেছিলেন যেন সাহাবুদ্দীনকে নিয়োগ দিতে না হয়।

২.

এ বছর বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে ৫০ বছর পূর্ণ করেছে। জাতীয় রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সবকিছুতেই বিভক্ত। এই বিভক্তির হৃদয়বিদারক পরিবেশে একমাত্র উজ্জ্বল ব্যতিক্রম সাহাবুদ্দীন আহমদ। স্বৈরাচার পতনের সেই অবিশ্বাস্য, অনিশ্চিত ও সংকটময় সময়ে জাতি এক বাক্যে মেনে নিয়েছিল তার নেতৃত্ব।

কীভাবে এটা সম্ভব হলো? আমরা অনেক সময় প্রতিষ্ঠান আগে না ব্যক্তি আগে এই ধাঁধাময় গোলকে হারিয়ে যাই। এই তর্ক যেন ডিম আগে না মুরগি আগে সেই প্রবাদের মতো। কেননা বড় বড় ব্যক্তিদের হাতে মহৎ প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়। আবার মহৎ প্রতিষ্ঠান থাকলে সেখানে বড় বড় ব্যক্তি তৈরি হয়। সাহাবুদ্দীন এই দুটির কোন ধারার সৃষ্টি ছিলেন?

আমি মনে করি তিনি ছিলেন এই ২ ধারার মিশ্র এক সৃজন। ব্যক্তিগত জীবনাচার ও নৈতিক বোধের দিক দিয়ে তার সারল্য, নির্লোভ জীবনযাপন ও অনমনীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে অনন্যতা দিয়েছিল। এরসঙ্গে মিলে গিয়েছিল বিচারক হিসেবে তার কর্মজীবনের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো। নির্যাতন ও নিপীড়নমুখর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ও পাকিস্তান যুগেও বিচার বিভাগের ও বিচারকদের সততা ও চারিত্রিক নিষ্কলুষতার একটি সুনাম ছিল। বহু শতাব্দী ব্যাপী এ রকম শত শত বিচারকের নির্লোভ দায়িত্বপালনের কারণে শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বিচার বিভাগের একটি আলাদা ঔজ্জ্বল্য তৈরি হয়েছিল এই ভূখণ্ডে।

বিচার বিভাগের এই ঔজ্জ্বল্যের গুণেই মনে হয় আমাদের জাতীয় যুগসন্ধিক্ষণে সারা জাতি যখন এমন একজনকে খুঁজছিল যার ওপর নিশ্চিতভাবে নির্ভর করা যায় তখন কোনো ব্যতিক্রম ছাড়া সবার মনে এসেছে একজনের নাম। তিনি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ।

এরচেয়ে বড় বিস্ময় আর কী হতে পারে! ছোট-বড়-মাঝারি প্রায় সবক্ষেত্রে যে রাজনীতি বিভক্ত, সেই রাজনৈতিক অঙ্গন কোনো ধরনের আপত্তি ছাড়াই এই একজন মানুষকে তাদের পছন্দের ও যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে মেনে নিয়েছিল। তিনি তখন পুরো জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন।

তার ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতার এই স্বীকৃতি তিনি পরপর ২ বার পেয়েছিলেন। ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে। এটিও একটি রেকর্ড।

৩.

১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর এরশাদ সরকার সব সংবাদপত্রের ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করেন। নিয়ম করা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিবকে সাংবাদিকদের লিখিত প্রতিবেদন দেখিয়ে ছাড়পত্র আনতে হবে। এর প্রতিবাদে সাংবাদিকরা ধর্মঘট আহ্বান করেন এবং তারা সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ করে দেন।

সাহাবুদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে এই অসভ্য নির্দেশ বাতিল করেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। ৮ দিন বন্ধ থাকার পর সারা দেশে আবার সংবাদপত্র পুনঃপ্রকাশ শুরু হয়।

তিনি কঠোর প্রশাসক ছিলেন, তবে দক্ষ ছিলেন। তার দীর্ঘ বিচারক জীবনে তিনি প্রায় ৫০০ নজির সৃষ্টিকারী রায় লিখে গেছেন। এসব রায় বহুবছর আমাদের বিচার বিভাগে আলো ছড়াবে। তবে এটিও সত্য যে, তিনি বিচারিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে রক্ষণশীল ছিলেন। তার কারণে বাংলাদেশের রিট মামলা সংক্রান্ত দরজাটি উন্মুক্ত হতে ৫ বছর বিলম্ব হয়েছে।

তিনি ৪ বছর প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের সময় বাংলাদেশ স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে নতুনভাবে গণতান্ত্রিক যুগে প্রবেশ করে। এই সময়ে সংবিধানের আরও উদার ও কার্যকর ব্যাখ্যার সুযোগ ছিল। কিন্তু তার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট এই সুযোগ কাজে লাগায়নি। যদিও ১৯৯৬ সালে রিট মামলার দ্বার কার্যকরভাবে উন্মুক্ত হয়েছিল।

রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি অপচয় রোধে তাকে ঘিরে যেসব গল্প তৈরি হয়েছে সেগুলো প্রায় প্রবাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তবে সেসব গল্প যে ভিত্তিহীন নয় তার প্রমাণ পাওয়া যায় সাহাবুদ্দীনের একসময়ের সহকর্মী ও পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানের আত্মজীবনীতে।

লতিফুর রহমান একবার তার সরকারি বাসার জানালার পর্দা কিনেছিলেন। কিন্তু পছন্দের কাপড় কিনতে গিয়ে সরকারি বরাদ্দের চেয়ে কিছু টাকা বেশি লেগে গিয়েছিল। এই পর্দার বিল সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের কাছে যায়। তখন তিনি স্পষ্টভাবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন সরকারি বরাদ্দ অতিক্রম করার জন্য এবং লতিফুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি বরাদ্দের বাইরের অতিরিক্ত টাকা নিজের পকেট থেকে বহন করেন। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছিল।

তিনি তার জীবনের সততা, অনমনীয়তা ও চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য যে শুধু প্রশংসিত হয়েছিলেন তাই নয়। এ জন্য তাকে উচ্চমূল্যও দিতে হয়েছে। বিশেষ করে দুটো ঘটনা এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়।

১৯৯৯ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার জননিরাপত্তা আইন বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করে। এই আইনে কোনো অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া যাবে না, এ রকম কঠোর বিধানসহ আরও কিছু বিধান ছিল। এ জন্য আইনটি মারাত্মক সমালোচনার মুখে পরে। সরকারি দল কৌশলে আইনটি একটি অর্থবিল হিসেবে সংসদে উত্থাপন করে।

সংবিধানের নিয়ম হলো, যদি কোনো আইন অর্থবিল হিসেবে স্বাক্ষর করার জন্য রাষ্ট্রপতির সামনে উত্থাপন করা হয় তাহলে রাষ্ট্রপতি তাতে কোনো মতামত বা তার অসম্মতি জানাতে পারবেন না। ফলে, এই আইনেও রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দীন আহমদের স্বাক্ষর না দিয়ে উপায় ছিল না।

কিন্তু সরকারি দল প্রচার করে, এই আইনে রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছেন। এই প্রচারের মুখে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার প্রজ্ঞা ও নিরপেক্ষতা দেশের সচেতন মানুষের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে দেখে তিনি এক বিবৃতি জানান, অর্থবিল হিসেবে আইনটি তার সামনে উত্থাপন করায় সাংবিধানিকভাবে এতে স্বাক্ষর না করে কোনো উপায় ছিল না।

এই ঘটনার কারণে তৎকালীন সরকারি দল ও তার মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এই দূরত্ব পরবর্তীতে কমা তো দূরের কথা, বরং আরও বেড়েছিল। সেটা একপর্যায়ে এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করতে চাইলে তিনি করতে পারেন, সেই স্বাধীনতা তার আছে।

যে দলের মনোনয়নে তিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন, সেই দলের সঙ্গে তার এই দূরত্ব পরবর্তীতে আরও বড় ধরনের সংকট তৈরি করে।

২০০১ সাল। বিচারপতি লতিফুর রহমান তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান। সেইসময় সচিব পর্যায়ে বড় বড় পদে বদলি ও নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গুরুতর অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সেসব উদ্যোগের কিছু তৎকালীন বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর পক্ষে গেছে আর কিছু আওয়ামী লীগের দাবির বিপক্ষে গেছে।

তখন সরকারি দল মনে করেছে তাদের মনোনীত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দীন আহমেদ যতটুকু ভূমিকা রাখতে পারতেন ততটুকু করছেন না। সেই জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যায়। ২০০১ সালের ২১ ডিসেম্বর নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক ‘ঠিকানা’-য় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে হবে বললেও পরে জাস্টিস সাহাবুদ্দীন বলেন, “না না, সর্বনাশ এটা করা যাবে না।” তিনি আমাদের সঙ্গে ডার্টি রোল প্লে করেছেন। আমি জাস্টিস সাহাবুদ্দীনকে রাষ্ট্রপতি করেছি একটা সৎ উদ্দেশ্যে। কাজেই ভুল হয়েছিল এটা আমি বলব না। আর কেউ বিট্রে করলে কিছু করার নেই।’

তখন সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ২০০২ সালের ৪ জানুয়ারি এক প্রতিবাদ লিপিতে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জেতানোর মুচলেকা দিয়ে আমি রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করিনি। …তাদের সব কথা শুনলে আমি ফেরেশতা, নইলে আমি শয়তান।’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্যরা নির্বাচনে তার ভূমিকা সম্পর্কে যেসব মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সেসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য বন্ধ হওয়া উচিত। ‘রাষ্ট্রপতি জনগণের সাথে বেইমানি করেছেন বলে (তিনি) ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছেন তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। … হেরে যাওয়ার পর তারা আমাকে নির্বাচন বাতিল করে রাষ্ট্রপতির অধীনে পুনরায় নির্বাচন করার অনুরোধ করেন। আমি তাতে রাজি হইনি।’

তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী গঠন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করেন। নির্বাচনে সেনাবাহিনী প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কাজ করেছে। তাদের বিশেষ কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর হত্যা সাধারণ আদালতে করতে হবে এমন কোনো পরামর্শ দেইনি।’

৪.

সাহাবুদ্দীন আহমদ তার বহুবর্ণিল কর্মময় জীবন থেকে অবসরে যান ২০০১ সালে। এরপরও ২০ বছর বেঁচে ছিলেন। কিন্তু এই পুরো সময় এক কঠোর স্বেচ্ছা নিবাসনমূলক পর্দার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু কেন? একদিনও কেন জনসম্মুখে আসেননি? কোন অভিমানে?

ইতিহাসের গর্ভে এই প্রশ্নের উত্তর আছে।

আরিফ খান: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

arifkhanmiron@yahoo.com

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

 

Source: দ্য ডেইলি স্টার

Leave a Reply